বাংলাদেশকে ‘নতজানু’ করে রাখার ষড়যন্ত্র চলছে: মির্জা ফখরুল

বাংলাদেশকে ‘নতজানু’ করে রাখার ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, তারা (সরকার) আজকে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের মানুষকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। মানুষের যে পরিচিতি আছে সেখান থেকে দূরে ঠেলে দিতে চাইছে।

আজ বৃহস্পতিবার বিকালে স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনে দলের এক ওয়েবিনারে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে একটা ষড়যন্ত্র চলছে যে, বাংলাদেশ তার যে স্বতন্ত্র, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব তাকে ভুলে গিয়ে সে অন্য জায়গায় নতজানু হয়ে থাকুক্- এভাবে পরিকল্পনা চলছে। যে পরিকল্পনাকে আমাদের রুখে দিতে হবে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সেই পতাকাই ধারণ করেছেন যে পতাকা স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান তার হাতে তুলে দিয়েছিলেন এবং একইভাবে আমাদের নেতা তারেক রহমান তিনিও সেই পতাকা তুলে ধরছেন। আজকে আমাদের  সেই পতাকা তুলে ধরেছেন। এই পতাকাই মুক্তির পতাকা।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আজকে মুক্ত হতে চাই এবং মানুষকে এই অবস্থা থেকে বাঁচাতে চাই শহীদ জিয়াউর রহমানের যে আদর্শ সেই আদর্শ অনুসরণ করে, আমরা মানুষকে বাঁচাতে চাই, দেশকে বাঁচাতে চাই। আসুন আমরা সেই লক্ষ্যে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাই।’

বিএনপির স্বাধীনতা সূবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনে গঠিত ‘সেমিনার ও সিম্পোজিয়াম কমিটি’র উদ্যোগে ‘স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের ধ্যান-ধারনা’ শীর্ষক এই ওয়েবিনার হয়। এতে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন শিক্ষাবিদ ড. মাহবুব উল্লাহ।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ –এই দুইটাকে আলাদা করে দেখার সুযোগ নেই। কারণ শহীদ জিয়াই বাংলাদেশের জনগনের জন্য নতুন একটা পরিচিত, স্বতন্ত্র একটা অস্তিত্ব তার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে, তার রাজনীতির মধ্য দিয়ে সেটা প্রমাণ করেছেন। তিনি তার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন চিন্তার মধ্য দিয়ে জাতিকে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ উপহার দিয়েছিলেন।”

তিনি বলেন, ‘যারা আজকে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে ভুলিয়ে দিতে চান, তার সম্পর্কে বিকৃত কথা, ইতিহাস বিকৃত করে জনগনের সামনে তুলে ধরতে চান, নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে চান তাদের উদ্দেশ্যে শুধু একটি কথা বলতে চাই- যার যে অবদান সে অবদানটাকে স্বীকার করুন।”

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘স্বাধীনতা যুদ্ধে মানুষের মূল আকাংখাটা ছিলো একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা, এটা মুক্ত সমাজ ব্যবস্থা। দুর্ভাগ্য আমাদের, আজকে এই ৫০ বছর পরে আমরা এটা পালন করতে যাচিছ-কী বলে পালন করব? আমাদের তো লজ্জা হওয়া উচিত যে, আমরা ৫০ বছর পরেও একটা সুষ্ঠু রাজনৈতিক কাঠামো নির্মাণ করতে পারিনি, আমরা নির্মাণ করতে পারিনি যে, একটা চমতকার ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা পরিবর্তন হবে এবং সেটার জন্য দায়ী আজকে যারা ক্ষমতা জোর করে দখল করে আছে, অস্ত্র নিয়ে দখল করে আছে জনগন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে তাদের কারণেই এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।’

কমিটির আহবায়ক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খানের সভাপতিত্বে সদস্য সচিব ইসমাইল জবিহউল্লাহ‘র সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য্ অধ্যাপক খন্দকার মুস্তাহিদুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত জজ ইকতেদার আহমেদ, বিএনপির প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

 

সুত্রঃ কালের কণ্ঠ