বর্ণাঢ্য আয়োজনে নওগাঁ মুক্ত দিবস পালিত

নিজস্ব প্রতিবেদক,নওগাঁ:
বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও আলোচনা সভা আয়োজনের মধ্য দিয়ে নওগাঁ মুক্ত দিবস পালন করা হয়েছে। স্থানীয় সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন একুশে পরিষদ নওগাঁ এসব কর্মসূচির আয়োজন করেন।
দিবসটি উপলক্ষে শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় শহরের প্যারিমোহন সাধারণ গ্রন্থাগার চত্বর থেকে জেলা শহরে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। এটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে মুক্তির মোড় শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে গিয়ে শেষ হয়। পরে শহীদ স্মৃতি স্তম্ভের বেদীতে ফুল দিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানানো হয়। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে মুক্তির মোড় শহীদ মিনার চত্বরে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
একুশে পরিষদের সভাপতি ডিএম আব্দুল বারীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভা হয়। এতে একুশে পরিষদের উপদেষ্টা শরিফুল ইসলাম খান, কায়েস উদ্দিন ও বিন আলী পিন্টু, সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম, প্রতাপ চন্দ্র সরকার, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা আল মেহমুদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট নওগাঁ জেলা শাখার সভাপতি মনোয়ার হোসেন লিটন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ডিএম আব্দুল বারী বলেন, ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় পাকিস্তানি সেনার আত্মসমর্পণ করার দুই দিন পর নওগাঁ হানাদারমুক্ত হয়, এই কথা আজকের তরুণ প্রজন্মের অনেকেই জানে না। আনুষ্ঠানিক বিজয় অর্জনের পর দিনেই নওগাঁয় তমুল যুদ্ধ হয়। একুশে পরিষদের মতো সামাজিক-সাংস্কৃতিক আয়োজনের মধ্য দিয়ে দেশের প্রকৃত ইতিহাস তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা উচিত।
নওগাঁ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম খান বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার এতগুলো বছরেও হানাদারদের দোসরদের প্রেতাত্মা থেকে গেছে। দেশের প্রগতিশীল চেতনার মানুষদের বর্তমান প্রজন্মকে সঙ্গে নিয়ে দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষায় ঐক্যবদ্ধভাবে কা করতে হবে।
১৯৭১ সালের ১৮ ডিসেম্বর নওগাঁ হানাদারমুক্ত হয়। ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের খবর জানার নওগাঁর মুক্তিযোদ্ধারা নওগাঁ শহরে প্রবেশের চেষ্টা চালান। ১৭ ডিসেম্বর নওগাঁ পৌরসভার বোয়ালিয়া, আরজি নওগাঁ ও লিটন ব্রিজ এলাকায় দিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা শহরে প্রবেশের চেষ্টা করলে পাকিস্তানি সেনারা মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধ করলে শুরু হয় সম্মুখযুদ্ধ। এতে শহীদ হয় ছয়জন মুক্তিযোদ্ধা। পর দিন ১৮ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে মিত্রবাহিনী যোগ দিলে পাকিস্তানি সেনাদের পতন হয়। শহরের কেডি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে তারা আত্মসমর্পণ করেন। এই দিনে নওগাঁ পুরাতন কালেক্টরেট চত্বর মাঠে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়।