বরখাস্তকারী ডিসিওকে শোকজ, পুরস্কৃত হতে পারেন টিটিই শফিকুল

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্কঃ 

রেলের ভ্রামমাণ টিকিট পরীক্ষক (টিটিই) শফিকুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্তের ঘটনায় পাকশী বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও) নাসির উদ্দিনকে শোকজ করা হয়েছে। তাঁকে কেন এত দ্রুত বরখাস্ত করা হয়েছে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে। যদি টিটিই নির্দোষ থাকেন তাহলে তাঁকে পুরস্কৃত করা হবে বলে জানিয়েছেন রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। তবে সব কিছুই করা হবে এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দেওয়ার পর।

রবিবার রেল ভবনে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। সেই আলোচনায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।

নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘টিটিই বরখাস্তের সংশ্লিষ্ট ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির মাধ্যমে পুরো ঘটনাটা বের হয়ে আসবে। তা ছাড়া গতকাল (শনিবার) পর্যন্ত আমি জানতাম না যে অভিযোগকারীরা আমার স্ত্রীর আত্মীয়। পরে আমি জানতে পেরেছি। তবে মন্ত্রীর স্ত্রী হিসেবে তিনি শুধু অভিযোগ করেছেন, কাউকে সাসপেনশন করতে বলেননি। ‘

তিনি বলেন, ‘এদের (যারা বিনা টিকিটে রেলে ভ্রমণ করেছেন) বয়স হলো ১৫, ১৬, ১৭, ১৮ এ ধরনের। আমার নিজের ভাইগ্না-ভাগ্নি আছে ৩৭ জন। তাদের ছেলেমেয়ে হইছে। নাতি-নাতনি এবং পুতি পর্যন্ত হইছে। এখন কে কোথায় আমার পক্ষে সেটা জানা সম্ভব না। এখন কেউ যদি বিনা টিকিটে ভ্রমণ করে; তাইলে সে মন্ত্রীর পরিচয় দিবে, ডিজির পরিচয় দিবে, সচিবের পরিচয় দিবে। এটাই হয় সাধারণত। ট্রেনে যাত্রী হয়ে বিনা টিকিটে ভ্রমণ, এটা নতুন কিছু না। এ জন্য টিটিকে টাকা উঠানোর জন্য আমরা রিসিট দিই। এটা একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। ‘

মন্ত্রী বলেন, ‘একজন যাত্রী হিসেবে এ ধরনের অভিযোগ করতে পারেন। কিন্তু মন্ত্রীর বউ হিসেবে অভিযোগ করতে পারেন না। আমার স্ত্রীর রেলের বিষয়ে কোনো অভিযোগ থাকলে আমাকে বলতে পারেন। এটাই হলো নিয়ম। কাজেই এই জায়গাটায় কিছুটা ব্যত্যয় আছে। যে কারণেই আমি মনে করি, টিটিইর বারখাস্তের অর্ডারটা যথাযথ হয়নি, তাই প্রত্যাহার করা হয়েছে। ‘

নূরুল ইসলাম সুজন আরো বলেন, ‘বিনা টিকিটে ট্রেনের যাত্রী উঠলে টিটিইর যা দায়িত্ব ছিল সেটি পালন করেছে ওই টিটিই, প্রাথমিকভাবে তা জানা গেছে। তবে যে ঘটনাটি ঘটেছে এটি একটি দুর্ঘটনা। যারা এর সঙ্গে জড়িত তদন্তে বেরিয়ে আসলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর এই ঘটনায় টিটিইর যদি কোনো দোষ না থাকে তাহলে ওই টিটিকে পুরস্কৃত করা হবে। ‘

তিনি বলেন, ইতিমধ্যে টিটিইর সাময়িক বরখাস্ত অর্ডারটি প্রত্যাহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাকশীর ডিডিওকে শোকজ করা হয়েছে। কেন এত অল্প সময়ের মধ্যে তাঁকে বরখাস্ত করা হলো। কোনো যাত্রী অভিযোগ দিতেই পারেন; কিন্তু সেটি যাচাই-বাছাই না করে এমন সিদ্ধান্ত কেন নিয়েছেন এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে।

এদিকে টিটিই শফিকুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্তের ঘটনার তদন্তের সময় আগামী বুধবার পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। সেই সঙ্গে বরখাস্তের আদেশ দেওয়া পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও) নাসির উদ্দিনকে কারণ জানাতে বলেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। গতকাল পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) শাহীদুল ইসলাম তদন্তের সময় বাড়ানোর বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত, অভিযোগকারী ও সংশ্লিষ্টদের নিয়ে গতকাল পাকশী বিভাগীয় সহকারী পরিবহন কর্মকর্তার (এটিও) কার্যালয়ে তদন্তের কার্যক্রম শুরু হয়। ঘটনার রাতে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনে কর্তব্যরত ছিলেন ট্রেন পরিচালক শরিফুল ইসলাম। আজ তদন্তের শুরুতেই তাঁর বক্তব্য নেওয়া হয়।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ