বন্যায় ভাসছে সিলেট : প্রবাসীদের উৎকণ্ঠা, আকুতি

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্কঃ

প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেট অঞ্চল সর্বশেষ কবে এমন বন্যা দেখেছে তা কেউ মনে করতে পারছে না। হঠাৎ আসা বন্যায় সম্পূর্ণ  যোগাযোগ-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে পুরো সিলেট অঞ্চল। সুনামগঞ্জ, সিলেট এবং হবিগঞ্জের অনেক এলাকা প্লাবিত। বিদ্যুৎ এবং মোবাইল নেটওয়ার্কের কারণে প্রথম বিচ্ছিন্নতা শুরু হয়েছে প্রবাসীদের।

প্রবাসে যাঁরা আছেন, সবারই মা-বাবা আত্নীয়-স্বজন, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ নানাভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে সংযুক্ত। কেউ কেউ আবার প্রবাসে আছেন তাদের হয়তো শুধু বয়স্ক মা-বাবাই দেশে থাকেন।

একদিন আগে নার্গিস খান তাঁর ফেসবুকে লেখেন, ৩৫ ঘণ্টার ওপর হতে চললো আমার আম্মার কোনো সঠিক সংবাদ জানি না! ডুবন্ত শহরে তুমি কোথায় আছগো আম্মা….। সুনামগঞ্জ শহরে নিজের বাসায় এক ধরনের একাই থাকেন তাঁদের আম্মা। ছেলে মেয়ে তিনজন থাকেন লন্ডনে। এমন আকুলতা সিলেটের প্রায় সকল প্রবাসীর।

ফ্রান্সের রুবেল দাস তাঁর ফেসবুকে লিখেছেন, সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই থানা শহরের কেউ কি আমার বন্ধু তালিকায় আছেন?
বন্যায় আটকা পড়েছেন আমার বৃদ্ধা শাশুড়ি। কোনোরকম যোগাযোগই করতে পারছি না। প্লিজ কেউ যদি থাকেন আমাকে একটু নক করবেন। এমন ব্যাকুল অবস্থা প্রায় সকলেরই। আমার স্ত্রী নিজেই তার মা এবং ভাইয়ের সাথে তিন ধরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। গতকাল নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন তিনি।

শুধুমাত্র একটু খোঁজ পাওয়ার জন্য কতভাবে, কতজনকে যে ফোন করেছেন তিনি। কিন্ত কেউ কোনো তথ্যই দিতে পারছেন না। তারা কি বাড়িতেই আছেন নাকি নিরাপদ কোনো স্থানে চলে গেছেন।

দেশে যারা আছেন তারা হয়তো কোনো না-কোনোভাবে, নৌকায় বা ভেলায় চড়ে ও জানতে পারছেন, কিংবা খোঁজ নিতে পারছেন। কিন্ত প্রবাসীদের ক্ষেত্রে সেই সুযোগ ও নেই। মোবাইল যোগাযোগ বন্ধ হওয়ার সাথে সাথেই তাদের উৎকণ্ঠা শুরু হয়ে যায়।

অর্থনৈতিক ক্ষতির কথা কেউ চিন্তা করছেন না। সহায় সম্পত্তি আছে না ভেসে গেছে, এসব নিয়েও কারো কোনো মাথাব্যথা নেই। সবাই ব্যস্ত স্বজনের খোঁজে। শুধুমাত্র তারা কেমন আছেন সেটি জানার জন্য।

যুক্তরাজ্য ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির আখতারুজ্জামান বলেন, ‘এই মুহূর্তে পুরো সিলেট বিভাগে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে সবাইকে নিরাপদ স্থানে আনার ব্যবস্থা করা জরুরি। পর্যাপ্ত ত্রাণ, সাহায্য, এগুলোর চেয়ে ও দুর্গত মানুষদের জীবন বাঁচানো প্রথম দায়িত্ব।

 

সুত্রঃ কালের কন্ঠ