বগুড়া প্রতিনিধি:
বগুড়া করোনেশন ইনস্টিটিউশন এ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. আমিনুল ইসলামের পদত্যাগের দাবিতে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা শহরের বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে।
রবিবার (১৮ আগস্ট) সকালে অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীরা কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করে। পরে বিক্ষুদ্ধরা একটি মিছিল নিয়ে শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথায় সমাবেশ করে। সমাবেশে শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষ মো. আমিনুল ইসলামের পদত্যাগের দাবিতে নানা শ্লোগান দেয় এবং বিভিন্ন ধরনের ব্যানার, ফেস্টুন প্রদর্শন করে। পরে সেখানে অবস্থানের পর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম একজন দুর্নীতিপরায়ণ শিক্ষক। তিনি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও বগুড়া জেলা যুবলীগের সভাপতি শুভাশিষ পোদ্দার লিটনের সাথে সখ্যতা গড়ে শহরের ঠনঠনিয়া এলাকায় কয়েক কোটি টাকা মূল্যের একটি বাড়ি করেছেন। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীদের এমপিওভুক্তির জন্য নগদ ৩১ লাখ টাকা জোরপূর্বক আদায় করেছেন। প্রতিষ্ঠানের একটি কলেজ বাস চালু থাকলেও মোট ৬টি বাস চলাচলের বিল ভাউচার করা, ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকায় বাস কিনে ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা দেখানো, মে ও জুন মাসে ব্যাংক থেকে ৫০ লাখ টাকা উত্তোলন, প্রতিষ্ঠানের দুই কোটি টাকার এফডিআরের কোন হদিস না থাকাসহ আত্মীয়স্বজন ও পরিচিতদের নিয়োগ দিয়ে মোট অংকের টাকা আত্মসাৎ করে।
প্রতিষ্ঠানের মতিউর রহমান সাঈদ নামের এক শিক্ষক বলেন, ‘অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম নানা রকম আর্থিক অনিয়ম করেছেন। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীদের এমপিও ভুক্তির জন্য নগদ টাকা নিয়েছেন। করোনাকালীন এসএসসি ও এইসএসসি পরীক্ষার্থীদের টাকা শিক্ষাবোর্ড থেকে ফেরত আসলেও আমিনুর ইসলাম একাই সেই টাকা নিয়েছেন। প্রতিষ্ঠানের সভাপতির নাম ব্যবহার করে ব্যাংক থেকে ৫০ লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন। এছাড়াও রেজুলেশন বইতে একাই সভাপতি এবং সদস্যদের স্বাক্ষর করতেন। শিক্ষকদের সব সময় ভয়ে রাখতেন। আমরা এই দুর্নীতিগ্রস্ত অধ্যক্ষ ও সভাপতির পদত্যাগ দাবি করছি।’
এর আগে ১৪ আগস্ট দুর্নীতিবাজ দাবী করা ওই অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেয় শিক্ষার্থীরা। তবে আল্টিমেটামের সময় শেষ হওয়ায় এবং কোন পদক্ষেপ গ্রহন না করায় আবারো বিক্ষোভ কর্মসূচি-সমাবেশ হয় বলে জানান বিক্ষুদ্ধ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম জানান, কয়দিন আগে ‘আমাকে কয়েকজন হুমকি দিয়েছে। সেইদিন থেকে আমি আর কলেজে যাই না। তাছাড়া আমার পদত্যাগ দাবি করে বিক্ষোভ হয়েছে এটা জেনেছি। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে শিগগিরই আমার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিবো।’