শুক্রবার , ২ আগস্ট ২০২৪ | ১৪ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

বগুড়ায় ছাত্রী ধর্ষণ মামলায় এসআই মিথুনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

Paris
আগস্ট ২, ২০২৪ ৪:২৫ অপরাহ্ণ

বগুড়া প্রতিনিধি:
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ধর্ষণের মামলায় পুলিশের বগুড়ার শেরপুর থানার সাবেক এসআই মিথুন সরকারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। গত বুধবার(৩১ জুলাই) বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-২ আদালতের বিচারক নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর এ আদেশ দেন।

আদালতের আদেশের পরপরই এসআই মিথুন সরকারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। মিথুন সরকার বৃহত্তর ময়মনসিংহ বিভাগের শেরপুর জেলা সদরের বয়ড়া পালপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় এক বছর আগে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে বগুড়া পুলিশ লাইন্সে প্রত্যাহার করা হয় এবং ওখানেই অদ্যবধি কর্মরত আছেন এসআই মিথুন।

বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-২ আদালতের সরকারি কৌসূলী (পিপি) আশেকুর রহমান সুজন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গ্রেফতারি পরোয়ানা তামিল নিশ্চিত করতে আদালত থেকে বুধবারই বগুড়ার পুলিশ সুপার এবং রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজির নিকট আদেশের অনুলিপি পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) বগুড়ার এসআই ও মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন মন্ডলের দাখিল করা অনুসন্ধান প্রতিবেদন এবং ভুক্তভোগী ছাত্রীর দাখিল করা কথপোকথনের রেকর্ড পর্যালোচনা করে আসামি মিথুন সরকারের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ৯ (১) ধারার উপাদান আছে মর্মে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন বলে জানান পিপি আশেকুর রহমান।

এরআগে মামলার তদন্ত শেষে গত ১০ জুন আদালতে পিবিআই বগুড়ার পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন মন্ডল অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওই প্রতিবেদনে ১৬৪ ধারায় আদালতে দেওয়া দুজন সাক্ষীর জবানবন্দি প্রদান ছাড়াও নানা তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করা হয়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পুলিশের বিভাগীয় তদন্তেও অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।

তবে অনুসন্ধান প্রতিবেদনে ওই ছাত্রী প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় আসামি মিথুন সরকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এর ৯(১) ধারায় আমলে নেওয়ার মতো কোন অপরাধ করেননি বলে উচ্চ আদালতের একটি রায়ের কথা উল্লেখ করে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা।

আদালত সূত্র জানায়, পিবিআই-এর দাখিল করা ওই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী ছাত্রী গত ৩০ জুন আদালতে না রাজি দরখাস্ত দেন। আদালত অনুসন্ধান প্রতিবেদনসহ মামলার তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে অভিযোগ আমলে নিয়ে বুধবার(৩১ জুলাই) আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানার আদেশ দেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী ছাত্রী রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেন।

গত ২০২৩ সালের জুন মাসে শেরপুর উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের দড়িমুকুন্দ গ্রামের এক তরুণীর সঙ্গে তার সাবেক স্বামীর টাকা-পয়সার লেনদেন নিয়ে বিরোধ বাধে। জাতীয় পরিসেবা ৯৯৯-এ থেকে ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে যান বগুড়ার শেরপুর থানায় কর্মরত থাকা এসআই মিথুন সরকার। সেখান থেকেই ওই তরুণীর সঙ্গে পরিচয় ঘটে তার। পরে ধর্ম পরিচয় গোপন করে এসআই মিথুন সরকার ওই ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে তোলেন। এরপর মুঠোফোনে, টেলিগ্রাম, ইমুতে খুদে বার্তা আদান প্রদান হয়। একপর্যায়ে নিজের পরিচয় গোপন করে বিয়ের প্রলোভনে ওই তরুণীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেন তিনি। কিন্তু পরে ওই পুলিশ কর্মকর্তার ভিন্ন ধর্মাবলম্বী হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন ভুক্তভোগী তরুণী। একপর্যায়ে গত ২২ জুলাই ঘটনাটি জানিয়ে জেলার পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন তিনি। পরে অভিযোগটি তদন্তে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়।

গত বছরের ৩ জুন মেয়েটির জন্মদিনে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে কৌশলে শেরপুর শহরের খোন্দকারটোলা এলাকার চিহ্নিত এক মাদক ব্যবসায়ী এবং পুলিশের সোর্সের ভাড়া বাসায় নিয়ে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন।

ধর্ষণের শিকার তরুণী বিষয়টি পরিবারের ফাঁস করে দিলে এসআই মিথুন বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। প্রতারণা বুঝতে পেরে ওই ছাত্রী একই বছরের ১৭ আগস্ট বগুড়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-২ আদালতে এসআই মিথুন সরকারের বিরুদ্ধে নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।

মামলা দায়েরের পর এসআই মিথুন সরকারকে প্রথমে শেরপুর থেকে আদমদীঘি থানায় বদলি করা হয়। দুদিনের মাথায় পুলিশ লাইন্সে প্রত্যাহার ও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় মিথুন সরকারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রজু হয়।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বগুড়ার নবাগত পুলিশ সুপার জাকির হাসান বলেন, সাময়িক বরখাস্ত থাকা এসআই মিথুন সরকারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানার জারি সংক্রান্ত আদালতের আদেশ এখনো কাছে পৌছেনি। আদালতের আদেশ পাওয়া মাত্র আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর