ফ্রান্সে নতুন করে ৩০ হাজারের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত

ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমণের হার আবারও বাড়তে শুরু করেছে। এর ফলে নতুন করে বিভিন্ন সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে গত কিছুদিন ধরে দ্বিতীয় দফা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। যদিও বৃহস্পতিবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপিয়ান বিভাগের পরিচালক ডা. হানস ক্লুগে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মার্চ-এপ্রিল মাসে করোনাভাইরাসের প্রথম দফা সংক্রমণের সময়ের চেয়ে বর্তমানে মৃত্যুর হার পাঁচ গুণ কম।

ডা. হানস ক্লুগে জানান, গত কয়েক সপ্তাহে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ তরুণদের মধ্যে কভিড পজিটিভ হওয়ার হার বেড়েছে। যে বয়সের মানুষের কভিড সংক্রমণে মারা যাওয়ার আশঙ্কা কম থাকে। এ কারণে সংক্রমণের হার বাড়লেও মৃত্যুর হার কমেছে বলে ধারণা প্রকাশ করেন হানস ক্লুগে। তবে আরো জানিয়েছেন, ইউরোপে কভিড সংক্রমণের যে ধারা দেখা যাচ্ছে, তা আশাবাদী হওয়ার মতো নয়।

তার মতে, ইউরোপের দেশগুলোর সরকার যদি তাদের বিধিনিষেধ শিথিল করে দেয় তাহলে জানুয়ারি মাসের মধ্যে প্রতিদিনের মৃত্যুর হার এবছরের এপ্রিলের তুলনায় চার থেকে পাঁচ গুণ বেড়ে যেতে পারে। কিন্তু ৯৫% মানুষ যদি মাস্ক পড়ে এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলে তাহলে আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে ২ লাখ ৮১ হাজার মানুষের মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব।

ফ্রান্স, পর্তুগাল, ইতালি, জার্মানিসহ বেশ কয়েকটি দেশে গত কিছুদিন ধরে সংক্রমণ বাড়তে থাকায় কোয়ারেন্টিন, সামাজিক দূরত্ব মানার মত বিষয়গুলোতে আবারও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।

করোনাভাইরোস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে শনিবার থেকে প্যারিসসহ ফ্রান্সের আটটি শহরে রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করা হয়েছে। আর তার একদিন আগে বৃহস্পতিবার ফ্রান্সে নতুন করে করোনাভাইরাস আক্রান্ত শনাক্তের সংখ্যা লাফিয়ে বেড়েছে। বুধবার ফ্রান্সে নতুন কভিড আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ৩০ হাজার ৬২১ জন, যা আগের দিনই ছিল ২২ হাজার ৫৯১ জন। প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, দৈনিক নতুন সংক্রমণের সংখ্যা ৩ হাজারে নামিয়ে আনতে চান তিনি।

ফ্রান্সের মতো ইতালিতেও বৃহস্পতিবার নুতন সংক্রমণের সংখ্যা বেড়েছে। শটির দক্ষিণ কামপানিয়া অঞ্চলে এবং নেপলস শহরে সব স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে দুই সপ্তাহের জন্য।

ইউরোপে সর্বোচ্চ সংক্রমণের হার এই মুহূর্তে চেক প্রজাতন্ত্রে। সেখানে অক্টোবরে করোনাভাইরাসের নতুন সংক্রমণের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। চেক প্রজাতন্ত্রে স্কুল ও বার বন্ধ করে দেওয়া হলেও সংক্রমণ বাড়ছে। চেক সরকার রোগীদের জন্য প্রথম ফিল্ড হাসপাতাল তৈরি করার কথা এবং বিদেশে কর্মরত চিকিৎসকদের দেশে ফেরার আহ্বান জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার নতুন ৬ হাজার ৬৩৮ জন করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে জার্মানিতে। যা মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে দৈনিক সংক্রমণের হিসাবে সর্বোচ্চ। জার্মানিতে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বার এবং ক্লাব নির্ধারিত সময়ের আগেই বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ