ফেসবুক নিয়ে হাউগেনের অভিযোগ নিয়ে মুখ খুললেন জাকারবার্গ

যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটের একটি কমিটির কাছে দেয়া বক্তব্যে ফেসবুকের সাবেক কর্মী ফ্রান্সেস হাউগেন বলেছেন, ‘ফেসবুক এবং তাদের অ্যাপগুলো শিশুদের ক্ষতি করছে, বিভেদ বাড়াচ্ছে এবং দেশে দেশে গণতন্ত্রকে দুর্বল করে দিচ্ছে।’ ফ্রান্সেস হাউগেন ফেসবুকের প্রোডাক্ট ম্যানেজার ছিলেন। এখন তিনি এই কোম্পানির নানা গোপনীয় তথ্য তুলে ধরতে শুরু করেছেন।

ফেসবুক নিয়ে হাউগেনের অভিযোগ নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন প্রতিষ্ঠানটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ। তিনি বলেছেন, ফেসবুক মানুষের নিরাপত্তার চেয়ে লাভের দিকে বেশি নজর দেয় এ তথ্য সঠিক নয়। হাউগেনের অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে একটি ধারণাটি রয়েছে যে, আমরা নিরাপত্তা এবং ভালো থাকার চেয়ে লাভকে বেশি অগ্রাধিকার দিই। এটা ঠিক নয়।

জাকারবার্গ বলেন, হাউগেনের ফেসবুক সম্পর্কে অনেক দাবি এবং ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের ওপর ভিত্তি করে যে নথি প্রকাশ পেয়েছে, তার কোনো মানে নেই। এর আগে, ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ পায়। সেখানে বলা হয়, ফেসবুক অভ্যন্তরীণ গবেষণায় কাজ করতে ব্যর্থ হয়েছে। একইসঙ্গে একই মালিকানাধিন প্রতিষ্ঠান ইনস্টাগ্রাম মাধ্যমটি কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে বলেও উল্লেখ করা হয়।

উল্লেখ্য, ফ্রান্সেস হাউগেন ফেসবুকের প্রোডাক্ট ম্যানেজার ছিলেন। এখন তিনি এই কোম্পানির নানা গোপনীয় তথ্য তুলে ধরতে শুরু করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ক্যাপিটল হিলে সিনেট কমিটির সামনে শুনানিতে ফেসবুকের ব্যাপক সমালোচনা করেছেন ৩৭ বছর বয়সী এই সাবেক কর্মী।

মার্ক জুকারবার্গের বিবৃতি

বুধবার সকালে (যুক্তরাষ্ট্রের সময় মঙ্গলবার রাতে) ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্মকর্তা মার্ক জুকারবার্গ লম্বা একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন, যেখানে তিনি ফেসবুকের সাম্প্রতিক বিভ্রাট এবং মিজ হাউগেনের বক্তব্য প্রসঙ্গে কথা বলেছেন।

হাউগেনের বক্তব্যের বিষয়ে মার্ক জুকারবার্গ বলেছেন, তাদের বিষয়ে যেসব তথ্যপ্রমাণ সম্প্রতি প্রচার করা হচ্ছে, তাতে ফেসবুকের কাজ এবং উদ্দেশ্য সম্পর্কে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। যেভাবে কোম্পানিকে তুলে ধরা হচ্ছে, তা সঠিক নয়। আমরা সবসময়েই নিরাপত্তা, মঙ্গল এবং মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে গুরুত্ব দেই।

”(ফেসবুকের সম্পর্কে) অনেক দাবির যৌক্তিকতা নেই। যদি আমরা গবেষণার ফলাফলকে অবহেলাই করতে চাইতাম, তাহলে কি আমরা এ ধরনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু বোঝার জন্য গবেষণা করতাম? যদি আমরা ক্ষতিকর কনটেন্টের বিষয়ে লড়াই না করতাম, তাহলে কি আমরা অন্য যেকোনো প্রতিষ্ঠানের তুলনায় এটি ঠেকাতে এতো কর্মী নিয়োগ করতাম? আমাদের চেয়ে কি কেউ এতো বেশি কর্মী এই কাজে নিয়োগ দিয়েছে?”

”মানুষের নিরাপত্তা এবং মঙ্গলের চেয়ে আমরা মুনাফার প্রতি বেশি মনোযোগ দেই বলে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সঠিক নয়। একটা উদাহরণ হলো, যখন আমরা নিউজ ফিডের ক্ষেত্রে যেসব পরিবর্তন আনি, যার ফলে ভাইরাল ভিডিওর পরিবর্তে মানুষজন নিজেদের বন্ধু এবং স্বজনদের ভিডিও বেশি দেখতে পারে। আমরা জানি, মানুষ এর ফলে ফেসবুকে কম সময় কাটাবে, কিন্তু গবেষণায় যেহেতু এটা মঙ্গলজনক বলা হয়েছে, আমরা করেছি। যারা মুনাফার জন্য কাজ করে, তারা কি এটা করবে?” তিনি প্রশ্ন করেছেন।

তিনি বলেছেন, ”আমরা যা কিছু তৈরি করছি, সেখানে শিশুরা যাতে নিরাপদ থাকে এবং তাদের জন্য ক্ষতিকর না হয়, এটা আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি ব্যক্তিগতভাবে এর পেছনে সময় দিয়েছি।”

 

সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন