ফুটপাতে কাপড় বিক্রি করে জীবীকা নির্বাহ করেন রুবেল

জেসমিন আরা ফেরদৌস:
রাজশাহী নগরীর রানীবাজারের বাসিন্দা রুবেল হোসেন। আর দশ জন স্বাভাবিক মানুষের মতো সহজেই অন্যের কাছে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করতে পারেন না তিনি। জন্ম থেকেই তার রয়েছে জিহ্বায় জড়তা৷ যার ফলে তিনি কথা বললেও তার কথা স্পষ্টভাবে বোঝা যায়না। শারিরীক প্রতিবন্ধকতা থাকলেও জীবন যুদ্ধে হার মানেননি রুবেল। নগরীর সাহেব বাজারে ফুটপাতে কাপড়ের ব্যবসা করেন তিনি।

পরিবারের ২ সন্তানের মধ্যে ছোট তিনি। বাবা মারা গেছেন ৭ বছর আগে। বর্তমানে মা ও স্ত্রীকে নিয়ে তার সংসার। শারিরীক প্রতিবন্ধকতা ও দরিদ্রতার কারণে বেশিদূর পড়াশোনা করতে পারেননি। দ্বিতীয় শ্রেনীতেই বন্ধ হয়ে যায় তার পড়াশোনা।

রুবেল বলেন , ‘২০ বছর আগে ২০০১ সালে আমি এই ব্যবসা শুরু করেছি। এই কাপড়গুলো আমি ঢাকা থেকে নিয়ে আসি। সেখান থেকে যে দামে কাপড় কিনে আনি তার চেয়ে ৪০-৫০ টাকা বেশি দামে এখানে বিক্রি করি ৷এছাড়াও আমার দোকানে এখন কাপড়ের পাশাপাশি চা ও বিক্রি হয়।

তিনি আরো বলেন, ‘প্রতিদিন প্রায় ১০-১৫ টা কাপড় বিক্রি হয়৷ আর এখান থেকে যা আয় হয় তা দিয়েই আমাদের তিনজনের সংসার চলে যাই।’

প্রতিবেদকের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, লকডাউনের সময় বাজার বন্ধ থাকায় বেচা-কেনা করা সম্ভব হয়নি। সে সময় বাসাতেই বসে ছিলাম৷ আত্মীয় স্বজন ও সরকারের বিভিন্ন ধরনের সহায়তায় সে সময় সংসার চলতো৷ তবে এখন বাজার খুলে দিলেও বেচা-কেনা খুব একটা বেশি হয়না।

আরও একজন ব্যবসায়ী শামসুল হক। রুবেলের ভ্যানের পাশেই তারও রয়েছে কাপড়ের ব্যবসা। তিনি বলেন, ‘জন্মগতভাবেই রুবেলের জিহ্বায় এ জড়তা রয়েছে। তার কথা স্পষ্টভাবে বোঝা যায়না৷ আমরা দীর্ঘদিন যাবত এক সাথে কাজ করায় সহজেই রুবেলের কথা বুঝতে পারি। কিন্তু সাধারণ ক্রেতারা সচরাচর তার কথা বুঝতে পারেননা। তখন আমরা বা তার দোকানের সহকারী রুবেলের কথা ক্রেতাদের বুঝতে সহায্য করে।’

জেএ/এফ