প্রশ্ন তবু রয়েই গেল

দরজায় কড়া নাড়ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এর আগে ১৩টি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ হয়েই প্রথম পর্বের বাধা পেরোনোর লক্ষ্যে ওমানে যাওয়ার কথা বাংলাদেশ দলের। তারা একটু আগেভাগেই সেখানে যাচ্ছেও। তবে বিশ্বকাপের জন্য কতটা প্রস্তুত হয়ে যাচ্ছে, সে প্রশ্ন উচ্চারিত হয়ে আসছে অস্ট্রেলিয়া সিরিজ থেকেই।

আসছে এ জন্যই যে ধীরগতির অসমান বাউন্সের উইকেট তো আর ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠেয় বিশ্ব আসরে বাংলাদেশের জন্য সেজে থাকবে না। সেখানে বরং ব্যাটিংয়ের পক্ষে সুবিধাজনক উইকেটই থাকার সম্ভাবনা বেশি। অস্ট্রেলিয়া সিরিজের পর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও তেমন উইকেটে নিজেদের একটু ঝালিয়ে নেওয়ার দাবি তাই অযৌক্তিক ছিল না। বাংলাদেশ অবশ্য জোর দিয়েছে ম্যাচের পর ম্যাচ জিতে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নেওয়ার দিকেই।

বাড়তি সেই আত্মবিশ্বাসও তো কাল সিরিজের শেষ ম্যাচে ব্যাটিং উইকেটে সাফল্যের পথ খুঁজে নিতে পারল না। তা-ও ভালো যে অস্ট্রেলিয়া সিরিজ থেকে টানা ৯ ম্যাচ মন্থর উইকেটে খেলার পর শেষ ম্যাচে এসে উইকেটের ধরন একটু বদলাল বাংলাদেশ। অব্যবহৃত উইকেটে খেলা হলো কিউইদের বিপক্ষে শেষ ম্যাচটি। বল ব্যাটেও এলো, নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরাও স্বাচ্ছন্দ্যে খেললেন। দেখার ছিল, ওমান যাওয়ার আগে বিশ্বকাপের মহড়ায় কেমন করেন স্বাগতিক দলের ব্যাটসম্যানরা।

সিরিজের শেষ ম্যাচে দেখা হয়ে গেল সেটিও। যে দেখাকে খুব আশাব্যঞ্জক করে তুলতে পারলেন না মাহমুদ উল্লাহরাও। ব্যাটিং উপযোগী পিচে খেলতে নেমে বরং উইকেটই বিলিয়ে এলেন টপ ও মিডল অর্ডারের তিনজন ব্যাটসম্যান। তাতে ১৬২ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ২৭ রানের হারে সিরিজ শেষ করতে হলো বাংলাদেশকে। অথচ নিউজিল্যান্ডের এই দলে তাদের বিশ্বকাপ স্কোয়াডের কেউই ছিলেন না। তবু এখান থেকে ৩-২-এ হেরে যাওয়াটা তাদের পক্ষে কৃতিত্বপূর্ণই। কারণ এই দলের অধিনায়ক টম ল্যাথাম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিই খেলেছেন চার বছর আগে।

এখান থেকে পাকিস্তান সফরে গিয়ে এই দলটির খেলার কথা আছে আরো তিনটি টি-টোয়েন্টি। কিন্তু এরপর? এরপর এই দলের ক্রিকেটাররা আবার কবে নিউজিল্যান্ডের জার্সিতে এই সংস্করণে খেলবেন, সেটি অজানা থাকার পরেও এই সফরে ভালো কিছু করার ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণার ঘাটতি ছিল না তাদের। শেষ ম্যাচে তাদের কাছে মাহমুদ উল্লাহদের হারে বিশ্বকাপ প্রস্তুতি নিয়ে পুরনো প্রশ্নটা থেকেই গেল। মাহমুদ উল্লাহ নিজে অবশ্য এখনই সেসব ভেবে আক্রান্ত হতে চাইলেন না। তিনি বরং পর পর তিনটি সিরিজ জেতার সাফল্যকেই আপাতত বড় করে দেখতে চান, ‘গত তিন সিরিজে আমরা ভালো ক্রিকেট খেলেছি। যে কারণে সব কয়টা সিরিজই জিততে পেরেছি। এটিই অনেক বড় অনুপ্রেরণা। আশা করি, আমরা যখন বিশ্বকাপে যাব, তখন সেখানেও জিততে পারব।’

বিশ্বকাপের আগে শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচের হারেও খুব বেশি ব্যথিত হলেন না আগেই সিরিজ জিতে নিয়েছেন বলে। কাল রাতে ম্যাচের পর বলছিলেন, ‘আজকেও জিততে চেয়েছিলাম আমরা, কিন্তু নিউজিল্যান্ড সত্যিই ভালো ব্যাটিং করেছে। আমরাও রান তাড়ায় ভালো করিনি, তবে সিরিজ জিততে পেরে খুশি।’ বোলিংয়ে শেষটা ভালো না হলেও শুরু নিয়ে সন্তুষ্ট অধিনায়ক, ‘আমি মনে করি, বোলাররা ভালোই করেছে। তবে শেষটা ভালো হয়নি। স্পিনাররা দারুণ বোলিং করেছে। শরীফুল শুরুতে দুই উইকেট নিয়ে আমাদের ছন্দও ধরে দিয়েছিল।’ বোলিংয়ে শুরুটা ভালো হলেও ব্যাটিংয়ে আবার তা নয়। হারের কারণ হিসেবে এটিকেও মাহমুদ দাঁড় করালেন কাঠগড়ায়, ‘রান তাড়ার বিষয়টি হলো, আমরা শুরুটা ভালো করতে পারিনি। এরপর আমি এবং আফিফ জুটি গড়ার চেষ্টা করেছি, কিন্তু ওদের বোলাররাও সত্যিই ভালো বোলিং করেছে।’

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ