সোমবার , ৬ নভেম্বর ২০১৭ | ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

প্রথম আঞ্চলিক ট্রি অলিম্পিয়াড: রাজশাহীর আদর্শ স্কুলে দশজন প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত

Paris
নভেম্বর ৬, ২০১৭ ৭:২২ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে বাংলাদেশ তথা বিশ্বের মধ্যে প্রথম আঞ্চলিক ট্রি অলিম্পিয়াড এর প্রাথমিক বাছায় পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ সোমবার সকাল ১১ ঘটিকায় রাজশাহীর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে আঞ্চলিক ট্রি অলিম্পিয়াড ২০১৭ এর প্রাথমিক বাছায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ সাদেকুল ইসলাম স্বপন।

বাছায় পর্বে অংশগ্রহণকারীদের বৃক্ষ ও পরিবেশ বিষয়ক উপস্থিত বক্তৃতা এবং ২০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে সর্বোচ্চ নম্বরধারী দশজন শিক্ষার্থীদেরকে ফাইনাল রাউন্ডের জন্যে নির্বাচন করা হয়।

বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৃক্ষ ও পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিসহ আগামীতে মননশীল প্রজন্ম তৈরীর লক্ষে সচেতনতা মূলক এই কর্মউদ্যোগ গ্রহণ করছে রাজশাহীর সামাজিক সংগঠন বরেন্দ্র শিক্ষা সংস্কৃতি বৈচিত্র্য রক্ষা কেন্দ্র (বিইসিডিপিসি) ও বেসরকারি উন্নয়ন গবেষনা প্রতিষ্ঠান বারসিক।

এ আঞ্চলিক ট্রি অলিম্পিয়াড নিয়ে নগরীর উপকণ্ঠে অবস্থিত আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছিল ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা। স্কুলের প্রায় তিন শতাধিক ছাত্রছাত্রীদের সকলেই স্বতফূর্ত ভাবে এ অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করে।

স্কুলের সহকারী শিক্ষক রবিউল ইসলাম বলেন, আয়োজিত এ অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ তথা বিশ্বের মধ্যে প্রথম। অলিম্পিয়াডের বাছায় পর্ব আমাদের স্কুলে অনুষ্ঠিত হওয়া আমরা গর্বিত। অলিম্পিয়াডের প্রশ্নগুলো করা হয়েছে বৃক্ষ ও পরিবেশ বিষায়ক জ্ঞানমূলক। যা শিক্ষার্থীদের পরবর্তীতে অনেক কাজে দিবে।

স্কুলের অন্য একজন সহকারী শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমান এ অলিম্পিয়াড সম্পর্কে বলেন, এটি নি:সন্ধেহে একটি ভালো উদ্দ্যেগ। প্রাণপ্রকৃতি ও পরিবেশ সর্ম্পকে যেমন শিক্ষার্থীদের জ্ঞান অর্জন করার সুযোগ করে দিচ্ছে তেমনি শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগীতার মনোভাব সৃষ্টি করছে। ফলে পরিবেশ প্রতিবেশ রক্ষায় তারা সচেতন হবে ।
আঞ্চলিক ট্র্রি অলিম্পিয়াড’র আয়োজনটা সমগ্রিক ভাবে ইতিবাচক একটি পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করে স্কুলের সহকারী শিক্ষক প্রশান্ত কুমার সিংহরায় বলেন, প্রতিটি স্কুলে এমন আয়োজন করা উচিৎ। এগুলো সমাজের মধ্যে পরিবশে প্রতিবেশ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করবে। শিক্ষার্থীরা পাঠ্যপুস্তুকের বাইরে শিক্ষালাভ করার সুযোগ পাবে। তারা সমাজের বাস্তবতা সম্পর্কে ধারণা পাবে। তিনি এমন আয়োজন করার জন্য অনুষ্ঠানের আয়োজকদের সাধুবাদ জানান এছাড়াও এমন উদ্যোগের পাশে থাকার আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।

এদিকে এমন উদ্যেগকে অনেক আগ্রহের সঙ্গে গ্রহণ করেছেন শিক্ষার্থীরাও। তারা পরিবশে ও পরিবেশের অপরিহার্য উপাদান বৃক্ষ সম্পর্কে জানতে পেরে অনেক আনন্দিত হয়েছেন। যা তাদের চেখেমুখে ও কথায় প্রকাশ পেয়েছে। রাজশাহীর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনীর শিক্ষার্থী সৈয়দা মুশফিকা বলেন, আমার খুব ভালো লেগেছে বিশ্বের মধ্যে প্রথম আয়োজিত এ অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করে। এ উদ্যোগটা সত্যিই প্রশংসনীয়। কারণ আমরা শিক্ষার্থীরা এ আয়োজনের মাধ্যমে পরিবেশ সম্পর্কে অনেক তথ্য জানতে পেরেছি। শিক্ষার্থীদের এসব তথ্য সচেতন সৃষ্টি করেছে বলেও মন্তব্য করেন এ অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণকারী এ শিক্ষার্থী।

আগামীতে এমন আয়োজন আরো বেশী বেশী করা হোক। আমারা মজা পেয়েছি, সেই সঙ্গে নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পেরেছি এমনটা বললেন ওই স্কুলের সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী দোলা। তার মতে আনন্দের মাধ্যমে শিক্ষা দিলে সকলেই স্টো গ্রহণ করতে আগ্রহী হয়।

কিছুটা ভিন্ন ভাবে এ অলিম্পিয়াড নিয়ে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করলেন ওই স্কুলের জিসান নামের একজন শিক্ষার্থী। জিসান বলেন, আমাদের পাঠ্যপুস্তকের বাইরেও বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করা দরকার। নতুন নতুন বিষয়ে আমাদের জানতে হবে যাতে আমরা সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারি। এক্ষেত্রে এমন আয়োজন প্রশংসার দাবিদার। কারণ আমার এ অলিম্পিয়াডের মাধ্যমে বৃক্ষ ও পরিবেশ সম্পর্কে অনেক তথ্য জানতে পারলাম।

অন্যদিকে রাজশাহী আর্দশ উচ্চ বিদ্যালয়ে এমন আয়োজন করায় গর্ববোধ করেছে স্কুলটির শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা। এক শিক্ষার্থী অত্যান্ত গর্বের সঙ্গে বলেন, আমি সত্যিই গর্ববোধ করছি। বিশ্বের মধ্যে প্রথম ট্রি অলিম্পিয়াড শুরু হয়েছে। রাজশাহীতে। আর সেই আয়োজনে আমাদের স্কুল অংশগ্রহণ করতে পেরেছে। আমি প্রত্যাশা করি আগামীতেও এমন আযোজন করা হবে। যাতে আমরা নতুন কিছু শিক্ষতে পারি।

এ আঞ্চলিক ট্রি অলিম্পিয়াডের আয়োজক কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং বরেন্দ্র শিক্ষা সংস্কৃতি ও বৈচিত্র্য রক্ষা কেন্দ্রের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শামীউল আলীম শাওন বলেন, আমাদের সংগঠন শিক্ষ সংস্কৃতি বৈচিত্র্য নিয়ে কাজ করে। সেই কাজের অংশ হিসেবেই এ ট্রি অলিম্পিয়াডের আয়োজন করা হয়েছে। যাতে বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৃক্ষ ও পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করার মাধ্যমে আগামীতে মননশীল প্রজন্ম তৈরী করা যায়। আমরা বরেন্দ্র অঞ্চল খ্যাত রাজশাহীর সিটি কর্পোরেশনসহ, তানোর, গোদাগাড়ী এবং পবা উপজেলার আগ্রহী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধারাবাহিকভাবে প্রাথমিক বাছায় পর্বের আয়োজন করবো। এখান থেকে নির্বাচিতদের নিয়ে একটি বড় প্রতিযোগীতার আয়োজন করবো সেখানেই সেরা নির্বাচিত করা হবে।

রাজশাহীর তালাইমারীস্থ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে আয়োজিত প্রাথমিক বাছায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এরশাদ আলী, প্রশান্ত কুমার সিংহরায়, রবিউল ইসলাম, সিদ্দিকুর রহমান, বরেন্দ্র শিক্ষা সংস্কৃতি বৈচিত্র্য রক্ষা কেন্দ্র (বিইসিডিপিসি)’র কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি জাওয়াদ আহমেদ রাফি, সাধারণ সম্পাদক উজ্জল হোসেন, আঞ্চলিক ট্রি অলিম্পিয়াড কমিটির রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সমন্বয়ক ও সভাপতি জিনাত-উন-নেসা, বিইসিডিপি’র প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং আঞ্চলিক ট্রি অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক শামীউল আলীম শাওন, বারসিক বরেন্দ্র অঞ্চলের প্রোগ্রাম অফিসার জাহিদ আলী, বিইসিডিপিসি’র সিটি ইউনিটের সভাপতি ইবনে সিনা জ্যোতি, সহ সভাপতি আব্দুস সোবাহানসহ বিইসিডিপিসি’র নেতৃবৃন্দ ও বারসিকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বাছায় পর্বে তিনশতাধিক অংশগ্রহণকারীদের বৃক্ষ ও পরিবেশ বিষয়ক উপস্থিত বক্তৃতা এবং ২০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে নবম শ্রেনী থেকে সর্বোচ্চ নম্বরধারী চারজন শিক্ষার্থী এবং সপ্তম শ্রেণী থেকে ছয়জন নিয়ে মোট দশজন শিক্ষার্থীদেরকে ফাইনাল রাউন্ডের জন্যে নির্বাচন করা হয়। নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা হলেন, নবম শ্রেণীর মো. পিয়াস, সৈয়দা মুশফিকা, তুহিন আহমেদ ও রিসা এবং সপ্তম শ্রেনীর জাওয়াদুল করিম জয়, মিম্মা আক্তার, মোসা. দোলা, মোসা. টিয়া খাতুন, মাহাবুবা ফেরদৌস ও নাসরিন সুলতানা। পরে নির্বাচিতদের হাতে আয়োজকদের পক্ষ থেকে স্কুলের শিক্ষকগণ ইয়েস কার্ড তুলে দেন।

উল্লেখ্য যে, ‘আঞ্চলিক ট্রি অলিম্পিয়াড-২০১৭’ টি গত ৩০ অক্টোবর নগরীর মেহেরচন্ডী উচ্চ বিদ্যালয়ে উদ্বোধন করা হয়। বরেন্দ্র অঞ্চল খ্যাত রাজশাহীর সিটি কর্পোরেশনসহ, তানোর, গোদাগাড়ী এবং পবা উপজেলার আগ্রহী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রাথমিক বাছাই পর্ব অনুষ্ঠিত হবে। এটি অক্টোবর ২০১৭ থেকে ১৫ জানুয়ারী ২০১৮ পর্যন্ত চলবে। জানুয়ারীর শেষে উপযুক্ত সময়ে ফাইনাল রাউন্ড অনুষ্ঠিত হবে। ট্রি অলিম্পিয়াড ২০১৭ দুটি ক্যাটাগরিতে প্রতিযোগীতা হবে। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত ‘ক’ ক্যাটাগরি এবং নবম থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত ‘খ’ ক্যাটাগরিতে শিক্ষার্থীগণ অংশগ্রহণ করতে পারবেন। ট্রি অলিম্পিয়াডে বিষেশজ্ঞ প্যানেল হিসেবে ভূমিকা পালন করবেন স্থানীয় স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ। ট্রি অলিম্পিয়াড ২০১৭ এর মিডিয়া পার্টনার হিসেবে ভূমিকা পালন করবে অনলাইন ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম বারসিক নিউজ ।

স/অ

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর