উপমহাদেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক আর নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক:

উপমহাদেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যক হাসান আজিজুল হক আর নেই (ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন)। সোমবার (১৫ নভেম্বর) রাত সোায়া ৯টার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অদূরে বিশ্ববিদালয় হাউজিং সোসাইটিতে (বিহাস) নিজ বাসভবন ‘উজান’- এ তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। তিনি এক ছেলে ও তিন মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক ড. আজিজুর রহমান শামীম বরেণ্য এই লেখকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য মঙ্গলবার সকালে বরেণ্য এই কথাসাহিত্যিকের মরদেহ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্ত্বরে রাখা হবে। এরপর বাদ যোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে নামাজে যানাজা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কবরস্থানে তাঁকে সমাহিত করা হবে।

জানা গেছে, দেশের বরেণ্য এই লেখক দীর্ঘদিন ধরে হৃদযন্ত্রের সমস্যার বাইরেও ফুসফুসে সংক্রমণ, ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্যহীনতাসহ বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন। সর্বশেষ তার শারীরিক অবস্থার অবণতি হলে গত ২১ আগস্ট এয়ার অ্যাম্বুলেন্সযোগে রাজশাহী থেকে তাকে ঢাকার জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তর করা হয়েছিল। সেখানে বেশ কিছুদিন চিকিৎসার পর গত ৯ সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে নিয়ে আসা হয়। তারপর থেকে নিজ বাড়িতেই তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার মৃত্যুতে রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার তাপু, সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহী-০২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশাসহ বিভিন্ন বিভিন্ন শিক্ষাবিদ, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ শোক প্রকাশ করেছেন। তারা মহান এই লেখকের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

উল্লেখ্য, হাসান আজিজুল হক ১৯৩৯ সালের ০২ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার যব গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৮ সালে এ কলেজ থেকে দর্শন শাস্ত্রে সম্মানসহ স্নাতক ডিগ্রি লাভ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৬০ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৭৩ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন বিভাগে অধ্যাপনা করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩১ বছর শিক্ষকতার পর ২০০৪ সালে তিনি অবসর নিয়েছেন। হাসান আজিজুল হক উপন্যাস, ছোটগল্প, নাটক ছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে বিশ্লেষণধর্মী রচনা লিখে দেশের সাহিত্যাঙ্গনে নিজের অবস্থান মজবুত করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসরে যাওয়ার পর থেকেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অদূরে বিশ্ববিদালয় হাউজিং সোসাইটিতে (বিহাস) নিজ বাড়ি ‘উজান’-এ লেখালেখি নিয়ে মগ্ন ছিলেন হাসান আজিজুল হক।

এএইচ/এস