প্যারিসে শিক্ষককে গলা কেটে হত্যা, ম্যাক্রঁ বললেন ‘ইসলামি সন্ত্রাসী হামলা’

ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে একজন শিক্ষককে গলা কেটে হত্যা করার ঘটনাকে ‘ইসলামি সন্ত্রাসী হামলা’ বলে অভিহিত করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ।

জানা গেছে, প্যারিসের উত্তর-পশ্চিমের শহরতলীতে স্থানীয় সময় শুক্রবারের ওই ঘটনার কিছুক্ষণ পরই পুলিশের গুলিতে নিহত হয় হামলাকারী। নিহত ব্যক্তি তার ছাত্রদের নবী সম্পর্কে বিতর্কিত কার্টুন দেখিয়েছিলেন।

স্থানীয় সময় বিকাল ৫টার দিকে একটি স্কুলের সামনে হামলার ঘটনা ঘটে। ঘটনা তদন্ত করছে সন্ত্রাস বিরোধী পুলিশ বিভাগ।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেছেন, ওই শিক্ষককে হত্যা করা হয়েছে। কারণ তিনি মত প্রকাশের স্বাধীনতার শিক্ষা দিচ্ছিলেন। নিহত ব্যক্তির নাম এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

গ্রেফতারের চেষ্টার সময় পুলিশের গুলিতে মারা যায় হামলাকারী। তার সম্পর্কেও বিস্তারিত তথ্য জানায়নি ফ্রান্স পুলিশ।

ঘটনা সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে?

কনফা-সাঁত-ওনোরিন এলাকায় বড় আকারের একটি ছুরি হাতে নিহত ব্যক্তির ওপর হামলা চালিয়ে তাকে গলা কেটে হত্যা করে হামলাকারী। এরপর হামলাকারী পালানোর চেষ্টা করে। তবে স্থানীয়রা বিষয়টি পুলিশকে জানানোর ফলে তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।

পুলিশ সদস্যরা চিৎকার করে হামলাকারীকে আত্মসমর্পণ করতে বললে সে উল্টো পুলিশকে হুমকি দেয়। এক পর্যায়ে পুলিশ হামলাকারীকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই সে মারা যায়।

ফ্রান্সের পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে করা এক টুইটে স্থানীয়দের ওই অঞ্চল এড়িয়ে চলাচল করতে অনুরোধ করা হয়েছে।

নিহত ব্যক্তির পরিচয়

দেশটির লে মঁন্ড পত্রিকার তথ্য অনুযায়ী নিহত ব্যক্তি ইতিহাস ও ভূগোলের শিক্ষক ছিলেন। শার্লি হেবদো ম্যাগাজিন নবীকে নিয়ে ছাপা হওয়া যেসব কার্টুন মুসলিমদের ক্ষোভের কারণ হয়েছিল, ওই ধরনের কার্টুন চিত্র প্রকাশের সাথে বাক স্বাধীনতার সম্পৃক্ততা নিয়ে ক্লাসে ছাত্রদের সাথে আলোচনা করেছিলেন।

ফরাসি মিডিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, শার্লি হেবদো নবীর যেসব কার্টুন ছেপেছিল, সেগুলোর একটি বা একাধিক কার্টুন দেখিয়ে ছাত্রদের সাথে আলোচনা করার জন্য এ মাসের শুরুর দিকে কয়েকজন মুসলিম অভিভাবক স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগও করেছিলেন।

২০১৫ সালে শার্লি হেবদোর অফিসে হামলায় প্রখ্যাত কার্টুনিস্টসহ ১২ জন মারা যাওয়ার পর থেকে ফ্রান্সে ইসলামপন্থী জঙ্গিদের একাধিক হামলা হয়েছে।

কী প্রতিক্রিয়া হচ্ছে ফ্রান্সে?

শুক্রবার ফ্রান্সের জাতীয় সংসদের ডেপুটিরা সংসদে দাঁড়িয়ে নিহতের প্রতি শোক প্রকাশ করেন। এই হামলাকে তারা ‘নৃশংস সন্ত্রাসী হামলা’ হিসেবে আখ্যায়িত করছেন।

ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড ডারমানিন মরক্কোতে তার সফর সংক্ষিপ্ত করে জরুরি ভিত্তিতে ফ্রান্সে ফিরে যাচ্ছেন। ফ্রান্সের শিক্ষামন্ত্রী জ্যঁ-মাইকেল ব্ল্যাঁকোয়ের টুইট করেছেন, একজন শিক্ষকের ওপর হামলা পুরো ফরাসি প্রজাতন্ত্রের ওপর হামলার শামিল।

 

সূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন