পৌরসভার নিয়োগ বিধিমালা অনুযায়ী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, মালি, কেয়ারটেকার, পুরোহিত ও ডোম ছাড়া অস্থায়ী কর্মী নিয়োগের বিধান নেই। কিন্তু আইন না মেনেই মেয়রদের খেয়ালখুশিতে বিভিন্ন পৌরসভাতে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়। তাই দেশের ৩২৮টি পৌরসভায় স্থায়ী কর্মীর চেয়ে অস্থায়ী কর্মীর সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ। সম্প্রতি স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে এমন নিয়োগ বন্ধে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নিদের্শনায় বলা হয়, পৌরসভার সাংগঠিনক কাঠামো অনুসারে ৬টি পদে (সুইপার, সুইপার সুপারভাইজার, কেয়ারটেকার, মৌলভী, পুরোহিত ও ডোম) চুক্তিভিক্তিক নিয়োগের সুযোগ রয়েছে। অথচ বিভিন্ন পৌরসভায় খবর নিয়ে জানা যায়, পরিচ্ছন্ন কর্মী ছাড়াও বিভিন্ন স্থায়ী পদের বিপরীতে প্রচুর অস্থায়ী কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়। যা বিধি বহির্ভুত। তাছাড়া আউটসোর্সিয়ের মাধ্যমে মাত্রাতিরিক্ত অস্থায়ী কর্মচারী নিয়োগ দেয়ার ফলে দেশের অধিকাংশ পৌরসভায় স্থায়ী কর্মচারীদের বেতন ভাতা প্রদানে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে এবং উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ব্যহত হচ্ছে।
এতে আরো বলা হয়, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ না করা এবং পৌরসভার অনুমোদিত সাংগঠনিক কাঠামোর অতিরিক্ত জনবল ছাটাই করার জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগ তিনটি চিঠি পাঠানো হলেও নিয়োগ বন্ধ হয়নি। জারিকৃত চিঠির পর নিয়োগ বন্ধের পাশাপাশি নিয়োগকৃত অস্থায়ী কর্মচারীদের নিয়োগ বাতিল করে স্থানীয় সরকার বিভাগকে জানাতে হবে। এছাড়াও স্থায়ী পদের নিয়োগ পাওয়া এবং কাঠামো অনুযায়ী অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়াদের বেতন ছাড়া কারো বেতন দেওয়া যাবে না। যেসকল পৌরসভা এসব বিষয়গুলো মানবে না তাদের সকল প্রকার উন্নয়ন বরাদ্দ এবং উন্নয়ন প্রকল্পের কার্যক্রম বন্ধ করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অস্থায়ী কর্মী নিয়োগের সংশ্লিষ্টরা জানান, কোন সময়, কাকে কী কারণে নিয়োগ দেওয়া হয়, সেটি মেয়র ছাড়া আর কেউ জানে না। বিজ্ঞপ্তি তো দূরের কথা, পৌরসভার মাসিক সভাতেও কর্মী নিয়োগের বিষয়টি পাস করার প্রয়োজন মনে করেন না। আর নিয়োগ পাওয়া বেশির ভাগ অস্থায়ী কর্মী নিয়মিত অফিসে আসেন না। অথচ তাঁদের বেতনের বোঝা বইতে হয় পৌরসভাকে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অস্থায়ী কর্মী নিয়োগের বিষয়ে কোনো বিধিমালা না থাকায় মেয়ররা তাঁদের খেয়ালখুশিমতো নিয়োগ দিতে পারেন। নতুন মেয়ররা দায়িত্ব পেয়ে রাজনৈতিক বিবেচনায় নিজের কাছের ও দলীয় লোকজনকে নিয়োগ দেন। অনেক ক্ষেত্রে এসব নিয়োগে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগও পাওয়া যায়। স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে পৌরসভাগুলোতে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ বন্ধ করতে বলা হলেও, সেটি মানা হচ্ছে না।
সূত্রঃ কালের কণ্ঠ