পুরোনো সাড়ে ৫০০ মামলা কার্যতালিকায়

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

পুরোনো মামলা নিষ্পত্তি করতে প্রধান বিচারপতির নির্দেশের পর সাড়ে পাঁচ শতাধিক মামলা শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আনা হয়েছে। এর মধ্যে ৩০ বছর আগের কয়েকটি মামলাও রয়েছে।

 

এ উদ্যোগের ফলে বিচার বিভাগ গতিশীল ও বিচারের দীর্ঘসূত্রতা দূর হবে বলে মনে করছেন আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা।

 

সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে জানা যায়, উচ্চ আদালতে মামলা আসার পর বছরের পর বছর পার হয়ে যায় কিন্তু মামলার নিষ্পত্তি হয় না। আইনজীবীর গাফলতি, মামলার বাদী বা বিবাদীর সময়ক্ষেপণ এবং আদালতের কিছু অসাধু কর্মকর্তার নথি গায়েবের কারণে বন্ধ রয়েছে শত শত মামলার কার্যক্রম। ঝুলে আছে মামলার সঙ্গে জড়িত আনেকের ভাগ্য।

 

তবে আজ রোববার সকালে প্রধান বিচারপতি ২০১০ সালের আগের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। তার পরই এসব মামলা পুনরুজ্জীবিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রেজিস্ট্রার অফিস থেকে তল্লাশি করে প্রায় পাঁচ শতাধিক মামলা খুঁজে বের করা হয়েছে। যার মধ্যে ১৯৭৯ ও ১৯৮১ সালের চট্টগ্রাম জেলার দুটি মামলা খুঁজে পাওয়া গেছে। হাইকোর্টের ১৭টি বেঞ্চে এসব মামলা শুনানির জন্য ভাগ করে দেওয়া হয়েছে।

 

সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার অফিসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭৯ সাল থেকে শুরু করে ২০১০ সাল পর্যন্ত ৫৩৩টি পুরোনো মামলা খুঁজে বের করা হয়েছে। এসব মামলা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুনানির জন্য হাইকোর্টের ১৭টি বেঞ্চের কার্যতালিকায় আনা হয়েছে।

 

এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার (বিচার ও প্রশাসন) সাব্বির ফয়েজ জানান, বহু বছর ধরে আনেক গুরুত্বপূর্ণ দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলা পড়ে আছে। বিভিন্ন কারণে এসব মামলা শুনানির উদ্যোগ নেয়নি কেউ। এতে করে অনেক সময় বাদী-বিবাদীরাও আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। তাই ২০১০ সালের আগের পুরোনো মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। আজ  একদিনে ৫৩৩টি পুরনো মামলা খুঁজে বের করা হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে আরো কয়েকশ মামলা খুঁজে বের করে নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করা হবে।

 

সুপ্রিম কোর্টের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার আরো জানান, এ নির্দেশ অনুসারে আজ থেকে বিচারপতি মিজানুর রহমান ভূঞা, বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী, বিচারপতি মো. আবু তারিকের বেঞ্চসহ হাইকোর্ট বিভাগের বিভিন্ন বেঞ্চে পুরাতন মামলা কার্যতালিকায় উঠেছে। পর্যায়ক্রমে সব মামলা কার্যতালিকায় আসবে।

 

এ দিকে প্রধান বিচারপতির এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা।

 

এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরশেদ বলেন, প্রধান বিচারপতি একটি মহৎ উদ্যোগ নিয়েছেন। এসব উদ্যোগের ফলে মামলাজট কমে আসবে। বিচারপ্রার্থীরা ও আশাবাদী হবে।

 

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করে আসছি মামলাজট কমানোর জন্য। এ বিষয়ে অতীতে আমরা অনেকবার সাবেক প্রধান বিচারপতিদের কাছে লিখিত আবেদন দিয়েছিলাম। কিন্তু কাজ হয়নি। বর্তমান প্রধান বিচারপতির উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছি। আশা করি, এর ফলে বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি কমে আসবে।

সূত্র: এনটিভি