পীরগঞ্জে হামলার ‘মূল হোতা’ সৈকত ছাত্রলীগ নেতা

রংপুরের পীরগঞ্জে হিন্দুপাড়ায় হামলা-অগ্নিসংযোগের ঘটনায় র‍্যাবের হাতে আটক সৈকত মণ্ডল (২৪) ছাত্রলীগ নেতা। তিনি কারমাইকেল কলেজের দর্শন বিভাগ ছাত্রলীগের কমিটির ১নম্বর সহসভাপতি। শুক্রবার (২২ অক্টোবর) ঢাকার কাছে টঙ্গী থেকে সৈকত মণ্ডল ও তার সহযোগী রবিউল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

২০১৭ সালের ৮ আগস্ট ওই কমিটির অনুমোদন দেন কলেজ ছাত্রলীগ কমিটির সভাপতি সাইদুজ্জামান সিজার ও সাধারণ সম্পাদক জাবেদ আহমেদ। ঘটনার পর ১৮ অক্টোবর শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে ছাত্রলীগের কারমাইকেল কলেজ শাখা থেকে অব্যাহতি দেওয়ায় হয়। কলেজ শাখার সভাপতি ও সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সৈকতকে আটকের পর আজ শনিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলন করে র‍্যাব।

র‍্যাব জানায়, ফেসবুকে বিভিন্ন ধরনের উসকানিমূলক মন্তব্য এবং মিথ্যা পোস্টের মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে স্থানীয় লোকজনকে উত্তেজিত করেন সৈকত মণ্ডল। আর ঘটনার রাতে বটেরহাট জামে মসজিদ থেকে মাইকিংয়ের মাধ্যমে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে স্থানীয় লোকজনকে জড়ো করেন তার সহযোগী রবিউল ইসলাম (৩৬)। সৈকতই গ্রেপ্তারকৃত রবিউল ইসলামকে মাইকিং করে লোকজন জড়ো করতে নির্দেশনা দিয়েছিলেন। এরপরই হামলা চালানো হয় রামনাথপুর ইউনিয়নের বড়করিমপুর কসবা জেলে পল্লীতে।

কে এই সৈকত মণ্ডল?

সৈকত মণ্ডলের বাবার নাম রাশেদুল ইমলাম। তার বাড়ি রামানাথপুর ইউনিয়নের চেরাগপুর গ্রামে। তিনি কারমাইকেল কলেজের দর্শন বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র। ছাত্রলীগের দর্শন বিভাগ শাখার সহসভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। এ ঘটনার পরের দিন ১৮ অক্টোবর তাকে ছাত্রলীগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে কারমাইকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগ।

kalerkantho

স্থানীয়দের অভিযোগ, সৈকত মণ্ডল ছাত্র শিবির থেকে ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশ করে। সৈকত মণ্ডল নামে তার ফেসবুক আইডি থেকে উসকানিমূলক পোস্ট দিলেও পরে তিনি তার আইডির নাম ইংরেজিতে রূপান্তর করেন।

এর আগেও সৈকত ধর্মীয় উসকানিমূলক পোস্ট দিয়েছেন। এ নিয়ে তার সহপাঠীরা ক্ষুব্ধ ছিলেন।

ছাত্রলীগের কামাইকেল কলেজ শাখার সভাপতি সাইদুজ্জামান সিজার বলেন, সৈকত আগে থেকেই ফেসবুকে উসকানিমূলক পোস্ট দিয়ে আসছিল। সর্বশেষ পীরগঞ্জের ঘটনাটি আমাদের নজরে আসায় মহানগর ছাত্রলীগের পরামর্শক্রমে তাকে বহিষ্কার করা হয়।

রবিউল ইসলাম পাশের মসজিদের ইমাম

হামলার আগে যে মসজিদ থেকে মাইকিং করে সকলকে একত্রিত হতে বলা হয়, গ্রেপ্তার রবিউল ইসলাম সেই মসজিদের ইমাম। তিনি একই এলাকার খেজমতপুর গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের ছেলে। প্রায় ১২ বছর থেকে তিনি ওই মসজিদে ঈমামের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি বটেরহাট মাদরাসা থেকে দাখিল ও দুরামিঠিপুর আলিম মাদরাসা থেকে আলিম পাস করেন।

রবিউল ইসলাম ঘটনার দিন মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে সকলকে একত্রিত হতে বলেন। তার ঘোষণার পরেই অসংখ্য মানুষ একত্রিত হয়ে মাঝাপাড়ায় হামলা চালান। হামলায় রবিউল ইসলাম নিজেও অংশগ্রহণ করেন।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ