পিবিআইর তদন্ত প্রতিবেদন না পাওয়ায় হাইকোর্টের অসন্তোষ

নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর খিলগাঁও থানার এক মামলায় প্রকৃত আসামির পরিবর্তে নোয়াখালীর মোহাম্মদ জহির উদ্দিনকে আসামি করার অভিযোগ তদন্ত করে দুইমাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে পিবিআইকে নির্দেশ দিলেও গত দেড়বছরেও ওই প্রতিবেদন পায়নি হাইকোর্ট। এ অবস্থায় হাইকোর্ট অসন্তোষ প্রকাশ করে এবিষয়ে আগামী ২২ আগস্টের মধ্যে অগ্রগতি জানাতে রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।

বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ নির্দেশ দেন। জহির উদ্দিনের আইনজীবীর করা এক আবেদনে এ আদেশ দেন আদালত। আদালতে আবেদনকারীপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।

এর আগে হাইকোর্টের একই বেঞ্চ গতবছর ১০ মার্চ এক আদেশে ঢাকা মূখ্য মহানগর হাকিম আদালত থেকে জহির উদ্দিনের বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কার্যকারিতা স্থগিত করেন। একইসঙ্গে নোয়াখালীর ওই জহির উদ্দিন মামলার যথাযথ আসামি কীনা তা তদন্ত করে দুইমাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেন।

এ অবস্থায় ওই রিট আবেদনটি আদালতে শুনানির জন্য উপস্থাপিত হলে আদালত রাষ্ট্রপক্ষের কাছে জানতে চান পিবিআই-এর প্রতিবেদন পাওয়া গেছে কীনা? জবাবে রাষ্ট্রপক্ষ না-সূচক জবাব দিলে আদালত বলেন, ২০১৩ সালের মামলা। পিবিআইকে তদন্ত করে দুইমাসের মধ্যে একটি রিপোর্ট দিতে গতবছর ১০ মার্চ একটি আদেশ দিয়েছিলাম। কিন্তু আজও তা পাওয়া গেলো না। এতদিনেও পাওয়া গেল না কোনো রিপোর্ট? মি. ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল, আপনি খোঁজ নিয়ে রবিবারের মধ্যে অগ্রগতি জানাবেন। ওইদিন এবিষয়ে পরবর্তী আদেশ দেওয়া হবে।

এবিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমা জানান, ইতিমধ্যেই এবিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেছি।

অ্যাডভোকেট শিশির মনির জানান, রাজধানীর খিলগাঁও থানায় ২০১৩ সালের ৯ এপ্রিল দায়ের হওয়া মামলায় (নম্বর-১২(৪)১৩) পুলিশ নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের আহসান উল্লাহ’র ছেলে মোদাচ্ছের আনছারীকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশের হাতে আটক হবার পর মোদাচ্ছের তার নাম-ঠিকানা গোপন করে নিজেকে নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার মোহাম্মদ আব্দুল কাদেরের ছেলে মোহাম্মদ জহির উদ্দিন নামে পরিচয় দেয়। এরপর ওইবছরের ৩১ অক্টোবর মোদাচ্ছের জামিনে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে পালিয়ে যায়। সে জহির উদ্দিন নামেই আদালতে জামিনের আবেদন করেছিল।

এদিকে পুলিশ তদন্ত শেষে জহির উদ্দিনসহ অপরাপর আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ৮ এপ্রিল অভিযোগপত্র দেয়। এরপর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত ২০১৭ সালের ১১ অক্টোবর জহিরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এ অবস্থায় জহির উদ্দিন সংশ্লিষ্ট কারা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে মূল আসামী মোদাচ্ছের আনছারীর ছবি এবং শারীরিক বর্ণনাসহ বিভিন্ন তথ্যাদি সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে জহির উদ্দিন তার বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন করেন।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ