পিছিয়েই যাচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ!

সব কিছু ঠিক থাকলে আগস্টেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরার কথা আছে অস্ট্রেলিয়ায়। সে দেশের ক্রিকেট বোর্ড ইতিমধ্যে ২০২০-২১ মৌসুমের পূর্ণাঙ্গ ক্রিকেট সূচিও প্রকাশ করেছে। একই সঙ্গে এই ফুটনোটও জুড়ে দিয়েছে যে কভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে এই সূচি বদলাতেও পারে। তাই ৯ আগস্ট জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার গ্রীষ্ম মৌসুম শুরু হচ্ছেই, সে নিশ্চয়তাও নেই। এটি তবু দ্বিপক্ষীয় সিরিজ। একটি দলকে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য নিরাপত্তা দিয়ে নিয়ে গেলেই হয়। কিন্তু ১৮ অক্টোবর থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায় নির্ধারিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী দলের সংখ্যাই ১৬টি। এই দলগুলোর খেলোয়াড়, সাপোর্ট স্টাফ ও কর্মকর্তাদের বিশাল বহরকে সংক্রমণ থেকে বাঁচানোর চ্যালেঞ্জও যখন অপেক্ষায়, তখন বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস পরিস্থিতিও উদ্বেগ বাড়িয়ে চলেছে। এই অবস্থায় কুড়ি-বিশের বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে তাই শঙ্কার কথাই শোনা গেল ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) প্রধান নির্বাহী কেভিন রবার্টসের মুখে।

যে শঙ্কার কথা উচ্চারিত হচ্ছিল আরো কয়েক দিন আগে থেকেই। বিশেষ করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছিল যে এই আসরটি পিছিয়ে ২০২২ সালের অক্টোবর-নভেম্বরে চলে যাচ্ছে। যদিও এই খবরকে উড়িয়ে দিয়ে আইসিসি দাবি করেছিল, নির্ধারিত সময়ে আসরটি আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়েই এগোচ্ছে তারা। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য গত পরশু বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থার সভাও বসেছিল। যদিও সিদ্ধান্ত নেওয়ার দিনক্ষণ ১০ জুন পর্যন্ত পিছিয়ে দিয়েই শেষ হয়েছে সভা। যে সভায় আয়োজক সিএ-রও প্রতিনিধিত্ব ছিল। সভার পরদিনই এর প্রধান নির্বাহী কেভিন রবার্টস যা বলেছেন, তাতে সংবাদমাধ্যমে গত কিছুদিন ধরে পরিবেশিত হয়ে আসা খবরের মিলও আছে। শেষ পর্যন্ত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নির্ধারিত সময়ে আয়োজনে যে বড় রকমের ঝুঁকিই দেখছেন খোদ রবার্টস!

এক ভিডিও বার্তায় এটি আয়োজনে আশাবাদ ব্যক্ত করার পাশাপাশি অনিশ্চয়তার দিকটিও দেখিয়ে রেখেছেন তিনি, ‘অক্টোবর-নভেম্বরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে আমরা সব সময়ই আশাবাদী। কিন্তু এটিও আমাদের স্বীকার করতে হবে যে নির্ধারিত সময়ে আসরটি আয়োজন করার মধ্যে বড় ধরনের ঝুঁকিও থেকে যাচ্ছে।’ এই অক্টোবর-নভেম্বরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন করা সম্ভব না হলে কখন হবে সেটি? পরবর্তীতে আয়োজনের জন্য রবার্টস দেখিয়েছেন দুটি বিকল্প সময়, ‘সম্ভাব্য একটি সময় হতে পারে ফেব্রুয়ারি-মার্চ (২০২১ সালের) কিংবা পরের বছরের (২০২২ সালের) অক্টোবর-নভেম্বর।’ আগামী ফেব্রুয়ারি-মার্চে না করতে পারলে এটি আরো অন্তত দেড় বছর পিছিয়ে যাবে নিশ্চিতভাবেই। কারণ ২০২১ সালের অক্টোবর-নভেম্বরে ভারতে নির্ধারিত আছে আরেকটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এই অক্টোবর-নভেম্বরে যদি সত্যিই না হয় আসরটি, তাহলে একই সময়ে স্থগিত হয়ে থাকা ভারতের এই মৌসুমের আইপিএলের ‘জানালা’ও খুলে যেতে পারে। অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ ২০২২ সালে পিছিয়ে যাওয়া এবং এই বছর একই সময়ে আইপিএল হওয়ার খবরও অনেক দিন থেকেই বাতাসে উড়ছে। আর আইসিসির বোর্ড সভার পর দিন সিএ প্রধান নির্বাহীর বক্তব্য যেন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কী হতে যাচ্ছে, সে আভাসও দিয়ে দিল। সভায় অংশ নেওয়া বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) অবশ্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ভবিষ্যৎ নিয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য নেই এখনো। তবে একটি সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ক্রিকেট প্রশাসনও চলতি বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখছে না। আয়োজক দেশই যেখানে এত বড় আসর আয়োজনে ঝুঁকি দেখছে, সেখানে অন্যদেরও নিরাপদ মনে করার কোনো কারণ নেই। তাই একের পর এক দ্বিপক্ষীয় সিরিজ স্থগিত হয়ে যাচ্ছে যখন, তখন নির্ধারিত সময়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজনের সম্ভাবনাও ক্রমেই ক্ষীণ হয়ে আসছে।

 

সুত্রঃ কালের কণ্ঠ