পারাবত-১১ লঞ্চে সেই নারী হত্যায় সন্দেহভাজন হত্যাকারী গ্রেপ্তার

বরিশাল-ঢাকা রুটের এমভি পারাবত-১১ লঞ্চের কেবিনে জান্নাতুল ফেরদৌস লাবনী নামের নারীকে হত্যার ঘটনায় তাঁর কথিত স্বামী মনিরুজ্জামান চৌধুরীকে (৩৪) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিকেশন (পিবিআই)।

গতকাল মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকার মীরপুর ১ নম্বর দারুস সালাম এলাকার প্রিন্সিপ্যাল আবুল কালাম রোডের সরকারি কোয়ার্টার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার মনিরুজ্জামান গাজীপুরের কাবাসিয়া এলাকার আব্দুস শহীদের ছেলে। তিনি তার বাবার সঙ্গে ওই কোয়ার্টারে বসবাস করতেন।

আজ বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় বরিশাল নগরীর রুপাতলীর উকিলবাড়ি সড়কে অবস্থিত পিবিআই কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির। গ্রেপ্তার অভিযানে সহায়তা করেন ঢাকা (উত্তর) পিবিআই সদস্যরা।

পিবিআই-এর পুলিশ সুপার জানান, গত সোমাবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে বরিশাল নদীবন্দরে অবস্থানরত পারাবত-১১ নামের লঞ্চের ৩৯১ নম্বর সিঙ্গেল কেবিন থেকে অজ্ঞাতপরিচয় নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। লঞ্চের কেবিনবয় পরিচ্ছন্নতা কাজে কেবিনে গিয়ে দরজা খোলা অবস্থায় ওই নারীর মৃতদেহ দেখতে পান। খবর পেয়ে  নৌপুলিশক মরদেহ উদ্ধার করে তা শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরাতহাল ও অন্যান্য আলামতের ভিত্তিতে বিষয়টি হত্যাকাণ্ড বলে নিশ্চিত হওয়া যায়।

এদিকে, ওই হত্যার ঘটনায় অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী  বাহিনীর সঙ্গে পিবিআই তদন্তে নেমে জানতে পারেন ওই নারীর নাম জান্নাতুল ফেরদৌস লাবনী। তাঁর গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের ভাঙা থানার আদমপুর এলাকায়। যদিও ঢাকার মিরপুরের পল্লবীতে বসবাস করতেন তিনি।

পুলিশ সুপার আরো জানান, লঞ্চের সিসি টিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ওই নারীর সঙ্গে লঞ্চের কেবিনে আসা ব্যক্তির সন্ধানে নামে পিবিআই। একপর্যায়ে শনাক্ত হওয়া ব্যক্তিকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে মিরপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে লাবনীর ব্যবহৃত ওড়না, মোবাইল ও ব্যাগসহ বিভিন্ন আলামত উদ্ধার করা হয়।

আসামি মনিরুজ্জামান চৌধুরী জানান তারা স্বামী স্ত্রী। লঞ্চযোগে রাতে বরিশাল যাওয়ার পথে কেবিনে তাদের ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে লবনীকে হত্যা করেন তিনি। এর পর লঞ্চটি বরিশালে পৌঁছালে কৌশলে পালিয়ে বাসযোগে ঢাকা চলে যান মনিরুজ্জামান।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তার মরিরুজ্জামান রাইড শেয়ারের চালক ছিলেন। এটি তার তৃতীয় বিয়ে যা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

ব‌রিশাল সদর নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, এ ঘটনায় তাঁরা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। গ্রেপ্তার মনিরুজ্জামানকে পুলিশের  হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ