পাথর আমদানিতে সম্ভাবনার দুয়ার খুলেছে হরিয়ান রেলস্টেশনে

শাহিনুল আশিক:


খুব সকালেই শুরু হয় কর্মযজ্ঞ। চলে বিকেল পর্যন্ত। এক সময়ের মানবশূন্য স্টেশনটি কর্মচাঞ্চল্যে ভরে উঠেছে। রাজশাহী হরিয়ান স্টেশনে কর্মচাঞ্চল্য বাড়িয়েছে প্রতিবেশী দেশ থেকে পাথর আমদানি। এই স্টেশনে মালবাহী বগিতে পাথর নিয়ে আসা হয়। এতে করে প্রায় অর্ধশত মানুষের কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।



জানা গেছে, বেশ কিছুদিন থেকে হরিয়ান স্টেশনে ট্রেনের মালবাহী বগিতে ভারত থেকে পাথর আনা হচ্ছে। এতে সময় ও খরচ দুই কমেছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। তারা জানায়, ট্রাকের চেয়ে ট্রেনে পাথর আমদানিতে খরচ কম। আর রেলপথ ভালো থাকায় সময়ও কম লাগে। এতে করে ব্যবসায়ীরা উপকৃত হচ্ছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন ঠিকাদরি প্রতিষ্ঠান পাথর নিয়ে আসেন ভারত থেকে। তারা ভবন ও সড়ক নির্মাণের কাজে ব্যবহার করে থাকেন। তবে ভবনের চেয়ে সড়ক নির্মাণ ও সংস্কারের কাজে বেশি ব্যবহার হয় পাথর। হরিয়ান স্টেশনে আসার পরে রাজশাহী বিভাগের বাইরেও বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ ও সংস্কার কাজের জন্য এখান থেকে নিয়ে যায় পাথর।

পাথর ভারত থেকে বেশ কয়েকটি স্টেশন হয়ে রাজশাহীর হরিয়ানে আসে। এর মধ্যে চাঁপানবাবগঞ্জের রহনপুর, খুলনার দর্শনা, দিনাজপুর, বিরোইল রয়েছে। এই সকল বন্দর হয়ে দেশে প্রবেশ করে পাথর ভরা বগিগুলো। প্রতি চালানে পাথর বোঝায় ৪২টি বগি থাকে। প্রতিটি বগিতে ৫৫ থেকে ৬০ টন পাথর থাকে বলে জানা গেছে।

পাথর আমদানিকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কবির হোসেন জানান, ভারত থেকে ট্রেনে পাথর আমদানি করায় কমেছে পরিবহন খরচ ও সময়। এতে সরকার ও রেলওয়ে পাচ্ছে ট্যাক্স-ভাড়াও। শুধু তাই নয়, এই এলাকার মানুষের হয়েছে কাজের সুযোগ।

তিনি আরও বলেন, প্রতি চালানে ৪২টি করে মালবাহী বগি আসে দেশে। এতে সরকারকে ট্যাক্স দিতে হয় ১৭ লাখ ৫ হাজার ১৯৯ টাকা। আর বাংলাদেশ রেলওয়ে শুধু তাদের ইঞ্জিনে রহনপুর স্টেশন থেকে বগিগুলো হরিয়ান স্টেশনে পৌঁছে দেবে তাতেও আলাদা ভাড়া প্রদান করতে হয়। এতে রেলওয়েকে ভাড়া বাবদ ৯ লাখ ৫৮ হাজার ৭৭৮ টাকা পরিশোধ করতে হয়।

তিনি আরও বলেন, বহনপুর থেকে হরিয়ান স্টেশন পর্যন্ত রেলের ভাড়া প্রায় ১০ লাখ টাকা। এই ভাড়া বেশি হয়ে যায় ব্যবসায়ীদের কাছে। সরকার যদি এই ভাড়াটা কমায়, তাহলে আরও অনেকেই এই ব্যবসায় ঝুঁকবে।
কয়েকজন শ্রমিক জানায়, অধিকাংশ সময় মাসে পাথরের চালান একবার আসে। কোনো কোনো মাসে দুইবারও আসে। এই স্টেশনে আমদানি-রফতানি বেশি হলে তাদেরসহ অন্য মানুষের প্রতিদিন কাজের সুযোগ সৃষ্টি হতো।

শ্রমিক সরদার রফিকুল ইসলাম জানায়, প্রতিটি বগির পাথর নামাতে ১২ জন শ্রমিক কাজ করে। এছাড়া মালবাহী ট্রেন আসলে ৫০ জনের বেশি শ্রমিক কাজে লাগে। এখন মাসে কখনো একবার, কখনো দুইবার পাথর নিয়ে আসে। পাথর নিয়ে আসা গাড়ির সংখ্যা বাড়লে আরও মানুষের কাজের সুযোগ হবে বলে জানান তিনি।

স/আ