পত্নীতলায় প্রধানমন্ত্রী বরাবর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর স্মারকলিপি প্রদান

পত্নীতলা প্রতিনিধি :

আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষ্যে নওগাঁর পত্নীতলায় রোববার বেলা ১১টায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নেতৃবৃন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারিরীক ভাবে অসুস্থ্য থাকায় তাঁর পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) সানজিদা সুলতানা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির কোষাধ্যক্ষ সুধীর তির্কী, নওগাঁ জেলা উরাও স্টুডেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের (নসা) সভাপতি জতিন টপ্য, পত্নীতলা পারগানা বাইসির সভাপতি লুইস সরেন, বিএসডিও’র প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর আবু হেনা মোহাম্মদ ফিরোজসহ অন্যান্য আদিবাসী নেতৃবৃন্দ।

প্রদত্ত স্মারলিপি সূত্রে জানা গেছে ২০১১ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী নওগাঁ জেলায় ১ লাখ ১৬ হাজার ৭শত ৩৬ জন আদিবাসীর বাস। তবে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নেতৃবৃন্দের মতে প্রকৃতপক্ষে নওগাঁ জেলায় প্রায় ২লাখ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বাস। এর মধ্যে শুধু পত্নীতলা উপজেলায় প্রায় ৩৫ হাজার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী বাস করছে। স্মারকলিপির মাধ্যমে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নেতৃবৃন্দ দাবীসমুহ প্রধানমন্ত্রীর নিকট তুলে ধরেন এবং বাস্তবায়নের জন্য উদাত্ত আহবান জানান।

দাবিগুলো হলো- আদিবাসীদের আদিবাসী হিসাবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া, সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠন করা, খাস জমি ও জলাশয় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আদিবাসীদের নামে পত্তন ও লীজ প্রদান করা, সমতলের আদিবাসীদের শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসিক শিক্ষার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, আদিবাসী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ধরণের বৃত্তির ব্যবস্থা চালু করা যাতে পরিবারের উপর কোন চাপ না পড়ে, স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ভর্তির কোটা নিশ্চিত করা, সকল ধরণের সরকারি চাকুরীতে আদিবাসীদের জন্য কোটা নিশ্চিত করা, শতভাগ আদিবাসী পরিবারকে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীতে অন্তর্ভূক্ত নিশ্চিত করা, আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি উদযাপন ও সংরক্ষণের জন্য ইউনিয়ন পর্যায়ে বিশেষ বরাদ্দ রাখা, স্থানীয় উন্নয়ন ও পরিচালনা কমিটিতে আদিবাসীদের সদস্যপদ নিশ্চিত করা, আদিবাসী বর্গা চাষীদের মাঝে কৃষি প্রণোদনা প্রদানের ব্যবস্থা করা, আদিবাসী বেকার যুবকদের জন্য চাহিদা ভিত্তিক কারিগরী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা এবং প্রশিক্ষণ শেষে কাজের ব্যবস্থা করা, আদিবাসীদের কর্মহীন সময় বিশেষ করে আশ্বিন-কার্তিক এবং বৈশাখ-জৈষ্ঠ মাসে বিশেষ খাদ্য নিরাপত্তা স্ক্রীম চালু করা, কাজের মৌসুমে আদিবাসী পল্লীতে শিশু কেয়ার সেন্টার চালু করা যাতে বাবা-মা নির্বিঘেœ কাজে যেতে পারে, জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা।

এ বিষয়ে নসার সভাপতি জতিন টপ্য বলেন, আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষ্যে আমরা প্রতিবছর বিএসডিওসহ অন্যান্য বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠনের সহায়তায় বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন করে থাকি। কিন্তু এ বছর করোনা ভাইরাসের কারণে জনসমাগমের মতো কর্মসূচী বাদ দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। আমরা আশা করি বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসবে এবং তিনি আমাদের দাবীগুলো গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করবেন।