শনিবার , ৬ মে ২০২৩ | ১৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ না দেওয়ায় জবি অধ্যাপককে মারলেন চেয়ারম্যান

Paris
মে ৬, ২০২৩ ৭:৩০ অপরাহ্ণ

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:

খুলনার কয়রা উত্তরচক আমিনিয়া বহুমুখী কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ নিয়োগকে কেন্দ্র করে নিয়োগ বোর্ডে ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি হিসেবে আসা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর নজরুল ইসলাম মারধরের শিকার হয়েছেন। অনিয়ম ও পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ না দেওয়ায় মাদরাসা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও মহারাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও তাঁর সহযোগীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। শুধু তাই নয়, তাঁকে আটকে রেখে তিন ঘণ্টা নির্যাতনের অভিযোগও রয়েছে। আহত শিক্ষক খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

শুক্রবার (৫ মে) রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার দেয়াড়া গ্রামের অভিযুক্ত মহারাজপুর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তবে অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন চেয়ারম্যান।

খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মো. নজরুল ইসলাম কয়রা উপজেলার উত্তরচক কামিল মাদরাসায় অধ্যক্ষ নিয়োগ পরীক্ষার নির্ধারিত দিন ছিল শুক্রবার। ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি হিসেবে তিনি বৃহস্পতিবার খুলনায় আসেন। শুক্রবার তিনি কয়রায় যান। কিন্তু পৌঁছালেই নিয়োগ বোর্ডের সদস্যরা তাঁকে তাদের প্রশ্ন অনুযায়ী পরীক্ষা নেওয়ার কথা বললে তিনি আপত্তি করেন। নতুন প্রশ্নে ১৪ জন আবেদনকারীর মধ্যে উপস্থিত ছয়জন লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন। কিন্তু পরীক্ষায় সবাই অকৃতকার্য হন। বিকেল ৩টার দিকে ওই মাদরাসা কমিটির সভাপতি ও মহারাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তার মনোনীত প্রার্থীকে প্রার্থী নিয়োগের জন্য চাপ দিতে শুরু করেন। কিন্তু তিনি রাজি না হওয়ায় চেয়ারম্যান ক্ষুব্ধ হন।

এই শিক্ষক বলেন, ‘সব কাজ শেষে আমি খুলনার উদ্দেশে গাড়িতে উঠলে চেয়ারম্যানও জোর করে উঠে পড়েন। গাড়িটি চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনে আসা মাত্র চেয়ারম্যান ও তাঁর সহযোগীরা আমার মোবাইল, মানিব্যাগসহ অন্য জিনিসপত্র কেড়ে নেন। চেয়ারম্যানের নির্দেশে আমাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে আরো ২০-২৫ জন লোক একটি অন্ধকার ঘরে নিয়ে নির্যাতন শুরু করে। চার ঘণ্টা নির্যাতনের একপর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। রাত সাড়ে ৯টায় জ্ঞান ফিরে এলে নিজেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেখতে পাই। ওই সময় তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক সুজিত কুমার বৈদ্যর ব্যক্তিগত ফোন ব্যবহার করে পরিবারের লোকজনকে খবর দেন। পরে রাত সোয়া ২টার দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনায় এসেছি।’ গুরুতর আহত শিক্ষক নিজেকে নিরাপত্তাহীন মনে করে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে মাদরাসার গভর্নিং বডির সভাপতি মহারাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, প্রফেসর নজরুল ইসলামকে মারপিটের কোনো ঘটনা ঘটেনি। নিয়োগ পরীক্ষা শেষে তিনি আমার বাড়িতে নাশতা করতে আসার পর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছি। স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নিয়োগ পরীক্ষাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য একটি মহল উঠেপড়ে লেগেছে। স্বার্থান্বেষী ওই মহলটির এর আগেও পরীক্ষা বন্ধ করতে বিভিন্ন পাঁয়তারা চালিয়ে ব্যর্থ হয়। নিয়োগ দেওয়ার দায়িত্ব আমার একার নয়, মাদরাসাটিতে বিধি অনুযায়ী অধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, মাদরাসাটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি, মাদরাসা অধিদপ্তরের প্রতিনিধিসহ পাঁচ সদস্যের নিয়োগ বোর্ডের স্বচ্ছ পরীক্ষার মাধ্যমে যিনি উত্তীর্ণ হয়েছেন, তাকেই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কোনো আর্থিক লেনদেন ও স্বজনপ্রীতি করা হয়নি। তিনি ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করছেন।’

কয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে আহত প্রফেসর নজরুল ইসলামকে হাসপাতালে ভর্তি করার পর প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিক্যালে পাঠানো হয়। এ সময় তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে।

কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ বি এম এস দোহা বলেন, ঘটনা জানতে পেরে আমি কয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাওয়ার পর প্রফেসর নজরুল ইসলাম উন্নত চিকিৎসা নিতে খুলনা যেতে চাইলে আমি তার সার্বিক ব্যবস্থা করে দিই। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সূত্র; কালের কণ্ঠ

সর্বশেষ - অন্যান্য