নিউইয়র্কে জয়ার ‘বিনিসুতোয়’ দর্শকের প্রশংসা কুড়ালো

‘কে পাবে ৫০ লাখ’-এমন একটি রিয়েলিটি শো হবে। তার জন্য অডিশন চলছে। সেই অডিশন সেটে চলচ্চিত্রটির শুরু। অডিশনে এক গৃহবধূর উপস্থিতি। ভয় পাওয়া চেহারা আর কাতর তার কণ্ঠস্বর। সেখানে তিনি ঠিকমতো প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেন না। শ্রাবণী বড়ুয়া নামের সেই গৃহবধূর চরিত্রে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের খ্যাতিমান অভিনেত্রী জয়া আহসান। তবে গল্প একটু এগুতেই বোঝা যায় সেই গৃহবধু আসলে সহজ সরল দরিদ্র কেউ নন। বরং সমাজের উঁচু তলার বাসিন্দা তিনি; রীতিমতো পারিবারিক একটি চা কম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর। অন্যদিকে সেই রিয়েলিটি শোর অডিশনে আসেন কাজল সরকার। বেশ চটপটে; উত্তর দিতে গিয়ে বেশ পরিষ্কার কথা বলেন। অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী অভিনয় করেছেন এই চরিত্রে। শুরুতে জীবন সংগ্রামে লড়াই করা যুবক মনে হলেও, পরে দেখা যায় তিনি একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। এভাবেই এগিয়ে যায় অতনু ঘোষের ভীন্নধর্মী চলচ্চিত্র ‘বিনিসুতোয়’।

ছবির ইংরেজি নাম ‘উইদাউট স্ট্রিংস’। সমাজের ভিন্ন দুই অবস্থান থেকে উঠে আসা দু’জন মানুষ কিভাবে নিজেদের মতো করে গল্প ভাবে, সেই গল্পের চরিত্র হয়ে ওঠে এটাই চলচ্চিত্রের মূল উপজীব্য। একসময় তারা নিজেরা একে অপরের সঙ্গে জড়িয়ে যায়। গল্প বলার ধরন, চিত্রগ্রহণ থেকে শুরু করে সবখানেই ভিন্নতা রয়েছে। গল্প রচনাও করেছেন অতনু ঘোষ নিজেই। নিঃসন্দেহে অভিনেত্রী জয়া এবং ঋত্বিক চক্রবর্তী অসাধারণ অভিনয় করেছেন, যা নিউইয়র্কের দর্শকদের মনকেও স্পর্শ করেছে। তবে কেউ কেউ এটাও বলেছেন, গল্পের ভীন্নতা ও নির্মাণশৈলী প্রশংসার দাবি রাখলেও, ছবিটি জটিল এবং সহজবোধ্য নয়। এরপরও করোনা মহামারীর মধ্যে অনেকদিন পর একটি বাংলা ছবি পেয়ে মন ভরেই দেখেছেন নিউইয়র্কের দর্শকেরা।

বায়োস্কোপ ফিল্মস এর ব্যানারে ‘বিনিসুতোয়’ প্রদর্শীত হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ১৪টি শহরে। তারই অংশ হিসেবে রবিবার স্থানীয় সময় বিকাল ৫টায় কুইন্সের ফ্রেশ মেডোর বোম্বে থিয়েটারে এই চলচ্চিত্রের বিশেষ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। বায়োস্কোর ফিল্মস এর সিইও রাজ হামিদ এসময় সেখানে উপস্থিত দর্শকদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ও ভারতের ভালো মানের ও সুস্থ ধারার চলচ্চিত্র আমরা যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী বাঙালিদের দেখাতে চাই। সেই প্রচেষ্টা আমাদের সবসময় ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে।”

রাজ হামিদ বলেন, “করোনা পরিস্থিতি একটু ভালো হতে শুরু করায়, অনেক জায়গায় হলগুলো খুলতে শুরু করেছে। মাঝে হলগুলো বন্ধ ছিল, ভালো ছবিও তেমন নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। এখন মনে হচ্ছে ধীরে ধীরে সব স্বাভাবিক হয়ে আসবে। দর্শকদেরও ভালো সাড়া মিলছে।”

নিউইয়র্কে ‘বিনিসুতোয়; প্রদর্শনীতে অভিনেতা ও নির্মাতা তৌকির আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দর্শক ছবিটি দেখতে আসেন।

এদিকে বায়োস্কপ ফিল্মস এর সিইও রাজ হামিদ জানিয়েছেন, ডিসেম্বরের ৩ তারিখ যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে মুক্তি দেয়া হবে বাংলাদেশের নতুন চলচ্চিত্র ‘মিশন এক্সট্রিম’। ‘ঢাকা অ্যাটাক’ এর সাফল্যের পর প্রায় একই টিমের এই চলচ্চিত্রটিও দর্শকপ্রিয়তা পাবে বলে তার আশা। ছবিটির গল্প লিখেছেন সানী সানোয়ার আর পরিচালনা করছেন ফয়সাল আহমেদ। আরিফিন শুভ ও জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী অভিনীত এই চলচ্চিত্রটি দেখার জন্য দর্শকদের প্রতি আহবান জানান তিনি।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ