নিজস্ব প্রতিবেদক, নাটোর:
নাটোরের ভাতুরিয়া এমদাদুল উলুম কওমী মাদ্রাসার সাত শিক্ষার্থী নিখোঁজের ১২ঘন্টা পর উদ্ধার করেছে পুলিশ। এসময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে একজনকে। তবে অভিযুক্ত মাদ্রাসার শিক্ষক পলতাক রয়েছে। পলাতক শিক্ষক আব্দুস সাত্তার সিংড়া উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, বুধবার রাত ১২টার দিকে কোন এক সময় শিক্ষক আব্দুস সাত্তার মাদ্রাসার ৭ শিক্ষার্থীকে নিয়ে ওই মাদ্রাসার শিক্ষক আব্দুস সাত্তার নিখোঁজ হয়। ভোরে মাদ্রাসার অন্যান্য শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা মাদ্রাসায় ওই সাত শিক্ষার্থীকে দেখতে না পেয়ে মাদ্রাসা এলাকায় খোঁজাখুজি শুরু করে। খোঁজাখুজির করে না পেয়ে বিষয়টি মাদ্রাসার দায়িত্বরত মুহতামিমকে জানানো হয়। এদিকে মাদ্রাসা থেকে শিক্ষার্থীদের পাওয়া যাচ্ছেনা ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জড়ো হতে থাকে। এই ঘটনাটি নিয়ে উত্তেজনা শুরু হলে বিষয়টি পুলিশকে জানায় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। পরে পুলিশ ওই শিক্ষকের স্বজনদের সাথে কথা বলে ও মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে শিক্ষকের সর্বশেষ অবস্থান সনাক্ত করে। সেই হিসেবে নাটোর থানা পুলিশ বিষয়টি সিংড়া থানা পুলিশকে জানালে সিংড়া থানা পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষকের ভাগ্নিপতি সিংড়ার তিরোইল গ্রামের আবু হানিফের বাড়ী থেকে শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে সদর থানায় নিয়ে আসে।
ভাতুরিয়া এমদাদুল উলুম কওমী মাদ্রাসার শিক্ষক ওবায়দুল্লাহ সিল্কসিটি নিউজকে জানান, বড় হুজুরের কথামত তিনি মাদ্রাসায় গিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিখোঁজ যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হন। রাতের অন্ধকারে শিক্ষক আব্দুস সাত্তার ৭ শিক্ষার্থীকে নিয়ে নিখোঁজের যাওয়াটা আলেম সমাজের জন্য কলংক। কি কারনে এভাবে তিনি পালিয়ে গেলেন তা তারা এখনও জানতে পারেনি। তবে এর বিচার হওয়া প্রয়োজন।
শিক্ষার্থীদের অভিভাবক জয়নাল আলী,আলমগীর হোসেন ও স্থানীয়রা জানায়, এই মাদ্রাসার মুহতামিম আব্দুল রকিব তিনি ঠিকমতো মাদ্রাসায় অবস্থান করেন না। তার আরেকটি মাদ্রাসা রয়েছে তিনি সেখানে বেশিরভাগ সময় অবস্থান করেন। এই মাদ্রাসায় এমন ঘটনা ঘটার পরও তাকে মাদ্রাসায় পাওয়া যায়নি। অভিভাবক সহ স্থানীয়রা এ ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী করেছেন।
স্থানীয় ইউপি মেম্বার নাজিরুজ্জামান মৃধা সিল্কসিটি নিউজকে জানান,তিনি সকালে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পান। পরে তিনি বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করেন। কি কারনে ওই শিক্ষক শিক্ষার্থীদের নিয়ে রাতের আধারে পালিয়েছে সে বিষয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি। বিষয়টি এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের জানানো হয়েছে। পরে সবাই বসে এবিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
মাদ্রাসা পরিদর্শনকারী নাটোর সদর থানার উপ-পরিদর্শক শামসুজ্জোহা জানান, শিক্ষার্থীদের নিয়ে মাদ্রাসা শিক্ষক পালিয়েছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। সেখানে তিনি ৭ শিক্ষার্থী ও একজন শিক্ষকের নিখোঁজ থাকার সত্যতা পেয়েছেন। এর পর প্রাথমিক তদন্ত ও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ওই শিক্ষকের সর্বশেষ অবস্থান সনাক্ত করা হয়। পরে সিংড়ার একটি গ্রামে অভিযান চালিয়ে সিংড়া পুলিশ ৭ শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে । তবে ওই শিক্ষক আব্দুস সাত্তারকে এখনও উদ্ধার বা আটক করা সম্ভব হয়নি। তাকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। এখনও এঘটনায় কেউ কোন অভিযোগ দেয়নি।
এ বিষয়ে সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলামের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্ধার সত্যতা নিশ্চিত করে সিল্কসিটি নিউজকে বলেন,শিক্ষার্থীদের উদ্ধারের পর নাটোর সদর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে শিক্ষক আব্দুস সাত্তারকে উদ্ধার বা আটক করা সম্ভব হয়নি।
স/শ
