নাটোরে চুরির মামলায় হাজিরা দিয়ে আদালত চত্বরেই আবার চুরি

পাঁচ জেলায় ছয়টি মামলা রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। গত ১৭ আগস্ট একটি মামলায় তিনি নাটোরের আদালতে হাজিরা দিতে এসেছিলেন। ফেরার সময় আদালত চত্বর থেকেই তিনি একটি মোটরসাইকেল চুরি করে নিয়ে যান। শুধু আদালত চত্বরই নয়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকেও মোটরসাইকেল চুরি করার ‘অভিজ্ঞতা’ রয়েছে তাঁর।

চুরির ঘটনায় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের পর সাংবাদিকদের সামনে এভাবেই নিজের ‘কীর্তির’ বর্ণনা দিয়েছেন মো. সুমন (২৩) নামের এক যুবক। তাঁর বাড়ি সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার গোটিয়ার চরে। তাঁর সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়েছে একই উপজেলার চৌদুয়ার গ্রামের হাচেন আলীর ছেলে রাজু শেখকে (২৪)।

নাটোর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার সকালে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ২৫ দিনে নাটোর শহর থেকে দামি ৩টি মোটরসাইকেল চুরি হয়। এ ব্যাপারে নাটোর থানায় তিনটি মামলা হয়েছে। সব মামলায় ‘অজ্ঞাতনামা চোর’ উল্লেখ আছে। এ কারণে চোর শনাক্ত করা ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করা ছিল পুলিশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে জেলার গোয়েন্দা পুলিশকে প্রতিটি মোটরসাইকেলের জন্য ১০ হাজার টাকা করে পুরস্কার ঘোষণাও করা হয়। শেষ পর্যন্ত প্রযুক্তি ব্যবহার করে খুব অল্প সময়ের মধ্যে তাঁরা চুরি হওয়া পাঁচটি মোটরসাইকেলসহ দুই তরুণকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে উদ্ধার করা মোটরসাইকেলসহ গ্রেপ্তার দুই তরুণকে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়। এ সময় সুমন নিজেই সাংবাদিকদের জানান, তাঁর বিরুদ্ধে নাটোরসহ পাঁচ জেলায় ছয়টি মামলা রয়েছে। ১৭ আগষ্ট তিনি একটি মামলায় নাটোরের আদালতে হাজিরা দিতে এসেছিলেন। ফেরার সময় আদালত চত্বর থেকেই তিনি অ্যাপাচি আরটিআর-১৫০ সিসির একটি মোটরসাইকেল চুরি করে নিয়ে যান। এর আগেও তিনি রাজু শেখকে সঙ্গে নিয়ে নাটোর শহরের মসজিদ মার্কেট চত্বর থেকে একই ধরনের একটি মোটরসাইকেল চুরি করেন। সর্বশেষ ১৪ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে ডিসকভারি-১৩৫ সিসির একটি মোটরসাইকেল চুরি করেন।

পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে ডিবির তিনটি চৌকস দল প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে প্রথমে সুমনকে বুধবার গ্রেপ্তার করে। পরে রাজু শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকা ও সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন স্থান থেকে পাঁচটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে তিনটির মালিক নাটোরের। অন্য দুটির মালিক অন্য জেলার। তিনি উদ্ধারকারী সদস্যদের অভিনন্দন জানান এবং মালিকদের আরও সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি জানান, গ্রেপ্তার দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদে আরও যারা এ কাজের সঙ্গে জড়িত, তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

সংবাদ সম্মেলনে নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন উপস্থিত ছিলেন।