নাচোলে হিসাবরক্ষণ অফিসারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ


নাচোল প্রতিনিধি:
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে ঘুষের টাকা না দেওয়ায় পেনশনের টাকা থেকে বঞ্চিত এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধি দেলওয়ার হোসেন(৪৩)। দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসার আব্দুল মতিন এর বিরুদ্ধে । তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।

বুদ্ধি প্রতিবিন্ধি দেলোয়ার হোসেনের আপন ছোট ভাই জাফর ইকবাল অভিযোগ করে জানান, তার পিতা মৃত শেখ সাম মোহাম্মাদ নাটোর জেলা সদর ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স এর সাব-অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। অবসর গ্রহনের পর গত ২২ মার্চ ২০০৮ তারিখে তাঁর মৃত্যুর পর বিধিমোতাবেক তার স্ত্রী তোহমিনা বেগম,ওই পেনশনের টাকা পেয়ে আসছিলেন।

গত ৫ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে তোহমিনা বেগম মারা গেলে মৃতের এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধি ছেলে দেলওয়ার হোসেনের নামে পিতার পেনশনের টাকা হকদার হন। বুদ্ধিপ্রতিবন্ধি’র নামে পেনশন ভাতা চালু করার জন্য নাটোর ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অফিসে দেলোয়ার হোসেন আবেদন করেছেন। আবেদনের কাগজ পত্র উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসে পৌছালে হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা নিজে ও তার পিয়নকে দিয়ে প্রস্তাব দেন যে, পেনশনের টাকা এককালীণ উত্তোলনের জন্য প্রাপ্য ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকার ৫০% উৎকোচ দাবী করেন বলে বুদ্ধি প্রতিবন্ধি’র ছোট ভাই জাফর ইকবাল অভিযোগ করেন।

সেই সাথে হিসাব রক্ষণ অফিসার গত ২২-০১-২০২০ তারিখে স্মারক নং ইউ.এ.ও/নাচোল/চঁ.নবাবগঞ্জ/সা: যো:/৩৪৩ একটি চিঠি ইস্যু করেন, উপ-সহকারী পরিচালক, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অফিস নাটোর বরাবরে। প্রেক্ষিতে উপ-সহকারী পরিচালক ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অফিস নাটোর, গত ০৫-২-২০২০ স্মারক নং ৫৮.০৩.৫০৬৯.০০২.১৩.০৩৪.১৭তারিখে বুদ্ধি প্রতিবন্ধি দেলওয়ারের ব্যাপারে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। প্রতিবেদনে তিনি বুদ্ধি প্রতিবন্ধি দেলওয়ারের পেনশন চালুর ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের কোন আপত্তি নেই বলেও জানিয়েছেন। সেই সাথে গত ২৩-১২-২০১৯ তারিখে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর উপ-সহকারী পরিচালক মো. আসাদুজ্জামান এর স্বাক্ষরিত চিঠিতে বুদ্ধি প্রতিবন্ধি দেলওয়ারের অবসর ও চিকিৎসা ভাতা মঞ্জুরীর নির্দেশনা প্রদান করেছেন।

এদিকে উৎকোচের টাকা না পাওয়ায় একের পর এক কাগজ পত্র চেয়ে বসেন হিসাব রক্ষণ অফিসার আব্দুল মতিন। সে সুবাদে প্রতিবন্ধির ছোট ভাই জাফর ইকবাল ব্যাংকের চেক, উপজেলা সমাজ সেবা অফিসারের প্রত্যয়ন পত্র, ওয়ারিশান সার্টিফিকেট, নাগরিকত্বের সনদপত্র, পিতার পেনশানের কাগজ পত্রসহ সকল কাগজ পত্র প্রদানে সক্ষম হন।
কিন্ত হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার ঘুষের হিসাব না মেলায় বুন্ধিপ্রতিবন্ধির বিরুদ্ধে ১৩-২-২০২০তারিখে একটি মিথ্যে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন ডিভিশনাল কন্ট্রোলার অব একাউন্টস হিসাব ভবন রাজশাহী বিভাগ”। ফলে বুদ্ধি প্রতিবন্ধি দেলওয়ার তার পিতার পেনশন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে তার ছোট ভাই জাফর ইকবাল বিভিন্ন অফিসে খোজ নিয়ে ৬মাস পর বিষয়টি জানতে পান।

এ বিষয়টি নিয়ে পৌর মেয়র আব্দুর রশিদ খান ঝালু সম্প্রতি উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসারের সঙ্গে দেখা করে ত্রুটিপন্ন কাগজপত্র দেখতে চাইলে হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা আব্দুল মতিন ত্রুটিপূর্ণ কাগজ পত্র না দেখিয়ে তার সাথেও অসৌজন্যমুলক আচরণ করেন।এ ব্যাপারে হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা আ.মতিনের সাথে এ প্রতিবেদক যোগাযোগ করলে তিনি এ বিষয়ে কোন মন্তব্য না করে বিষয়টি পাশ কাটিয়ে এড়িয়ে যান।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবিহা সুলতানার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি পূন:বিবেচনার জন্য উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে বলে তিনি জানান ।

স/আ.মি