নাচোলে চার বছর সংসারের পর স্ত্রীর মর্যাদা পাবার আশায় থানায় অভিযোগ

নাচোল প্রতিনিধি:
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে চার বছর সংসার করার পর ধর্মান্তরিত এক নারী সর্বস্ব খুইয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে অসহায় ওই নারী স্ত্রীর মর্যাদা পাবার আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন এবং বিচার পাবার আশায় নাচোল থানায় গত শুক্রবার অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযুক্ত ব্যক্তি হলেন- নাচোল পৌর এলাকার কাঁটাপুকুর মহল্লার লোকমান আলি মুংলার ছেলে মিলন আলী (২৮)। অভিযুক্তের পিতা ছেলের অপকর্মের কথা মেনে নিলেও মিলন আলী তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে মিলন বর্তমানে লাপাত্তা রয়েছেন।

জানা গেছে, পেশায় ভুটভুটি চালক. মিলন আলী ৪ বছর আগে নাচোল উপজেলার ভেরেন্ডী গ্রামের সনাতন ধর্মের জগদীশের স্ত্রী ফুলপতির (২২) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। সেই সম্পর্কের স্থায়ী ভিত্তি দিতে মিলন ফুলপতিকে ধর্মান্তরিত করে উপজেলার রাজবাড়ী এলাকার এক মৌলভীর মাধ্যমে বিয়ে করেন। ধর্মান্তরিতের পর ফুলপতির নাম রাখা হয় মোসা. সাথী। এরপর নাচোল বাজারে বাসা ভাড়া নিয়ে সংসার শুরু করেন তারা। চার বছর পর গত ২৭ জুলাই মিলন আলী উপজেলার কসবা ইউনিয়নের বেলপুকুর গ্রামের আকতারুল ইসলামের কন্যা আক্তারা খাতুনকে কাজীর মাধ্যমে বিয়ে করেন এবং তখন থেকে সাথীকে এড়িয়ে চলেন।

থানায় দায়ের করা অভিযোগ থেকে আরো জানা গেছে, মিলনের বিয়ের কথা জানতে পেরে তার সঙ্গে স্নায়ুযুদ্ধ শুরু হয় সাথীর। একপর্যায়ে সাথী জানতে পারেন মিলনের বাড়ি পৌর এলাকার কাঁটাপুকুর মহল্লায়। এরপর স্ত্রীর অধিকার ফিরে পাবার আশায় সাথী একদিন নাচোল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে মিলনকে ধরে ফেলেন। এ নিয়ে সেখানে হট্টগোল শুরু হলে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে দুজনকেই ধরে থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু বিয়ের প্রমাণপত্র না পেয়ে ২৯০ ধারায় তাদেরকে জেলহাজতে প্রেরণ করে পুলিশ।

এদিকে ছাড়া পেয়ে স্বামীর কাছ থেকে স্বীকৃতি পাবার আশায় গত ১৪ আগস্ট মিলনের কাঁটাপুকুরের বাড়িতে উপস্থিত হলে পরিবারের সদস্যরা সাথীকে বেধড়ক মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। এতে আহত সাথী ওই দিনই নাচোল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন।

এ বিষয়ে মিলন আলীর পিতা লোকমান আলি মুংলার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা হলে তিনি ছেলের অপকর্মের কথা স্বীকার করে বলেন, মিলন একটি হিন্দু মেয়েকে বিয়ে করে নাচোল বাজার পাড়ায় থাকে, এটা লোকমুখে শুনেছি।

এদিকে এ ঘটনার সত্যতা জানতে মিলনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি তা অস্বীকার করেন।

অভিযোগ দায়েরের বিষয়ে নাচোল থানার অফিসার ইনচার্জ সেলিম রেজা জানান, অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

স/অ