নর্থবেঙ্গল সুগার মিলের খামার শ্রমিকদের মাথায় কাফনের কাপড় বেঁধে প্রতিবাদ

বাগাতিপাড়া  প্রতিনিধি
নাটোরের নর্থবেঙ্গল সুগার মিলের অধীনে আটটি কৃষি খামারে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে বাগাতিপাড়ার কৃষ্ণা কৃষি খামারসহ সংশ্লিষ্ট খামারগুলোর শ্রমিকরা মাথায় কাফনের কাপড় বেঁধে অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছে। সোমবার সকাল থেকে খামার প্রধানের কার্যালয়ের সামনে অনির্দিষ্টকালের জন্য এ অবস্থান কর্মসূচী পালন শুরু করেন। দ্রুত শ্রমিক ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত বাতিল করা না হলে মঙ্গলবার থেকে আট খামারে শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
শ্রমিকরা জানান, নর্থবেঙ্গল সুগার মিলের অধীনে আটটি কৃষি খামারে দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কর্মরত শ্রমিকরা মাসে ২৪ থেকে ২৫ দিন কাজ করেন। কিন্ত  সম্প্রতি কর্তৃপক্ষ প্রতিমাসে প্রতি শ্রমিকের ৪ দিন কাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। গত ১৭ সেপ্টেম্বর শ্রমিকদের প্রতিবাদের মুখে মাসে এক দিন কাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। এরপর গত ১ অক্টোবর শ্রমিকদের প্রত্যেকের নিকট থেকে তাদের জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি নেয়া হয়।এর সতের দিন পর গত ১৭ অক্টোবর শনিবার আটটি খামারের প্রধানরা শ্রমিকদের মধ্যে ৬০ বছর পূর্ণ হওয়া ৪৩ জন শ্রমিক ছাঁটাইয়ের খবর জানান।

শ্রমিকরা আরও জানান, কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আটটি খামারের মধ্যে ঈশ্বরদী বীজ বদন খামার ব্যতিত সব খামার থেকেই শ্রমিক ছাঁটাই করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে লোকমানপুর কৃষ্ণা কৃষি খামারে ১০ জন, মুলাডুলিতে ১০ জন, ভবানীপুরে ৩ জন, গোবিন্দপুরে ৭ জন, নরেন্দ্রপুর ৬ জন, নন্দা খামারে ৩ জন এবং বড়াল কৃষি খামারে ৪ জনকে ছাঁটাই তালিকায় রাখা হয়েছে। ছাঁটাইয়ের খবরে ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে শ্রমিকরা।বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা সোমবার সকাল থেকেই মাথায় কাফনের কাপড় বেঁধে খামার প্রধানের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করেন।

উপজেলার লোকমানপুর কৃষ্ণা কৃষি খামারের শ্রমিক মাসুদ রানা জানান, এর আগে শ্রমিকরা আমৃত্যু দৈনিক মজুরির কাজ করেছেন। কিন্ত হঠাৎ করেই ৬০ বছর পূর্ণ হওয়া এসব শ্রমিকদের ছাঁটাইয়ের ঘোষনা দেওয়া হয়েছে। তাদের খামারে ৫৯ জন দৈনিক মজুরির শ্রমিকদের মধ্যে ১০ জনকে বয়সের কারনে ছাঁটাই করা হয়েছে। এতে ওই শ্রমিকরা দুর্বি:সহ জীবনে পতিত হয়েছেন। ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে ভুক্তভোগী শ্রমিকদের সাথে সাধারন শ্রমিকরা একত্রিত হয়ে সোমবার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান কর্মসূচী শুরু করেছেন। একই সাথে মঙ্গলবার থেকে কর্মবিরতির ঘোষনাও দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি জানতে কৃষ্ণা কৃষি খামার প্রধান শাহিন আলমের মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এব্যাপারে জিএম (খামার) আনিসুর রহমান বলেন, বিভিন্ন খামারে অতিরিক্ত জনবল কমানোর জন্য প্রধান কার্যালয় থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সেকারনে নিয়োগ বিহীন এসব দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজের শ্রমিকদের ৬০ বছর বা ৫৯ এর বেশি বয়সীদের কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে শ্রমিকরা কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন এমন খবর তার কাছে নেই।

স/আ.মি