নতুন ‘নয়ন বন্ডে’র গাঁজা সেবনের ভিডিও ভাইরাল!

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক

বরগুনায় চাঞ্চল্যকর শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের দেড় বছর পরে সেই বরগুনা সরকারি কলেজে আবার নতুন বন্ডের গাজা সেবনের ভিডিও ভাইরাল। নতুন নয়ন বন্ড মাতাল হয়ে বলে- আমি নয়ন বন্ড শফিক রেজা, সারাদিন খাই গাঁজা। আমি কারো খাই না। আমি বড় বেপরোয়া। কারো বাপের খাই না। কারো ধার ধারি না।

নিজেকে নয়ন বন্ডের ভক্ত দাবি করে বরগুনা সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে গাঁজা সেবনের একটি ভিডিও শনিবার বেলা ১১টায় বরগুনা সিটি নামের ফেসবুক পেজে আপলোড করেছে ওই তরুণ। কলেজ ক্যাম্পাসে এমন বখাটেপনার দৃশ্য ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বরগুনার সর্ব মহলে নিন্দার ঝড় ওঠে।

১ মিনিট ৪৩ সেকেন্ডের ভিডিওতে শেষের দিকে গিয়ে ওই তরুণ নিজের নাম প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি কি মামা চিনেছো না, বরগুনা আমার। নয়ন বন্ড ওরফে শফিক রেজা, খাই গাঁজা।’ বরগুনা নাথ পট্টি লেকসহ কয়েকটি ভিন্ন স্থানে নেশাগ্রস্ত ও অশালীন আচরণের ভিডিও আপলোড করেন ওই তরুণ।

জানা গেছে, স্বঘোষিত এই বন্ড শফিক রেজার বাড়ি পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের কালমেঘা গ্রামের হারুন ও রাশেদা দম্পতির সন্তান। শফিক অপরাধের সঙ্গে জড়িত না হলেও মাদকাসক্ত বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। বাবার চাকরি সূত্রে শফিকের জন্ম চট্টগ্রামে। সেখানে শফিক বড় হয়। বরগুনা নানা বাড়ি এসে শনিবার এ ঘটনা ঘটায়।

ভিডিওতে দেখা গেছে, সরকারি কলেজের রোভার স্কাউটস ভবনের সামনের সড়কে গাঁজা সেবন করে অশ্রাব্য ও অশ্লীল বাক্যে নেচে নেচে গাইছে শফিক রেজা নামের ওই মাদকাসক্ত।

রিফাত শরীফ হত্যার উদাহরণ টেনে বরগুনা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি হাচানুর রহমান ঝন্টু বলেন, এমন নেশাগ্রস্ত শিশুদের লাগাম টানতে পরিবারকে সচেতন হতে হবে। সেই সাথে কলেজ প্রশাসনকে কলেজের শৃঙ্খলা ফেরাতে সজাগ দৃষ্টি রেখে কঠোর হতে হবে।

তিনি আক্ষেপ করে আরও বলেন, কিছুদিন আগে অধ্যক্ষ বহিরাগতদের প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের ওপর চড়াও হল। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষের আরও কঠোর হতে হবে।

বরগুনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান ফসল বলেন, বরগুনা সরকারি কলেজ গেটে ২০১৯ সালের ২৬ জুন রিফাত শরীফকে নয়ন বন্ড ও তার দোসরা কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। সেই কলেজে বা কলেজ গেটে নয়ন বন্ড নাম নিয়ে আর কোনো ঘটনা আমরা দেখতে চাই না। কলেজ গেটে কঠোর নজরদারি বাড়াতে হবে। যাতে কোনো বহিরাগত প্রবেশ করতে না পারে।

বরগুনা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. মতিউর রহমান মোবাইল ফোনে বলেন, আমার মনে হয় এই ছেলেটির মাথায় সমস্যা আছে। নয়তো কোনো সুস্থ স্বাভাবিক একটি ছেলে এমন ভিডিও করে তা আবার ফেসবুকে আপলোড করতে পারেন না। আমি পারিবারিক কাজে রোববার ঢাকায় এসেছি। ভাইস প্রিন্সিপাল আবদুস সালামকে থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে বলেছি।

বহিরাগত কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকে কী করে এমন ভিডিও ধারণ করে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কলেজ চলাকালে সবার আইডি কার্ড চেক করে শিক্ষার্থীদের প্রবেশ করানো হয়। আমি ড্রেসের ব্যবস্থা করেছি। কঠোর অবস্থানে আছি। কিছু উচ্ছৃঙ্খল বহিরাগতরা ফাঁক দিয়ে ঢুকে পরে। আমরা শতভাগ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। যাতে কোনো বহিরাগত প্রবেশ করতে না পারে। ক্যাম্পাসে আরও নজরদারি বাড়ানো হবে।

এ বিষয়ে বরগুনা সদর থানার ওসি কেএম তারিকুল ইসলাম বলেন, বরগুনা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় আমাদের সহযোগিতা চাইলে তা দিতে আমরা প্রস্তুত।

সূত্র:যুগান্তর