নগরীতে নারী পুলিশ সার্জেন্টের বিরুদ্ধে মোটরসাইকেল আটক করে হয়রানির অভিযোগ


নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহী নগরীর নারী ট্রাফিক সার্জেন্টের বিরুদ্ধে মোটরসাইকেলের কাগজপত্র থাকার পরও আটক করে ও মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। হয়রানির শিকার ভুক্তভোগি মোটরসাইকেল চালক কাটাখালি চকবেলঘরিয়া এলাকার সামাউন্নবী শরিফ তার মোটরসাইকেলটির মুল কাগজপত্র ফেরত পাননি।

বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য গত বৃহস্পতিবার শরিফ সার্জেন্ট সাবিহার বিরুদ্ধে নগর পুলিশ কমিশনার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ৭ মে সন্ধ্যা সোয়া ৭ টা দিকে শরিফ তার মোটরসাইকেল (যাহার রেজি নং রাজশাহী-হ-১৫-৮৮৫১) নিয়ে রাজশাহী লক্ষ্মীপুর আমানা হাসপাতালের যাওয়া পথে লক্ষ্মীপুর মিন্টু চত্তরে সার্জেন্ট সাবিহা তার মোটরসাইকেল আটক করে কাগজপত্র দেখাতে চান। তিনি ভুলবশত মোটরসাইকেলের কাগজপত্র বাড়িতে রেখে এসেছেন বলে তাকে জানান। এসময় তার মোটরসাইকেলটি জব্দ করেন সার্জেন্ট সাবিহা। এসময় শরিফ সার্জেন্ট সাবিহাকে জানান, ৩০ মিনিট সময় দিলে আমি বাড়ি থেকে কাগজপত্র এনে দিতে পারবো। কিন্তু সার্জেন্ট সাবিহা তাকে কোন সময় না দিয়ে গাড়ি জব্দ করে ট্রাফিক অফিসে পাঠিয়ে দেয়। পরে প্রায় ৪০ মিনিট পর মোটরসাইকেলের কাগজ নিয়ে ট্রাফিক অফিসে যান তিনি। এরপর শুরু হয় দফায় দফায় হয়রানি।

ট্রাফিক অফিসে গিয়ে সেখানে হাসান নামের এক কনস্টেবলকে কাগজপত্র দেয়ার পর তিনি পরের দিন ৮ মে দেখা করতে বলেন। পরদিন ৮ মে সকাল ১১ টার দিকে তিনি পুনরায় ট্রাফিক অফিসে লাইনে দাঁড়িয়ে প্রায় দুপুর ১২ টার দিকে কনস্টেবল হাসানের সাক্ষাত পান। পরে তিনি সার্জেন্ট সাবিহার দেয়া জব্দ তালিকাটি হাসানকে দেখান। জব্দ তালিকায় সার্জেন্ট সাবিহা তার ডাক নাম শরিফ লেখার কারণে নাম সংশোধন করে আনতে বলেন।

পরে তিনি ১ টা ৫০ মিনিটে লক্ষ্মীপুর পুলিশ বক্সে গিয়ে সেখানে সার্জেন্ট সাবিহা ছিলেন না। পুনরায় তিনি ট্রাফিক অফিসে গিয়ে বিষয়টি কনস্টেবল হাসানকে জানান সার্জেন্ট সাবিহা চলে গেছে, তার সাথে দেখা হয়নি। এসময় হাসান শরিফকে বলে আগামীকাল দুপুর ২ টার সময় সার্জেন্ট সাবিহার ডিউটি লক্ষ্মীপুরে। আপনি সেখান থেকে নাম ঠিক করে নিয়ে আসেন। পরদিন ৯ মে দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত তিনি লক্ষ্মীপুর পুলিশ বক্সে বসে থেকে সার্জেন্ট সাবিহা আসের দেখা পান ও নাম সংশোধন করে নেন। সাথে একটি দরখাস্ত দেন।

তিনি দরখাস্ত দিয়ে বিকেল ৪ টার দিকে ট্রাফিক অফিসে আসলে কনস্টেবল হাসান বলেন ডিসি স্যার চলে যাবে আজকে আর গাড়ি দেওয়া যাবে না কালকে আসেন। পরদিন ১০ মে দুপুর ১২ টার দিকে আবারো ট্রাফিক অফিসে হাসানের সাথে দেখা করেন তিনি। এসময় কনস্টেবল বলেন সার্জেন্ট সাবিহার কাছে আবার যান ও একটা মামলা লিখে নিয়ে আসেন।

পুনরায় তিনি সার্জেন্ট সাবিহার কাছে গেলে তিনি তার সাথে খারাপ ব্যবহার করেন। পরে একটি মামলা লেখে দেয়। এরপর ইউক্যাশে টাকা জমা থেকে শুরু করে প্রতিটি পদে পদে হয়রানি করা হয়। তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেছেন প্রখর রোদের মধ্যে ৪ দিন যাবৎ অমানবিক হয়রানির শিকার হয়েও তার গাড়ির মূল কাগজপত্র এখনও হাতে পাই নি।

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) রফিকুল আলম বলেন, অভিযোগ যাচাই বাছাই করে অভিযুক্তর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়। তিনি হয়রানির শিকার হলে অবশ্যই বিষয়টি দেখা হবে।

এব্যাপারে ট্রাফিক বিভাগের এসি বলেন, মোটরসাইকেলের কাগজপত্র সঠিক থাকলে হয়রানির কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখবো বলেও জানান তিনি। তবে এসি নাম জানতে চাইলে তিনি নাম প্রকাশে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন।