ধেয়ে আসছে বিধ্বংসী ‘ধুলোঝড়’, ৫০ বছরেও এমন ঝড় দেখেনি পৃথিবী

প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের ভয়াবহ তাণ্ডবের মাঝেই যে আশঙ্কাটা করেছিলেন বিজ্ঞানীরা, সেটাই ঘটতে চলেছে। সাহারা মরুভূমি ফেরত ধুলো ঝড়ে ঢাকা পড়ছে আমেরিকার একাংশ। করোনা মহামারির কারণে এই মুহূর্তে ভয়ঙ্কর অবস্থা পুরো যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে। সেখানে ক্রমশ বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ। এরই মধ্যে নতুন বিপদ নিয়ে আসছে সাহার মরুভূমির ধুলোঝড়।

বিজ্ঞানীরা ৩ হাজার ৫০০ মাইল দীর্ঘ এই ধুলো ঝড়ের নাম দিয়েছেন ‘গডজিলা স্যান্ড স্টর্ম’। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে ক্রমশ উদ্বেগ বাড়ছে। আর এই পরিস্থিতিতে ৫ হাজার মাইল পথ পেরিয়ে আমেরিকার একাংশকে ঢেকে ফেলেছে এই প্রলয়ঙ্করী ধুলো ঝড়।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, সাহারা মরুভূমি থেকে উঠে এসেছে বিশাল এই ধুলো ঝড়। ভয়ঙ্কর এই ধুলো ঝড়ের বিস্তার এতটাই বেশি যে নাসার স্যাটেলাইটে ধরা পড়েছে সেই মেঘের ছবি। সাহারাতে ধুলো ঝড় নতুন কিছু না। একটা সময়ে এই ধুলো ঝড় হয়ে থাকে। আটলান্টিক পেরিয়ে এভাবে আমেরিকায় ঝড় এসে পড়াটাও নতুন কিছু নয় বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তবে ভয় ধরাচ্ছে এবারের ঝড়ের আকার।

নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটি ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়েছে। নাসার পক্ষ থেকে এরই মধ্যে ভয়ঙ্কর এই ঝড়ের ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে যে, আফ্রিকার পশ্চিম উপকূল থেকে উঠে আসা ধুলো ঝড় আটলান্টিক, ক্যারিবিয়ান সাগর পেরিয়ে ঢুকে যাচ্ছে মেক্সিকো উপকূলে।

ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিসের মেটিওরলোজিস্ট প্যাট্রিক ব্লাড বলেছেন, প্রতি গ্রীষ্মে এই ধুলো ঝড় তৈরি হয়। অত্যন্ত শুষ্ক এই বাতাস, ছোট্ট ছোট্ট ধূলিকণায় ভর্তি। তবে এবারের ঝড় অত্যন্ত ভয়ঙ্কর।

গত ৫০ বছরে এমন ঘন ধুলো ঝড় আর হয়নি বলে পরিবেশবিদরা জানিয়েছেন। যেভাবে এই ধুলো ঝড় এগোচ্ছে তাতে মনে করা হচ্ছে আগামী সপ্তাহের মাঝামাঝি সময়ে এই ধুলো ঝড় আছড়ে পড়তে পারে মার্কিন মূলুকে। এই সময় টেক্সাস, ফ্লোরিডা সহ অন্যান্য প্রদেশের বাতাসের গুণমান আরও খারাপ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

সাধারণ, মরু অঞ্চলের উষ্ণ বায়ু দ্রুত গতিতে ভূপৃষ্ঠের ধুলো ও বালির কনা বহন করে নিয়ে চলে। ক্রমে সেই ধুলো ও বালির কনার পরিমাণ বাড়তে বাড়তে মারাত্মক ধুলো ঝড়ের সৃষ্টি হয়। এর ফলে আকাশ ঢেকে যায় কালো মেঘের মতো ধুলোর চাদরে। আমেরিকায় যতদিন যাচ্ছে, এই ধুলোর ঝড়ের দাপট বাড়ছে বলেই শোনা যাচ্ছে। এরফলে মরুভূমিও একটু একটু করে নিজের এলাকা বাড়িয়ে নিচ্ছে।

তথ্যসূত্র : রয়টার্স, কলকাতা ২৪।