ধামইরহাটে বাড়ি গিয়ে বকেয়া ঋণ আদায় করছে ব্যাংক কর্মকর্তারা


ধামইরহাট  প্রতিনিধিঃ
নওগাঁর ধামইরহাটে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বকেয়া এবং খেলাপি ঋণ আদায় করছে সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। দীর্ঘদিন ধরে ঋণ পরিশোধ না করার কৃষকদের বাড়িতে গিয়ে ঋণ আদায় ও নতুন ঋণ বিতরণ কর্মসূচী চলছে। এতে উভয় পক্ষই সুবিধা পাচ্ছেন।

জানা গেছে, উপজেলার উমার ইউনিয়ন এবং উমার ইউনিয়নের সাবেক যে সকল এলাকা ধামইরহাট পৌরসভায় অন্তর্ভূক্ত হয়েছে ওই এলাকার কৃষকদের মাঝে সহজ শর্তে শস্য ঋণ বিতরণ করেছে সোনালী ব্যাংক লিমিটেড ধামইরহাট শাখা। কৃষকরা ঋণ গ্রহণের পর নিয়মিতভাবে পরিশোধ না করায় ব্যাংকের প্রায় ১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা বকেয়া পড়ে। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ লাখ টাকা।

বর্তমান ব্যবস্থাপক মো.মিজানুর রহমান চলতি বছরের শুরুতে এ শাখায় যোগদানের পর তিনি গ্রাহকদের অধিক সেবা প্রদানে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের মাঝে মাত্র ৯ ভাগ সুদে ৮শত ৬০ টাকা সরকারি খরচের বিনিময়ে সর্বোচ্চ ৮ লাখ টাকা ব্যক্তিগত ঋণ বিতরণ কর্মসূচী চলমান রয়েছে।

বতর্মানে করোনা পরবর্তীতে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে কৃষকদের মাঝে সহজ শর্তে ৪ ভাগ সুদে কৃষি ঋণ বিতরণ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। এক কথায় ব্যাংকে বর্তমানে কোন প্রকার ঝামেলা,হয়রানি এবং দালাল মুক্ত পরিবেশে গ্রাহকদের সেবা চলছে। উপজেলার উমার ইউনিয়নের অন্তর্গত কাদিপুর গ্রামের কৃষক মো.বকুল হোসেন বলেন,তিনি ব্যাংক থেকে ৫৫ হাজার টাকা শস্য ঋণ নিয়েছিলেন।

ওই ঋণ পরিশোধ করায় বর্তমান ব্যবস্থাপকের সহায়তায় মাত্র ৫০ টাকার রাজস্ব টিকিটের মাধ্যমে তাকে ৭০ হাজার টাকা কৃষি ঋণ দেয়া হয়েছে। এ ঋণ পেয়ে তিনি বেশ উপকৃত হয়েছেন। চন্ডীপুর গ্রামের গোলাম রব্বানীর স্ত্রী কৃষাণী মারিয়া আকতার বলেন,তিনি ব্যাংক থেকে ৩০ হাজার টাকা ধান ও সবজি চাষের জন্য ঋণ নিয়েছিলেন।

ঋণ পরিশোধ করায় ব্যাংক কর্মকর্তা তাকে মাত্র ৫০ টাকার রাজস্ব টিকিটের বিনিময়ে ৫০ হাজার টাকা কৃষি ঋণ দিয়েছেন। এতে ধান ও সবজি চাষ করতে তাকে আর্থিক কোন সমস্যায় পড়তে হবে না। এই ঋণ না পেলে অধিক সুদ দিয়ে দাদন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ঋণ নিতে হতো। তবে বকেয়া ও খেলাপি ঋণ গ্রহিতাগণ পূর্বের ঋণ পরিশোধ করলে তাৎক্ষনিক তাদের নামে নতুন ঋণ বিতরণ করা হচ্ছে।

এব্যাপারে ধামইরহাট সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপক মো.মিজানুর রহমান বলেন,সরকার করোনার কারণে কৃষক যাতে তাদের ফসল উৎপাদন অব্যাহত রাখতে পারে সেজন্য সুদের হার ৯ থেকে নামিয়ে ৪ ভাগে নির্ধারণ করেছে। সরকারের এ মহৎ উদ্যোগ সম্পর্কে অনেক কৃষক কিছুই জানেন না।

তাদেরকে অবগত এবং বকেয়া/খেলাপি কৃষি ঋণ আদায়ের জন্য আমার নেতৃত্বে ছুটির দিন বিশেষ করে শনিবার সারাদিন ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ নিরলসভাবে প্রায় ১ মাস ধরে কৃষকদের বাড়ী বাড়ী যাচ্ছেন। কৃষকরা সহজ শর্তে কোন প্রকার ঝামেলা,হয়রানি এবং দালাল ছাড়াই পুরাতন ঋণ গ্রহিতাগণ হাল নাগাদ খাজনা পরিশোধের কপি এবং ৫০ টাকা রাজস্ব টিকিট দেয়া মাত্র নতুন ঋণ বিতরণ চলমান রয়েছে।

মাত্র ১ মাসে ৫০ লাখ টাকা বকেয়া ঋণ আদায় করা সম্ভব হয়েছে। নতুন কৃষকদের জমির দলিলসহ খাজনা খারিজের কপি পরীক্ষা নিরীক্ষার পর ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে ঋণ প্রদান করা হচ্ছে। সরকারি ব্যাংক থেকে কৃষকরা যেন সর্বোচ্চ সেবা পেতে পারে তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

স/আ.মি