ধামইরহাটে বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে পান চাষ

ধামইরহাট  প্রতিনিধিঃ নওগাঁর ধামইরহাটে বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে পান চাষ। বরেন্দ্র অঞ্চল হিসেবে পরিচিতি এ উপজেলায় পান চাষ করে এক কৃষক সফলতা পেয়েছে। বর্তমানে তাকে অনুসরণ করে অনেকে পান চাষের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। সরকারের সার্বিক সহযোগিতা ও পৃষ্টপোষকতা পেলে ধানের পাশাপাশি অর্থকরি ফসল হিসেবে পান চাষ করে কৃষকরা স্বাবলম্বী হতে পারে।

জানা গেছে,আদি বরেন্দ্র অঞ্চল হিসেবে খ্যাত ধামইরহাট উপজেলা। এ উপজেলার বিস্তৃর্ণ এলাকা জুড়ে শুধু ধান চাষ হয়ে থাকে। এখানকার অধিকাংশ মাটি কর্মাক্ত ও আঠালো যা এঁটেল মাটি হিসেবে পরিচিত। তবে কৃষি বিভাগের তৎপরতা এবং কৃষকের চাহিদার প্রয়োজনে অনেক এলাকায় এখন বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি চাষ হচ্ছে। এতে কৃষকরা আর্থিকভাবে বেশ লাভবান হচ্ছেন।

উপজেলার ধামইরহাট ইউনিয়নের অন্তর্গত ঐতিহাসিক শালবন বেষ্টিত আলতাদিঘী (জোতওসমান) গ্রামের মৃত সামসুদ্দিনের ছেলে কৃষক মো.মোজাম্মেল হক শখের বসে এবং আর্থিকভাবে লাভবানের আশায় তার ১২ শতাংশ জমিতে দেড় বছর আগে পান চাষ শুরু করেন। বর্তমানে তার পানের বরজ পানে ভরে গেছে। এব্যাপারে কৃষক মো.মোজাম্মেল হক বলেন,প্রায় দেড় বছর পূর্বে তার জামাই বাড়ী জয়পুরহাট সদর থানার বিঞ্চুপুর গ্রাম থেকে শখের বসে পানের কান্ড (পড়) সংগ্রহ করি। পরে বাড়ীর পার্শে ১২ শতাংশ জমিতে ওই পানের কান্ডগুলো রোপন করি।

এবার দীর্ঘ মেয়াদী বর্ষার কারণে গাছগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে তাকে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। পান গাছ রোপনের ছয় মাসের মধ্যে পান তোলা শুরু হয়েছে। পান বেশ সুস্বাদু। অন্য এলাকার পানের মতো এর সুগন্ধি ও স্বাদ রয়েছে। বরজ করতে সর্বসাকূল্যে তার প্রায় এক লাখ টাকা খরচ হয়েছে। প্রতি বেড়া পান (৬৪টি) ২০-২৫ টাকা দরে কেনাবেচা হচ্ছে। মানুষ বাড়ীতে এসে পান কিনছে। বর্তমানে প্রতি সপ্তাহে বরজ থেকে ২ হাজার টাকার মতো পান বিক্রি শুরু হয়েছে। তবে বিশেষ সর্তকতার সাথে পান গাছ থেকে তুলতে হয়। অন্য এলাকা থেকে লোক এনে পান তুলতে হচ্ছে। এ কাজে প্রতি মাসে তাকে প্রায় ২ হাজার টাকা খরচ করতে হয়। তার পান বরজ থেকে গ্রামবাসী সুলভ মূল্যে ক্রয় করছে। তিনি আশা করছেন অচিরে বরজ থেকে পান ব্যাপকভাবে তোলা শুরু হবে।

বর্তমানে পান বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভের স্বপ্ন দেখছেন কৃষক মোজাম্মেল হক। এলাকার বিশিষ্ট সমাজসেবক বড় চকগোপাল গ্রামের কৃষক এটিএম ফসিউল আলম বলেন,আমি ওই বরজে গিয়েছি। পানগাছে বিপুল পরিমাণে পান ধরেছে। যা আমাকে প্রশান্তি দিয়েছে। আমরা কৃষকরা শুধু ধান চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছি। পানসহ অন্যান্য শাকসবজি এখন আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ও অর্থকরি ফসল হিসেবে চাহিদা বেড়ে গেছে। ইতোমধ্যে অনেক কৃষক পান চাষে ঝুঁকে পড়ছে।

এব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো.সেলিম রেজা বলেন,পান একটি মসলা জাতীয় ফসল লাভজনক ফসল হিসেবে ব্যাপক পরিচিত। বর্তমানে দিন দিন এর ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। একবার বরজে পান গাছ লাগানো হলে তা প্রায় ২৫-৩০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে। কৃষক পান চাষ করতে আগ্রহী হলে উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে সার্বিক সহযোগিতাসহ সকল প্রকার সহায়তা প্রদান করা হবে।

স/আ.মি