ধামইরহাটে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত পাঠাগার


ধামইরহাট  প্রতিনিধিঃ
নওগাঁর ধামইরহাটে মানবিক মানুষ গড়তে এবং বই পড়ার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করতে আগামী মাসে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত পাঠাগার। পাঠাগারটি উপজেলার আগ্রাদ্বিগুন বাজারে স্থাপিত হয়েছে। পাঠাগারটি চালু হলে শত শত মানুষ উপকৃত হবে।

জানা গেছে,উপজেলার ২নং আগ্রাদ্বিগুন ইউনিয়নের  ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুর রহমানের মৃত্যুর পর তাঁর সন্তানরা মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন।

ওই ফাউন্ডেশনের আয়োজনে ধামইরহাট ও পত্নীতলা উপজেলায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে বৃত্তির ব্যবস্থা করেন। এছাড়া বিভিন্ন দূর্যোগ মূর্হুতে এ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে মানুষকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে আসছে। এর ধারাবাহিকতায় ওই ফাউন্ডেশনের অঙ্গ সংস্থা মুজিবুর রহমান স্মৃতি পাঠাগারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

এব্যাপারে মুজিবুর রহমান ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক ও গ্রীণ ভয়েস বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা পরিবশেবিদ মো.আলমগীর কবির বলেন,বই পড়ার প্রতি আগ্রাহ সৃষ্টি মানবিক মানুষ গড়ার লক্ষে তিনি এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রতি মানুষের উৎসাহ,আগ্রহ সৃষ্টি এবং জ্ঞান সম্পন্ন মানুষ গড়ে তুলতে হলে পাঠাগারের কোন বিকল্প নেই।

বর্তমান সমাজে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সকল পেশার মানুষ বই পড়ার প্রতি বিমুখ হয়ে পড়ছে। শিক্ষা ও সংস্কৃতি চর্চা না থাকলে ভালো মানুষ হওয়া যায় না। আগ্রাদ্বিগুন বাজার ধামইরহাট,পত্নীতলা ও সাপাহার উপজেলার মধ্যস্থলে অবস্থিত। এই এলাকায় বেশ কয়েকটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়,মহাবিদ্যালয়,প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং মাদ্রারাসা রয়েছে।

এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শত শত শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠাগারে বসে পড়ার মতো মানসম্মত কোন স্বতন্ত্র পাঠাগার নেই। বই পড়ার প্রতি মরহুম বাবার অনুপ্রেরণায় আমাদের ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে এলাকায় গুণী মানুষ গড়ে তোলায় লক্ষে আগ্রাদ্বিগুন বাজারে নিজস্ব জায়গায় তিনতলা বাসার দ্বিতীয় তলায় প্রায় ১হাজার ২শত বর্গফুট জায়গা জুড়ে এ পাঠাগার গড়ে তোলা হয়েছে।

জায়গা বাদে প্রাথমিক অবস্থায় জায়গা বাদে এ পাঠাগার স্থাপন করতে প্রায় ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে হয়েছে। পাঠাগারটির ডিজাইন করেছেন দেশের প্রখ্যাত স্থপতি মো.ইকবাল হাবিব। সকল প্রস্ততি শেষে আগামী সেপেম্বর মাসের ১৫ তারিখে পাঠাগারটি জনগণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। এ পাঠাগারে এক সাথে ৩৫ জন পাঠক পড়াশুনা করতে পারবেন।

এখানে সাহিত্য,সংস্কৃতি,বিজ্ঞান,বিনোদন,শিশু সাহিত্য,বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক ও জাতীয় পত্রিকাসহ দেশ বিদেশের দূর্লভ বাংলা ও ইংরেজি বই থাকবে। পাঠাগারে ক্রীড়া বিষয়ক ও শিশু কর্ণার থাকবে। ক্রীড়া বিষয়ক কর্ণারে যাবতীয় ব্যয়ভার বহন করবেন ঢাকার একটি বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শফিকুর রহমান শুভ। সকল শ্রেণীর দূর্লভ পাঠ্যবই থাকবে।

এছাড়া মাসে একবার সাহিত্য আসর এবং প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা থাকবে। বিভিন্ন ধরণের শিক্ষণ বিষয় সম্পর্কে প্রতি ১৫ দিন পর পর প্রজেক্টেরের বড় পর্দার মাধ্যমে ডকুমেন্টরী,বাংলা ও ইংরেজি সিনেমা প্রদর্শন করা হবে। এলাকায় আলোকিত মানুষ হিসেবে পরিচিত

শিক্ষক,সাহিত্যিক,সাংবাদিক,সমাজ সেবকদের নিয়ে পাঠাগার পরিচালনায় একটি যুগোপযোগি পরিচালনা পর্ষদ গঠন করা হবে। আগ্রাদ্বিগুন উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী সাবিলা শারমিন বলেন,প্রত্যন্ত অঞ্চলে এ ধরণের পাঠাগার  হওয়ায় আমরা শিক্ষার্থীরা অনেক উপকৃত হবো।

আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষার্থী আগ্রাদ্বিগুন কলেজের ছাত্র সাগর হোসেন বলেন,শুনেছি এ পাঠাগার সব ধরণের বই পড়ার সুযোগ থাকবে। আর্থিক সংকটের কারণে অনেক দূর্লভ বই আমরা কিনতে পারিনা। এ পাঠাগারে এ ধরণের বই পড়ার সুযোগ হবে যা আমাদের জন্য খুশির বিষয়।

স/আ.মি