ধনী-গরিবের জন্য জ্বালানির দাম দুই রকম করছে পাকিস্তান

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক :

দেশের গরিব মানুষদের ভর্তুকি দেওয়ার জন্য পাকিস্তানের সরকার ধনীদের কাছ থেকে পেট্রোলে অতিরিক্ত ১০০ রুপি আদায়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে দেশটিতে ধনীদের কাছে পেট্রোল বেশি দামে এবং গরিবদের কাছে কম দামে বিক্রি করা হবে। সোমবার পাকিস্তানের পেট্রোলিয়াম প্রতিমন্ত্রী মুসাদিক মাসুদ মালিক সরকারের নতুন এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, সরকার বিত্তশালীদের কাছ থেকে পেট্রোলের জন্য ১০০ রুপি বেশি চার্জ আদায় করবে, যাতে স্বল্প আয়ের জনগোষ্ঠীর জ্বালানি শুল্কে এই অর্থ ব্যয় করা যায়।

এক সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের এই মন্ত্রী বলেছেন, ‘আমরা ধনীদের জন্য পেট্রোলকে বেশি দামী এবং গরিবদের জন্য সস্তা করবো। … ধনীরা যে উচ্চমূল্য দিচ্ছেন তা নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর মাঝে ভর্তুকিযুক্ত পেট্রোল সরবরাহে ব্যবহার করা হবে।’

দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ দরিদ্রদের জন্য একটি ভর্তুকি প্যাকেজ ঘোষণা করার একদিন পরে পেট্রোলিয়াম প্রতিমন্ত্রী মালিকের এই মন্তব্য করেছেন। প্যাকেজ অনুযায়ী, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর লোকজনদের মাঝে প্রতি লিটার পেট্রোলে ৫০ রুপি ভর্তুকি দেওয়ার কথা রয়েছে।

ত্রাণ প্যাকেজ নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠকের পর পাক প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, স্বল্প আয়ের গ্রাহক; যাদের মোটরসাইকেল, রিকশা, ৮০০  সিসি গাড়ি বা অন্যান্য ছোট গাড়ি রয়েছে, তাদের এই ভর্তুকি দেওয়া হবে।

ভর্তুকির বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী মালিক বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ মন্ত্রণালয়কে ভর্তুকি বাড়িয়ে ১০০ রুপি করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ধনীদের ১০০ রুপি বেশি এবং গরিবদের ১০০ রুপি কম চার্জ করা হবে।’

তবে কোনও ধরনের বিধি-বিধান ছাড়াই আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে জ্বালানির এই ভর্তুকি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। পাকিস্তানের এই মন্ত্রী বলেছেন, প্রকল্পের অর্থায়ন উচ্চ-আয়ের লোকজনের কাছ থেকে আদায় করা করের হারের মাধ্যমে পরিশোধ করা হবে।

দেশটিতে গ্যাসের শুল্কেও এর আগে একই ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল বলে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন তিনি। গ্যাসের ওই প্রকল্পের আওতায়, ধনীদের তুলনায় দরিদ্রদের গ্যাস বিল প্রায় তিনগুণ কমানো হয়েছিল।

প্রতিমন্ত্রী মালিক বলেন, এক সপ্তাহ আগে প্রধানমন্ত্রী এবং নওয়াজ শরীফ আমাদের দেশের ধনী ও দরিদ্রদের জন্য পেট্রোলের দাম আলাদা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন… সেই আদেশ অনুযায়ী, আমরা গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি প্রকল্প উপস্থাপন করেছি।

তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ১০০ রুপি আদায় করবো, যাদের প্রতি সৃষ্টিকর্তার কৃপা রয়েছে। আর যারা পরিবারকে খাওয়ানোর জন্য লড়াই করছেন, এই অর্থ তাদেরকে দেব। এটা আমাদের নীতি; অন্য সবক্ষেত্রেও যার প্রতিফলন ঘটবে।’