দোহায় নারী যাত্রীদের কাপড় খুলে তল্লাশি, ক্ষুব্ধ অস্ট্রেলিয়া

দোহা থেকে সিডনিগামী একটি ফ্লাইটের নারী যাত্রীদের কাপড় খুলে তল্লাশির ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। হামাদ ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের একটি টার্মিনালের টয়লেট থেকে একটি নবজাতককে উদ্ধারের পর এ ঘটনা ঘটে। নবজাতকের পরিচয় এখনো শনাক্ত হয়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা অস্ট্রেলিয়ার মিডিয়াকে জানায়, বিমান থেকে নামানোর আগে ওই নারীরা কাতার এয়ারওয়েজের ফ্লাইটে উঠেছিলেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, অস্ট্রেলিয়ার ১৩ জন নারীকে একটি অ্যাম্বুল্যান্সে তোলা হয় এবং পরীক্ষা করার আগে তাঁদের অন্তর্বাস খুলতে বলা হয়।

অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং করপোরেশনকে উলফগ্যাং বাবেক নামের এক যাত্রী বলেন, যখন ওই নারীরা ফিরে আসেন তখন তাদের সবারই মন খারাপ ছিল। তাদের মধ্যে তুলনামূলক কম বয়সী একজন কাঁদছিলেন।

গত ২ অক্টোবর ঘটে যাওয়া ঘটনা সম্পর্কে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি কাতার সরকার। তবে অস্ট্রেলিয়ার সরকার বলছে, প্রতিবেদন থেকে বোঝা যায় যে ওই নারীদের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হয়েছে, সে পরিস্থিতিতে তাদের সব কিছু জেনে-বুঝে মুক্তভাবে মত প্রকাশ করার মতো পরিবেশ ছিল না।

দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেরিস পেইনকে সাংবাদিকরা জিজ্ঞেস করেন, কোনো ধরনের যৌন সহিংসতা হয়েছিল কি না? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি সেটা বলছি না, কারণ আমি এখনো ওই ঘটনার বিস্তারিত প্রতিবেদন দেখিনি। তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন, ‘ঘটনাটি চরম বিরক্তিকর, আপত্তিকর এবং উদ্বেগজনক।’ এ বিষয়ে কাতারের প্রতিক্রিয়া জানার পর অস্ট্রেলিয়ার পরবর্তী পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।

অস্ট্রেলিয়া বলেছে যে তারা সময়মতো এ ঘটনা অবহিত করেছে এবং এ বিষয়ে ‘আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বেগও জানানো হয়েছে।’ হামাদ ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের এক মুখপাত্র জানান, স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা সদ্যঃসন্তান জন্ম দেওয়া এক মায়ের স্বাস্থ্যের বিষয়ে উদ্বেগ জানান এবং বিমানবন্দর ত্যাগ করার আগে তাকে খুঁজে বের করার অনুরোধ করেন। এক বিবৃতিতে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, বিমানবন্দরের যে স্থানে ওই নবজাতককে পাওয়া গিয়েছিল, সেখানে যাদের প্রবেশাধিকার ছিল তাদের প্রত্যেককেই এই তদন্তে সহযোগিতা করার কথা বলা হয়েছিল।

মেরিস পেইন বলেন, সিডনিতে পৌঁছার পর ওই নারীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে অস্ট্রেলিয়া কর্তৃপক্ষ। ভ্রমণ করে ফেরার কারণে তারা সবাই এখন হোটেলে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। সোমবার ক্যানবেরায় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, এই সময়ে তাদের সবাইকে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা ও সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। এ রকম ঘটনা আমি আমার জীবনে কখনো শুনিনি।

এদিকে নবজাতকের মায়ের বিষয়ে তথ্য অনুসন্ধান করছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। আর নবজাতকের দেখভাল করছে স্বাস্থ্য ও সমাজকর্মীরা।

সূত্র : বিবিসি বাংলা।