দেশে দেশে ফের লকডাউন

বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে কোটি কোটি মানুষের ওপর নতুন করে লকডাউন ও কারফিউ জারি করা হয়েছে।

ব্যাপক হারে টিকাদান সত্ত্বেও করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি ও টিকা কর্মসূচিতে সৃষ্ট জটিলতার কারণে ভারত থেকে আর্জেন্টিনা ও ইরান থেকে জার্মানি পর্যন্ত বিভিন্ন দেশে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকারগুলো।

ভারতে করোনায় সবচেয়ে সংক্রমিত রাজ্য মহারাষ্ট্রে সপ্তাহান্তে লকডাউন জারি করা হয়েছে। শনিবার রাজ্যটিতে করোনার সংক্রমণ তীব্র রূপ নেওয়ায় এবং টিকায় ঘাটতি থাকার প্রেক্ষাপটে কর্তৃপক্ষ এই লকডাউন জারি করল। ভারতে মার্চ মাসের শেষ দিক থেকেই প্রতিদিন এক লাখেরও বেশি লোক করোনায় সংক্রমিত হচ্ছে।

এ অবস্থায় অনেক রাজ্যই করোনা নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থান নিচ্ছে। মহারাষ্ট্র ও এর রাজধানী মুম্বাইয়ে রেস্টুরেন্টগুলো বন্ধ এবং পাঁচজনের বেশি লোক একত্রে জড়ো হওয়ার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

রাজ্যের সাড়ে ১২ কোটি লোককে এপ্রিলের শেষ নাগাদ শনিবার থেকে প্রতি সপ্তাহান্তে লকডাউনে থাকতে হবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে যেতে পারবে না। এ ছাড়া ছত্তিশগড়ের রায়পুর জেলাতেও ১০ দিনের লকডাউন জারি করা হয়েছে।

মেগাসিটি মুম্বাইয়ে বৃহস্পতিবার ৭১টি বেসরকারি হাসপাতালের মধ্যে ২৫টিতে টিকা সরবরাহে ঘাটতি ছিল। বিশ্বের বৃহত্তম টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউটের সিইও টিকা উৎপাদন বিষয়ে খুব চাপের মধ্যে রয়েছে বলে সতর্ক করেন।

কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোটায় প্রায় ৮০ লাখ নাগরিককে ঘরে থাকার ও করোনা বিধিনিষেধ পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। করোনার তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলা করছে ল্যাটিন আমেরিকার দেশটি। দেশটির সব বড় শহরে ইতোমধ্যে কারফিউ চলছে।

শুক্রবার থেকে রাত্রিকালীন কারফিউ দিয়েছে আর্জেন্টিনা। আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এই কারফিউ। আর্জেন্টিনা ও কলম্বিয়া দুই দেশ মিলে প্রায় ২৫ লাখ করোনা আক্রান্ত হয়েছে। পুরো ফ্রান্সে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। জার্মানিতে বেশকিছু রাজ্যে মানুষের চলাচল ও বাণিজ্যে কড়াকড়ি আরোপ করার চেষ্টা করছে দেশটির সরকার।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের চতুর্থ ঢেউ রুখতে ইরানের অধিকাংশ অঞ্চলে শনিবার থেকে ১০ দিনের লকডাউন জারি করা হয়েছে। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে রয়টার্স।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আলিরেজা রাইসি জানিয়েছেন, ইরানের ৩১টি প্রদেশের ২৩টিতে এই লকডাউন কার্যকর হবে। লকডাউনে ব্যবসা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, থিয়েটার ও খেলাধুলার অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে এবং বুধবার থেকে শুরু হওয়া পবিত্র রমজান মাসে লোকজনের জড়ো হওয়া নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

ইরানে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ২০ লাখ ছাড়িয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত সপ্তাহ থেকে নতুন করে দৈনিক সংক্রমণ ২০ হাজারের বেশি হচ্ছে। এছাড়া করোনায় মোট মৃত্যু হয়েছে ৬৪ হাজারেরও বেশি।

টেলিভিশনে দেওয়া বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেন, ‘দুঃখজনকভাবে, আমরা আজ চতুর্থ ঢেউয়ে প্রবেশ করেছি।’ নতুন করে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য তিনি যুক্তরাজ্যে পাওয়া ভাইরাসের ধরনটিকে দায়ী করেন, যা এ বছরের শুরুর দিকে প্রতিবেশী ইরাক থেকে ইরানে ছড়িয়ে পড়েছে।

 

সুত্রঃ যুগান্তর