দেবীর বোধনের মধ্য দিয়ে রাজশাহীতে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক:
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। আজ বৃহস্পতিবার দেবীর বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে পূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা।
ঢাকের ঢোল, কাঁসর ঘণ্টা আর শাঁখের ধ্বনিতে মুখর হয়ে উঠেছে পূজামণ্ডপ। তবে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে পূজামণ্ডপের আয়োজন এবার অনেকটাই সীমাবদ্ধ থাকছে। এবার হচ্ছে না মেলা, শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
পরিস্থিতি বিবেচনায় সন্ধ্যা আরতির পর মণ্ডপে দর্শনার্থী প্রবেশ বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পূজা উদযাপন পরিষদ। পূজায় মায়ের কাছে প্রার্থনা থাকবে তিনি যেন পুরো পৃথিবীর মানুষকে সকল অমঙ্গল থেকে রক্ষা করেন।
রাজশাহী হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার ঘোষ বলেন, রাজশাহী জেলা ও মহানগর মিলে ৪৭৮টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে জেলায় ৪০৮টি ও নগরে ৭০টি মণ্ডপে এ পূজা হবে।করোনাভাইরাস মহামারির কারণে পূজামণ্ডপের আয়োজন এবার অনেকটাই সীমাবদ্ধ থাকছে। এবার উৎসব নয়, আয়োজন হয়েছে পূজার।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর ইফতেখায়ের আলম বলেন, এবারের পূজায় স্বাস্থ্যবিধির ওপরে গুরুত্ব দেওয়ার পাশাপাশি নিরাপত্তার সকল ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এবারের দুর্গাপূজায় ২৬টি নির্দেশনা কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে, আরএমপির মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি বিবেচনায় সরকারি নির্দেশনাসমূহ প্রতিপালনসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উদ্যাপন উপলক্ষে রাজশাহী মহানগর এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় আরএমপি কমিশনার ২২ অক্টোবর থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত সকল প্রকার অস্ত্র বহন, আতশবাজি, পটকা ফুটানো, বিস্ফোরকদ্রব্য বহন, সংরক্ষণ, ক্রয়-বিক্রয়, ব্যবহার এবং প্রতিমা বিসর্জনের সময় উচ্চস্বরে মাইক বাজানো ও গান-বাজনা নিষিদ্ধ করেছেন।
এছাড়া অর্পিত ক্ষমতাবলে তিনি পূজামন্ডপ ও তার আশেপাশে এবং প্রতিমা বিসর্জনকালে যে কোন ধরণের মাদকদ্রব্য বিক্রয় নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। নির্দেশনা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, পঞ্জিকা অনুযায়ী এবার মহালয়া হয় ১৭ সেপ্টেম্বর। কিন্তু পঞ্জিকার হিসাবে এবার আশ্বিন মাস ‘মল মাস’, মানে অশুভ মাস। সে কারণে এবার আশ্বিনে দেবীর পূজা হয়নি। পূজা হচ্ছে কার্তিক মাসে। সেই হিসাবে এবার দেবী দুর্গা ‘মর্ত্যে এসেছে’ মহালয়ার ৩৫ দিন পরে। তাই ২২ অক্টোবর মহাষষ্ঠী তিথিতে হয়েছে বোধন। পরদিন সপ্তমী পূজার মাধ্যমে শুরু হবে দুর্গোৎসবের মূল আচার অনুষ্ঠান। আগামী ২৬ অক্টোবর মহাদশমীতে বিসর্জনে শেষ হবে দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।