মঙ্গলবার , ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | ১৪ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরীর খবর
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

দুর্নীতির দায়ে চার্জশীটভূক্ত আসামি হয়েও স্বপদে বহাল আরডিএ’র সহকারী প্রকৌশলী

Paris
সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৯ ১০:১৫ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীর উন্নয়ন সংস্থার সহকারী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশীট) দাখিল হওয়ার পরেও অবৈধভাবে তাঁকে স্বপদে বহাল রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সরকারি পরিপত্র লঙ্ঘন করে শেখ কামরুজ্জামান নামের ওই কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত না করে কেবলমাত্র আইনজীবীর মতামতের ভিত্তিতে স্বপদে বহাল রাখা হয়েছে। আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়ার প্রায় দুই বছর হতে চললেও এখনো একই পদে বহাল আছেন শেখ কামরুজ্জামান। এ নিয়ে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে আরডিএ’র কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে। বিষয়টি নিয়ে তাঁরা ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন।
বিষয়টি স্বীকার করে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বলেন, ‘আগের চেয়ারম্যান স্যারেরা তাঁকে কেবলমাত্র আইনজীবীর মতামতের ওপর ভিত্তি করে স্বপদে বহাল রেখেছেন। যেহেতু মামলাটি বিচারাধীন আছে, সে ক্ষেত্রে বিচার কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওই কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা যাবে না বলে মতামত দিয়েছেন আইনজীবীরা। এ কারণে তিনি এখনো ওই পদে বহাল রয়েছেন। তবে আমরা দ্রুত বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে মতামত চাইবো। তার পর মন্ত্রণালয়ের দেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনার (তদন্ত) এএফএম আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত রাজশাহী মহানগর বিশেষ জজ আদালতে দাখিলকৃত অভিযোগপত্রে (চার্জসীট) উল্লেখ করা হয়, রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সহকারী প্রকৌশলীর মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে ২০০৪ সালে যাকে (শেখ কামরুজ্জামান) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তিনি ১৯৯৩ সালে মানবিক বিভাগে প্রাইভেট পরীক্ষা দিয়ে এসএসসি পাশ করেন। পরবর্তিতে পলিটেকনিক হতে ডিপ্লোমা পাশ করেন তিনি। অথচ ওই নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় যারা উতীর্ণ হয়েছিলেন তাঁরা সকলেই ছিলেন বিএসসি (সিভিল ইঞ্জিনিয়ার) ডিগ্রিধারী যোগ্য প্রার্থী।

অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, নিয়োগের জন্য ২০০৪ সালের ১৬ আগস্ট বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সহকারী প্রকৌশলীসহ ৭টি পদের জন্য লিখিত পলীক্ষার শর্ত দেওয়া হয়। সেই অনুযায়ী ওই বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ১৯ সেপ্টেম্বর লিখিত পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করা হয়। লিখিত পরীক্ষায় সহকারী প্রকৌশলী পদে উতীর্ণ হন ৫ জন। তাঁরা হলেন, সাজ্জাদ হোসেন হোসেন, কাজেম উদ্দীন, মিনহাজ উদ্দীন আহমেদ, শাহীন ইবনে রফিক এবং এএসএম রাশেদুর রহমান। এর পর একই দিনে লিখিত পরীক্ষার ফলাফল অনিবার্য কারণবশত বাতিল করা হয় এবং লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেওয়া সকল প্রার্থীকে পরবর্তি ২১ সেপ্টেম্বর সাক্ষাতকার/ মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর অসৎ উদ্দেশ্যে শুধুমাত্র এক ও দুই নম্বর আসামির ব্যক্তিগত লাভবান হওয়ার জন্য সহকারী প্রকৌশলী পদে কোনো কারণ ছাড়ায় গৃহীত লিখিত পরীক্ষা বাতিল করে শুধুমাত্র মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে পছন্দমত শেখ কামরুজ্জামানকে চূড়ান্ত নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এই মামলায় আরো যে দু’জনকে অভিযুক্ত করা হয় তাঁরা হলেন, আরডিএ’র সাবেক চেয়ারম্যান (তৎকালীন) আব্দুল মান্নান ও সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুর রব জোয়ার্দ্দার।

এদিকে ২০১২ সালের ৯ এপ্রিল গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের এক স্বারকে বলা হয়, দুর্নীতি মামলায় যে সকল আসামির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দাখিল করা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে চাকরি বিধি ও সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চাকরি হতে সাময়িকভাবে বরখাস্তকরণ এবং গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে অবহিত করতে হবে মন্ত্রণালয়কে। কিন্তু গত বছরের ২ জানুয়ারি রাজশাহীর বিশেষ জজ আদালতে দুদক থেকে আরডিএর সহকারী প্রকৌশলী শেখ কামরুজ্জামানসহ তৎকালীন চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুর রব জোয়ার্দ্দারের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশীট) দাখিল হওয়ার পরেও এখনো বহাল তবিয়তে আছেন শেখ কামরুজ্জামান। তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত না করে উল্টো আরডিএর প্যানেল আইনজীবীর মতামত চাওয়া হয়। এরপর আইনজীবী মতামত দেন, যেহেতু মামলাটি বিচারাধীন সেহেতু বিচারকার্য শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে বহিস্কার করা যাবে না।

জানা গেছে, আইনজীবীর এই মাতমতের আগে উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশন দাখিল করেন সহকারী প্রকৌশলী শেখ কামরুজ্জামান। তবে ইে আবেদনের পরিপ্রক্ষিতে আদালত ৪ সপ্তাহের জন্য মামলাটি স্থগিত করার নির্দেশ দেন। তবে এরই মধ্যে চার সপ্তাহ অতিক্রম হওয়ার প্রায় বছর পার হয়ে যাওয়া পুনরায় মামলাটি বিচারকাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু শেখ কামরুজ্জামান এখনো ওই পদেই বহাল রয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শেখ কামরুজ্জামান  বলেন, ‘এর আগেও একই বিষয়ে দুদক থেকে তদন্ত করা হয়েছিল। কিন্তু তখন আমার বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ না পাওয়ায় আদালত মামলাটি খারিজ করে দেন। কিন্তু পরিবর্তিতে একই অভিযোগের ভিত্তিতে আবারো দুদক তদন্ত করে অভিযোগপত্র দিয়েছে। এবারো উচ্চ আদালত অভিযোগটির ওপর প্রথমে চার সপ্তাহের জন্য এবং পরবর্তিতে স্থায়ীভাবে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। কাজেই আমার বিরুদ্ধে অভিযোগটি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।’

স/আর

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর