দুর্গাপুরে সরকারের বেঁধে দেওয়া নিয়ম মানছে না

দুর্গাপুর প্রতিনিধি:

প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দিনদিন বেড়েই চলেছে। মহাবিপর্যয়ের মুখে পড়েছে দেশ। এমন কঠিন পরিস্থিতিতে রাজশাহী দুর্গাপুরেও বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। এই উপজেলায় এই পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ৭জন। এর মধ্যে একজন স্থানীয় সাংবাদিক ও বাকিরা সবাই ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে নিজ উপজেলায় আশা ব্যবসায়ী ও চাকরিজীবি। সংক্রমিত সবাই পুরুষ।

উপজেলার ব্যস্ততম বাণিজ্য এলাকায় ও হাটে বাজারে নমুনা পরীক্ষা না করেই অনেকেই করোনার উপসর্গ নিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া আক্রান্ত পরিবারের সদস্যরা নিয়ম না মেনে পাড়া মহল্লায়  ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলেও জানা গেছে। ফলে লম্বা হচ্ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। এ পরিস্থিতিতে থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে মাস্ক ব্যবহারসহ স্বাস্থ্যবিধি মানতে বিভিন্ন প্রচারণা ও অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। করোনা প্রতিরোধে দিনে রাতে পুলিশের টহল অব্যাহত থাকলেও মনেপ্রাণে সতর্ক হচ্ছেনা মানুষ। সরকারের বেঁধে দেওয়া নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কেউ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ বা খুলছেন না। সেই সাথে সামাজিক দূরত্বেরও কোন বালাই নেই। একসঙ্গে গাদাগাদি করে ক্রেতারা তাদের প্রয়োজনীয় পণ্য কিনছেন। সকাল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বিভিন্ন দোকানপাট খোলা থাকছে।

অনেকেই আবার বলছেন বাজারে প্রশাসনের তেমন টহল বা অভিযান না থাকায় এমন সুযোগ কাজে লাগিয়ে রাতভর ব্যবসা করছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। স্থানীয় সচেতন অনেকেই জানান, পুলিশ টহলের সময় মানুষ কিছুটা নিয়ম মানলেও চলে গেলে আর মানেনা। সরকারের বেঁধে দেওয়ার সময়ের পরেও অর্ধেক সাটার বন্ধ করে আবার কেউ কেউ পুরো সাটার খোলা রেখে রাত ৮টা পর্যন্ত ব্যবসা পরিচালনা করে চলেছেন। এসব দোকানপাট বন্ধ করতে মাঝেমধ্যেই পুলিশকে মাঠে নামতে হচ্ছে। এ কঠিন অবস্থা চলতে থাকলে এলাকায় করোনা সংক্রমণ বেড়ে প্রকট হবে।

এদিকে সবজি ও মাছ বাজারেও নেই সামাজিক দূরত্ব। পুর্বের নিয়মেই চলছে হাট বাজার ও কেনা কাটা। ফলে বোঝার উপায় নেই এটি করোনা কাল। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবারপরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আসাদুজ্জামান বলেন, উপজেলায় এ পর্যন্ত ২৫৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এরমধ্যে ২৩৬ জন নেগেটিভ এবং ০৭ জনের করোনা পজেটিভ। বাকী ২১ জনের রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি। আক্রান্তদের মধ্যে ৩জন সুস্থ হয়েছেন।

দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খুরশিদা বানু কনা বলেন, করোনার বিস্তার ঠেকাতে পুলিশ প্রশাসন সর্বদা মাঠে রয়েছে। এই করোনা ভাইরাস সচেতনতায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মহসীন মৃধা বলেন, নির্ধারিত সময়ের পরেও দোকানপাট খোলা থাকলে আমরা প্রয়োজনীয়ে ব্যবস্থা নেবো। এছাড়াও আমার মাস্ক ব্যবহার না করায় এবং স্বাস্থ্যবিধি না মানায় বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা আদায় করছি। তারপরও মানুষ আশানুরুপভাবে সচেতন হচ্ছেনা।