শুক্রবার , ১১ অক্টোবর ২০২৪ | ২৬শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

দুর্গাপুরে ৩৫ বিঘা পুকুরসহ ৪৩ বিঘা জমি ভোগ-দখল করেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক

Paris
অক্টোবর ১১, ২০২৪ ১২:২৭ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

৩৫ বিঘা পুকুরসহ মোট ৪৩ বিঘা জমি রয়েছে রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার বখ্তিয়ারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের। স্কুলটির প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন তার ইচ্ছা মতো চালান এই ‘জমিদারি’। সরকারি বিধিবিধান উপেক্ষা করে বছরের পর বছর আর্থিক দুর্নীতি, শিক্ষকদের সঙ্গে নিষ্ঠুর আচরণসহ নানা অনিয়ম করলেও দেখার যেন কেউ নেই। শিক্ষকরা বলছেন, নিজে ‘জমিদার’ সেজে প্রধান শিক্ষক আমাদের প্রজা বানিয়ে রেখেছেন।

প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিনের এই স্বেচ্ছাচারিতায় ক্ষুব্ধ হয়ে বিদ্যালয়টির ১১ জন শিক্ষক তার বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচার ও শিক্ষকদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ করেন। ২০২১ সালে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের রাজশাহী অঞ্চলের উপ-পরিচালকের কাছে অভিযোগ করেন তারা। তদন্তের পর প্রধান শিক্ষকের স্বেচ্ছারিতার প্রমাণ পেয়েছে সরকার।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালে অভিযোগ পাওয়ার পর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের রাজশাহীর অঞ্চলের উপ-পরিচালক দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটিতে ছিলেন রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহা. জাহীদুল হক এবং পুঠিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার লায়লা আখতার জাহান।২০২১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সরেজমিন তদন্ত করে কমিটি উপরিচালকের কাছে প্রতিবেদন দেয় ২০২২ সালের ১০ আগস্ট।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজশাহী জেলার দুর্গাপুর উপজেলার বখতিয়ারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অস্বাভাবিক ও অশালীন আচরণ, আর্থিক দুর্নীতি ও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে বিদ্যালয়ের ১১ জন সহকারী শিক্ষক মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অদিফতরের রাজশাহী অঞ্চলের উপ-পরিচালককে আবেদন দাখিল করেন।

অভিযোগকারী শিক্ষকরা হচ্ছেন—সহকারী শিক্ষক আরিফা খাতুন, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. কাজিম উদ্দিন, মো. এনামুল হক, রেহেনা পারভীন, গোলেনুর খাতুন, এম এ মান্নান, মাসুরা খাতুন, মো. মকসেদ আলী এবং সোহানা বারী।

সহকারী শিক্ষকরা বিনা কারণে চাকরিচ্যুত করার হুমকি, সরকারি বিধি মোতাবেক শিক্ষকদের প্রাপ্য স্কেল পরিবর্তনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা ছাড়াও আর্থিক দুর্নীতি করে বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগসহ ১৬টি অভিযোগ উত্থাপন করেন।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সরেজমিন তদন্তের সময় প্রধান শিক্ষকসহ সব সহকারী শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন। প্রধান শিক্ষকসহ সব শিক্ষকের বক্তব্য, প্রধান শিক্ষকের ব্যাখ্যা এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পর্যালোচনা করা হয়েছে। অধিকতর পর্যালোচনার জন্য কিছু কাগজপত্রের কপি প্রধান শিক্ষককে জমা দিতে বলা হলেও তিনি চাহিদা মতো সহযোগিতা করেননি। যতটুকু পাওয়া গেছে তার ওপর ভিত্তি করেই এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

বিদ্যালয়ের মোট জমির পরিমাণ পুকুরসহ ৪৩ বিঘা। বিদ্যালয় ভবন ও খেলার মাঠ রয়েছে ১৬৭ শতাংশ বা ৫ বিঘার বেশি। ৩৫ বিঘা জমিতে রয়েছে পুকুর। ধানী জমি রয়েছে ২২ শতাংশ। ভিটা জমি রয়েছে ২৩ শতাংশ। আর অনাবাদী জমি ৫৪ শতাংশ। পুকুর থেকে প্রতি বছর এই বিদ্যালয়ের আয় প্রায় ১০ লাখ টাকা। ওই টাকা বিদ্যালয়ের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে না রেখে প্রধান শিক্ষক নিজের জিম্মায় রেখে নিজ ইচ্ছায় খরচ করেন।

কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত বইতে লিজ সংক্রান্ত কোনও সিদ্ধান্ত দেখা যায়নি। ব্যাংক স্টেটমেন্ট পরীক্ষা করে দেখা যায়— জমিজমা থেকে আয়ের কোনও অর্থ ব্যাংকে জমা হয়নি। ক্যাশবুকে একই দিনে আয় এবং ব্যয় দেখিয়ে সমতা দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষকের ব্যাখ্যা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ব্যাংকে রাখার সুযোগ হয় না, এক দিক দিয়ে আসে আরেক দিক দিয়ে খরচ হয়ে যায়।’ প্রধান শিক্ষক অন্য উৎস থেকে পাওয়া অর্থ দিয়ে জমির গর্ত ভরাট করানো জায়গা দেখিয়ে জানান, বিদ্যালয়ের অর্থ দিয়ে গর্ত ভরাট করেছেন। এরকম বহু অসত্য তথ্য দিয়ে তিনি তদন্ত টিমকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন।

তদন্ত প্রতিবেদনের সারমর্ম অংশে বলা হয়— দুর্গাপুর মৎস্য চাষের জন্য প্রসিদ্ধ একটি এলাকা। দেশের বিভিন্ন জায়গায় এই এলাকা থেকে মাছ সরবরাহ করা হয়ে থাকে। ফলে ধানের জমি কেটে অনেকেই পুকুর খনন করেছেন, বিদ্যালয়ও তাই করেছে। ধারণা করা যায় যে, পুকুর বিদ্যালয়ের বড় একটি আয়ের উৎস। কিন্তু আয়ের কোনও প্রকৃত তথ্য পাওয়া যায়নি। অথবা কৌশলে গোপন রাখা হয়েছে। পুকুর বা জমি থেকে পাওয়া কোনও অর্থ ব্যাংকে না রেখে হাতে রেখে খরচ করা হয়। বিদ্যালয়ের পুকুরসহ ৪৩ বিঘা জমি লিজ দেওয়ার সময় প্রধান শিক্ষক সরকারি বিধি-বিধানের তোয়াক্কা না করে খেয়াল খুশি মতো পছন্দের লোকদের লিজ দিয়েছেন।

তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বিদ্যালয়ের কোনও সঠিক হিসাব-নিকাশ নেই। বিদ্যালয়ের জমা ও খরচের হিসাব-নিকাশ অনুমোদনবিহীন ভাউচার দিয়ে সেরে নেন। কখনই নিরীক্ষণের জন্য অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিটি গঠন করেন না। এ বিষয়টি উদঘাটনের জন্য ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত বই, ক্যাশবুক, ভাউচার, ব্যাংক স্টেটমেন্ট পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়— পুকুর বা জমি লিজ দেওয়ার কোনও সিদ্ধান্ত ম্যানেজিং কমিটিতে নেওয়া হয়নি। ক্যাশবুকে একই দিনে সব আয়-ব্যয় সমান দেখিয়ে সমতা আনা হয়েছে। ভাউচারগুলো ম্যানেজিং কমিটির অনুমেদিত নয় এবং পুকুর বা জমি থেকে কোনও আয় ব্যাংকে জমা করা হয়নি।

এনটিআরসিএ সুপারিশের নিয়োগেও অর্থ আদায়:

বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ ও প্রত্যায়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) ২০১৯ সালে নিয়োগ করা বাংলা বিষয়ের সহকারী শিক্ষককে চাকরিতে যোগদানের সময় ১৫টি চেয়ার, একটি বড় ফাইল কেবিনেট, ১৫টি তোয়ালে ও দুটি টুল দিতে বাধ্য করেন প্রধান শিক্ষক— যার মূল্য ৪৫ হাজার ৫০০ টাকা। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক কমিটিতে বলেছেন, তিনি এগুলো ধার হিসেবে নিয়েছেন। ধার পরিশোধ করা হয়েছে কিনা, তদন্ত কমিটি প্রধান শিক্ষকের কাছে জানতে চাইলে, তিনি চুপ থাকেন।

এনটিআরসিএ’র শূন্য পদে খণ্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ:

এনটিআরসিএ বরাবর শিক্ষকের চাহিদা না পাঠিয়ে এমপিও শূন্যপদে খণ্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন। বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক, শরীর চর্চা শিক্ষকের পদ এখনও শূন্য। অন্যান্য শূন্যপদ পূরণ করেছেন প্রধান শিক্ষক নিজের ইচ্ছায়। এনটিআরসিএ সনদ নেই এবং প্রশিক্ষণ নেই— এমন শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছেন ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে, ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে যার কোনও যোগ্যতা নেই।

বিদ্যালয় জিজিটাল করার নামে অর্থ আত্মসাৎ:

বিদ্যালয়ের কার্যক্রম ডিজিটাল করার নামে শিক্ষার্থী প্রতি ২৫০ টাকা আদায় করেছেন প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা তদন্ত কমিটিকে জানান— পাঁচ বছর ধরে ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে এই টাকা আদায় করছেন তিনি। সহকারী শিক্ষকদের মাধ্যমে ৫৩ হাজার টাকা নিয়েছেন প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন।

কথায় কথায় চাকরিচ্যুতির হুমকি:

কথায় কথায় প্রধান শিক্ষক সহকারী শিক্ষকদের চাকরিচ্যুতির হুমকি দেন এবং অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করেন। শিক্ষকদের মানসিক নির্যাতন করা নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়। বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মো. হাকিম সরকার প্রধান শিক্ষকের দুষ্কর্মের সহযোগিতা না করায় তাকে নির্মমভাবে মানসিক নির্যাতন করেন এবং ৯ বছর চাকরিকাল থাকার পরও ২০১৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর সেচ্ছায় অবসর নিতে বাধ্য করেন, যা প্রধান শিক্ষকের হীনম্মন্যতা ও নিষ্ঠুর আচরণ। শিক্ষকদের সঙ্গে এসব আচরণের বিষয়ে তদন্ত কমিটি প্রধান শিক্ষকের কাছে জানতে চাইলে তিনি তা অস্বীকার করেন। তবে সহকারী শিক্ষকরা দুটি ভিডিও ক্রিপ জমা দেন। ভিডিও’র প্রমাণ তুলে ধরা হয় তদন্ত প্রতিবেদনেও। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, প্রধান শিক্ষক সহকারী শিক্ষকদের লাফিয়ে লাফিয়ে আঙুল উঁচু করে একজন শিক্ষককে সবার সামনে বকাবকি করছেন।

তদন্তে আরও অভিযোগের প্রমাণ:

ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ ২০১৮ সালে শেষ হলেও ২০২১ সাল পর্যন্ত কোনও কমিটি গঠন না করেই প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেছেন ইচ্ছে মতো। তিন জন সহকারী শিক্ষকের উচ্চতর গ্রেড (টাইম স্কেল) প্রাপ্যতা থাকলেও দেননি প্রধান শিক্ষক। শিক্ষকরা উচ্চতর গ্রেডের ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানালে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন তিনি। তাছাড়া প্রধান শিক্ষক অনলাইনের কাজকর্ম কিছুই জানেন না।

বাংলা বিষয়ের সহকারী শিক্ষক সোহানা বারী এবং ইসলাম ধর্ম বিষয়ের সহকারী শিক্ষক মো. মামুনুর রশীদ বিএড কোর্সে ভর্তির জন্য আবেদন করলেও তাদের বিএড কোর্সে ভর্তি হতে দেননি (২০২১ সাল পর্যন্ত) প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠনের জন্য শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনে কোনও শিক্ষকের মতামত না নিয়েই নিজের ইচ্ছা মতো প্রতিনিধি মনোয়ন দেন মো. আলাউদ্দিন। তিনি সহকারী শিক্ষকদের কাছ থেকে টাকা ধারের নাম করে টাকা নিয়ে বিদ্যালয়ের জিনিসপত্র কেনেন এবং ভাউচার নেন। এভাবে শিক্ষকদের এবং প্রতিষ্ঠানের টাকা আত্মসাৎ করেন। প্রধান শিক্ষক বৈঠকের মাঝে সহকারী শিক্ষকদের প্রকাশ্যে অপমান করেন।

তদন্ত প্রতিবেদনের সার্বিক মন্তব্যে বলা হয়, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনা বখতিয়ারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের প্রায় সব অভিযোগ সত্য। সাক্ষ্য প্রমাণাদি ও নথি পর্যালোচনায়ও প্রায় সব অভিযোগ সত্য বলে প্রমাণিত হয়। অভিযোগপত্রে ১৬টি দফা রয়েছে, এগুলোকে মোটামোটি তিন ভাবে ভাগ করা যায়। যেমন আর্থিক, প্রশাসনিক ও আচরণগত। তদন্ত প্রতিবেদের বলা হয়, আর্থিক, প্রশাসনিক ও আচরণগত সব অভিযোগের সত্যতা রয়েছে বলে তদন্ত কমিটির কাছে প্রতীয়মান হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষক বলেন, বিদ্যালয়ের বর্তমান ছাত্রছাত্রী চারশ। টিউশন ফি এবং অন্যান্য খরচ বাবদ শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে বছরে আয় হয় ৩ লাখ টাকা। এই টাকাও ব্যাংকের মাধ্যমে খরচ না করে সরাসরি ব্যয় করা হয়। আর পুকুর থেকে আয় হয় বছরে ১০ লাখ টাকা। এই টাকাও ব্যাংকে জমা না দিয়ে প্রধান শিক্ষক ইচ্ছা মতো নগদ খরচ করেন।

২০২১ সালে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্তের সময়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি দেলসাদ আলী দেওয়ান মারা গেছেন। পরে দুই দফায় সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন মো. নজরুল ইসলাম। একাধিকবার চেষ্টা করেও তার নম্বর বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। মো. নজরুল ইসলাম স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা। তিনি বর্তমানে মোবাইল ফোন বন্ধ করে গা ঢাকা দিয়েছেন বলে জানান স্থানীয় লোকজন।

বর্তমানে অ্যাডহক কমিটির সভাপতি মো. রিয়াজুল ইসলাম। তার বক্তব্য জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। মেসেজ পাঠানো হলেও তার জবাব দেননি।

প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য:

তদন্ত প্রতিবেদন ও অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘এসব অভিযোগ বানোয়াট। দুদক তদন্ত করেছিল, অভিযোগ প্রমাণ হয়নি।’ পুকুর লিজ দেওয়ায় ক্ষেত্রে নিয়ম মানা হয় না প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘অন্য মালিকের সঙ্গে যৌথভাবে পুকুর আছে। আলাদা করে লিজ দেওয়ার সুযোগ নেই তাই।’ ব্যাংকে জমা না রেখে নিজের কাছে টাকা রাখা ও খরচ করার অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে প্রধান শিক্ষক কোনও জবাব না দিয়ে শরিফুল ইসলাম নামে অপর এক ব্যক্তিকে তার ফোনটি ধরিয়ে দেন।

শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন আমার গ্রামের মানুষ। ওনার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আপনার কাছে দেওয়া হয়েছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বানোয়াট।’ স্কুলের সঙ্গে শরিফুলের কী সম্পর্ক জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি একটি ক্লাবের সদস্য এবং ওই স্কুলের একজন সাবেক ছাত্র।’

প্রসঙ্গত, বখ্তিয়ারপুর উচ্চবিদ্যালয়টি প্রতিষ্টিত হয় ১৯৪৮ সালে। দুর্গাপুরেই এই অঞ্চলে মাধ্যমিক পর্যায়ের কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় স্থানীয় জনগণের সাহায্য-সহযোগিতা ও দানে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে ওঠে। ওই সময় জমি দান করেন স্থানীয় লোজকন। বখতিয়ারপুর ছাড়াও আশপাশের গ্রামের মানুষের দান করা জমিতে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে ওঠে।

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর