দুবাইয়ে বাংলাদেশি শ্রমিকের পাশে সুজানা

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

করোনাভাইরাসের ভয়াল থাবা প্রায় পৃথিবীজুড়ে। লকডাউন থাকার কারণে অনেক দেশেই বিদেশি শ্রমিকেরা কাজ করতে পারছেন না। অনেকে খাদ্যসংকটে পড়েছেন। তাঁদের মধ্যে আছেন অনেক বাংলাদেশি শ্রমিকও। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই শহরে এ ধরনের সমস্যায় পড়া বেশ কিছু বাংলাদেশি শ্রমিকের পাশে দাঁড়ালেন বাংলাদেশি মডেল ও অভিনয়শিল্পী সুজানা জাফর। সেখানকার দুটি জায়গায় অবস্থানরত ২৮ জন শ্রমিককে প্রায় ২০ দিনের খাদ্যসামগ্রী দেন তিনি।

সুজানা বলেন, ‘আমি বুটিক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এদিকে দেখলাম শুটিংও বাতিল। তাই ১৮ মার্চ দুবাই চলে আসি। ঈদের আগে বাংলাদেশে আমার আটটি প্রদর্শনী আছে। মূলত এ কারণেই কাপড় সংগ্রহ করতে দুবাইয়ে আসা। এসেই আটকে গেছি।’

সুজানা জানান, বুটিক হাউস ব্যবসার কারণে বছরের বেশ কয়েকবার দুবাই আসা–যাওয়া করেন তিনি।

দুবাই যাওয়ার পরপরই করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে দুবাই লকডাউন হয়ে যায়। এ কারণে আর ফিরতে পারেননি তিনি। সেখানে তাঁর খালা ও কাজিনদের কাছে থাকছেন। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দুবাই থেকে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে সুজানা দুবাইয়ে আটকে থাকার কথা জানান।

প্রথম আলোকে সুজানা বলেন, ‘কয়েক দিন আগে সহযোগিতা চেয়ে আমার ফেসবুক মেসেঞ্জারে দুটি এসএমএস আসে। জানতে পারি, তাঁরা বাংলাদেশি শ্রমিক, আমার ফেসবুক-ফলোয়ার। লকডাউনের কারণে কাজ বন্ধ। খাদ্যসংকটে আছেন তাঁরা। কিন্তু আমি তাঁদের চিনি না, তাঁদের সম্পর্কে জানি না। নিশ্চিত হওয়ার জন্য তাঁদের পরিচয়পত্রের ছবি পাঠাতে বললাম। তাঁরা পাঠালেন। দেখলাম ঘটনাটি সত্য। দুবাইয়ের ডেইরা এলাকায় ১৩ জন এবং বানিয়াস এলাকায় ১৫ জন থাকেন।’সুজানা জাফর। ছবি: ইনস্টাগ্রামসুজানা আরও জানান, তাঁরা সবাই ২০ দিনের মতো ঘরবন্দী অবস্থায় আছেন। দেশে বিপদে পড়লে আত্মীয়স্বজন, বন্ধুরা পাশে থাকেন। কিন্তু এই বিদেশের মাটিতে তাঁদের পাশে কেউ নেই। তাঁদের অসহায়ত্বের বিষয়টি সুজানার খুব খারাপ লেগেছে। জানার পরপরই তাড়াতাড়ি সুপারশপ থেকে খাবার কিনে এক কাজিনকে দিয়ে শ্রমিকদের কাছে খাবার পাঠিয়ে দেন; যে খাবার দিয়েছেন, তাতে ২০ দিনের মতো চলে যাবে বলেও জানান সুজানা।

এ অভিনয়শিল্পী আরও বলেন, ‘এ অবস্থার পরিবর্তন না হলে আমি আরও সহযোগিতা করতে চাই তাঁদের। এ ছাড়া দুবাইপ্রবাসী আরও যদি কেউ এমন অবস্থায় থাকেন, আমার সঙ্গে যোগাযোগ করলে চেষ্টা করব পাশে থাকতে।’

সুজানার আহ্বান, দেশের বাইরে বাংলাদেশের অনেক শ্রমিক এ ধরনের বিপদে আছেন। আশপাশে যদি কোনো সচ্ছল ভাইবোনেরা বসবাস করেন, তাঁরা যেন বিপদে পড়া শ্রমিক ভাইদের সাধ্যমতো সহযোগিতা করেন। অনেক দিন পর একটি নাটকে কাজ করার কথা ছিল সুজানার। মোশাররফ করিমের বিপরীতে নাটকটি পরিচালনা করার কথা ছিল মাবরুর রশীদের। গত ১৮ ও ১৯ মার্চ ঢাকায় শুটিং হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে শুটিং বাতিল হয়েছে।সুজানা জাফর। ছবি: ইনস্টাগ্রামনিয়মিত নাটকে কাজ করেন না কেন? জানতে চাইলে এ অভিনেত্রী বলেন, ‘বছর তিনেক হলো বুটিক ব্যবসায় বেশি সময় দিচ্ছি। তা ছাড়া একসঙ্গে দুটি কাজ করা কঠিন। কিছুদিন ব্যবসার পাশাপাশি নাটকে কাজ করেছি। কিন্তু ব্যবসায় সমস্যা হচ্ছিল। পরে নাটকে অনেক দিন কাজ করিনি। তবে নতুন করে চিন্তা করেছি, ফাঁকে ফাঁকে এক–দুটি কাজ করব।’

দুবাই থেকে ফিরবেন কবে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, ‘এখন যা অবস্থা, তাতে নিদিষ্ট করে কোনো কিছুই বলা যাচ্ছে না। বিমান তো উড়ছে না। লকডাউন না উঠলে কবে ফিরব বলা মুশকিল।’