মঙ্গলবার , ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

দুধ নাকি দুগ্ধজাতীয় খাবার, কোনটি ভালো?

Paris
সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৪ ১০:০৩ অপরাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক :

দুগ্ধজাতীয় খাবার কারো প্রিয়, কেউ আবার একেবারেই পছন্দ করেন না। এদিকে ক্যালসিয়ামের অন্যতম উৎস এগুলোই। খারাপ বলতে কিছু খাবারে ফ্যাটও বেশি। কিভাবে বুঝে খাবেন, কোনটা কতটা খাবেন, তা নিয়েই আজকের প্রতিবেদন।

চলুন, তাহলে জেনে নেওয়া যাক।
শিশু হোক বা বয়স্ক, দুধ এমনই একটা খাবার, যা সহজপাচ্য ও সহজলভ্য। এ ছাড়া গুণের দিক থেকেও বহুমুখী। শুধু দুধ কেন, দুধের সব উপাদানই পুষ্টির সমাহার।

যদিও সবার সব কিছু ভালো লাগে না। স্বাদে ও গন্ধে দুধ অনেকের কাছেই বাদের খাতায়। তবু সুষম ডায়েটের তালিকায় অন্যতম খাদ্য উপাদান।

কারো দুধ ভালো লাগবে, কারো ঘি-মাখন বা পনির-দই।

এই বিষয়টি ব্যক্তি বিশেষের ওপর নির্ভর করে। অন্যদিকে পুষ্টির বিচারেও খাবার অনুযায়ী পার্থক্য আছে। আপনি দুধ না খেতে চাইলে দই খেতে পারেন। আবার বাড়ির শিশু দুধ খেতে না চাইলেও ছানা বা ক্ষীর খাইয়ে দুধের বিকল্প পুষ্টি পৌঁছে দিতে পারেন। দুধ না দুগ্ধজাত খাবার কোনটা বেশি ভালো, তা জানা জরুরি।

মুখের স্বাদ বদলানোর জন্য মাঝেমধ্যে দুধ দিয়েও আমরা কিছু বানিয়ে খেতে পারি। জেনে নিন কোনটা, কতটা খাবেন এবং কেন খাবেন।
ভালো কোনটি?

দুধ

এই সুষম খাদ্যে ৯ রকম এসেনশিয়াল অ্যামাইনো এসিড রয়েছে। এ ছাড়া প্রোটিন, স্যাচুরেটেড ও আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ভালো কার্বোহাইড্রেট যেমন-ল্যাকটোজ, গ্যালাকটোজ, ভিটামিন-এ, ডি, বি-১২ সমৃদ্ধ দুধ।

দই বা ইয়োগার্ট

দই ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ, ডি, বি-১২ সমৃদ্ধ। কোষ্ঠকাঠিন্য, টাইপ টু ডায়াবেটিস, কার্ডিওভাসকুলাস রোগের ক্ষেত্রেও খাওয়া যেতে পারে। ক্ষতিকারক টক্সিনের হাত থেকে বাঁচায়। এর মধ্যে উপস্থিত প্রোটিন উপাদানগুলো পেশির বৃদ্ধিতে এবং টিস্যু ঠিক রাখতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। কমায় ক্যান্সারের ঝুঁকিও।

ছানা বা পনির

ক্যালসিয়াম ও বায়ো অ্যাকটিভ পেপটাইড-এনজাইম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম কমিয়ে দেয় ক্যান্সারের প্রবণতা, গর্ভবতীদের জন্যও খুব উপকারী। এর পাশাপাশি ছানার পানিও বিশেষ পুষ্টিগুণে ভরা। রাইবোফ্ল্যাবিন নামক ভিটামিনটি শারীরিক বৃদ্ধিতে এবং শক্তির জোগানে গুরুত্বপূর্ণ। হার্টের সমস্যা, হরমোনাল ইমব্যালেন্স, কিডনির সমস্যা, লো ব্লাডপ্রেশারের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাই আটা মাখার সময় কিংবা কোনো ডাল রান্না করার সময় এই পানি ব্যবহার করতে পারেন।

ঘি

অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, ভিটামিন-এ, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিডে ভরপুর এই খাবার। এটি অ্যান্টি-আর্থ্রাইটিস, গাঁটে ব্যথার সমস্যা দূর করে, চুলের স্বাস্থ্য ও ত্বক ভালো রাখে। বাড়ায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও। তবে পর্যাপ্ত পরিমাণে খেলে বিপদ হতে পারে।

মাখন

এতে থাকে ভিটামিন এ, ডি, ই ও ক্যালসিয়াম, যা শরীর সুস্থ রাখে। ক্যালোরি শরীরের এনার্জির ঘাটতি পূরণ করে। এটি চোখ, হাড় ও ত্বকের জন্য উপকারী। তবে বেশি পরিমাণে খাওয়া মোটেই ভালো না। অত্যাধিক স্যাচুরেটেড ফ্যাট ডেকে আনে হার্টের সমস্যা। এ ছাড়া ওজন বাড়ায় এটি। তাই কম পরিমাণে খান সুস্থ থাকবেন। মার্জারিনও খাবারের মধ্যে বুঝেশুনে রাখুন। এতে থাকে ট্রান্স ফ্যাট, যা ভালো কোলেস্টেরল কমিয়ে খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ায়।

মিষ্টি, আইসক্রিম

এতে অত্যধিক পরিমাণে শর্করা ও ক্যালোরির উপস্থিতি শরীরের জন্য বেশি পরিমাণে মোটেই ভালো নয়। মাঝেমধ্যে কিছুদিন অন্তর খেতে পারেন।

চিজ বা মায়োনিজ

এগুলোতে স্যাচুরেটেড ফ্যাট, ট্রান্স ফ্যাট বেশি থাকে। প্রতিদিন এই খাবারগুলো খাওয়া একেবারেই ঠিক নয়, তাই এড়িয়ে চলুন।

পায়েস

পায়েস মানেই আনন্দ! দেশে এই ধারণা চলে আসছে বহুদিন ধরে। এই খাবার বেশি পরিমাণে খেলে হতে পারে হজমের সমস্যা। মাংস খাওয়ার পর খেলে গুরুপাক। এ ছাড়া থাকে প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি। তাই বুঝেশুনে খান।

ক্ষীর-দুধের সর

বেশি পরিমাণে খেলে দেখা যায় হজমের সমস্যা, ডায়েরিয়া, বমি বমি ভাব। শিশুদের ক্ষেত্রে দুধের সর হজম করা একটু কঠিন। তাই দুধ খাওয়ানোর আগে সর তুলে নিন। অন্যদিকে, ক্ষীরে শর্করার ভাগ বেশি থাকায় দেখা ওজন বাড়তে পারে। তাই ডায়াবেটিস থাকলে এই খাবার এড়িয়ে চলুন।

গুঁড়া দুধ বা মিল্ক ক্রিম

শিশুরা মাঝেমধ্যেই রান্নাঘরে চুপি চুপি গিয়ে গুঁড়া দুধ খেয়ে নেয়। স্বাদে অনবদ্য, ছোটবেলার এ নস্টালজিয়া বড় বয়সে মাঝেমধ্যেই ফিরে আসে। এই দুধে অত্যধিক পরিমাণে চিনির উপস্থিতি হার্ট ও ডায়াবেটিসের সমস্যা বাড়ায়। মিল্ক ক্রিম আজকাল ডেজার্ট তৈরিতে বহুল ব্যবহৃত। এতেও কিন্তু ফ্যাটের পরিমাণ খুব বেশি।

কোনটা, কতটা খাবেন?

শরীরে ক্যালসিয়ামের মাত্রা সঠিক পরিমাণে জোগান দিতে দুধের বিকল্প আর কিছু নেই। তবে ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স, অম্বলের সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শে সোয়ামিল্ক কিংবা দই খেতে পারেন। একই রকম উপকার পাবেন। ১ গ্লাস অর্থাৎ ২৫০ এমএল দুধে ৩২৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে। শরীর গঠনের সময় ক্যালসিয়ামের চাহিদা বাড়ে। ৬ থেকে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত চাহিদা থাকে ১৩০০ মিলিগ্রাম। ১৮-৫০ বছর বয়স পর্যন্ত চাহিদা কমে দাঁড়ায় ১০০০ মিলিগ্রামে। আবার ৫০ বছরের ঊর্ধ্বে বিশেষ করে মেয়েদের মেনোপজের পর শরীরে ক্যালসিয়ামের চাহিদা বেড়ে দাঁড়ায় ১৫০০ মিলিগ্রামে। তাই যেকোনো বয়সেই সব সময় ডায়েটে উপযুক্ত ক্যালসিয়াম রাখুন।

১ গ্লাস দুধ, ১ বাটি টক দই (বাড়িতে পাতলে খুব উপকারী), ছানা/পনির (১০০-১৫০ গ্রাম) মিলিয়ে মিশিয়ে রাখুন। অল্প ঘি খেতে পারেন। বয়সকালে অস্ট্রিওস্পোরোসিস, অস্ট্রিওপেনিয়ার মতো সমস্যা থেকে দূরে থাকবেন। তবে মিষ্টি বা আইসক্রিম খেয়ে ক্যালসিয়ামের চাহিদা মিটবে, এমনটা নয়।

 

সূত্র: কালের কণ্ঠ

সর্বশেষ - লাইফ স্টাইল