সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক:
দেশে দুই ডোজ করোনা টিকা নেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৯৮ শতাংশের শরীরে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি পাওয়া গেছে। যারা টিকা নেওয়ার আগেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাদের শরীরে তুলনামূলক বেশি অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে কোভিড-১৯ এবং টিকার ওপর গবেষণাটি পরিচালিত হয়। ‘করোনা টিকা নেওয়ার পর হেমাটোলোজিক্যাল মানদণ্ড এবং অ্যান্টিবডি ট্রিটমেন্ট পরিস্থিতি’ শীর্ষক ওই গবেষণা পরিচালনা করা হয়। এতে সহ-গবেষক হিসেবে যুক্ত ছিলেন বিএসএমএমইউ’র হেমাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. সালাহউদ্দীন শাহ।
গবেষণায় বলা হয়, টিকা নেওয়ার ৬ মাস পার হওয়ার পরে দেখা যায়, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অ্যান্টিবডির পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে। তাদের মধ্যে ৩০ জন টিকা গ্রহীতার ক্ষেত্রে দেখা যায় ৭৩ শতাংশের অ্যান্টিবডির মাত্রা হ্রাস পেয়েছে। গড় অ্যান্টিবডির মাাত্রা ৩৯৬৩ এইউ/এমএল থেকে ৬৭৯২ এইউ/এমএল-এ নেমে এসেছে।
গবেষণায় দুই ডোজ টিকা নেওয়ার এক মাস পর, দুই ডোজ টিকা নেওয়ার ৬ মাস পর এবং বুস্টার ডোজ নেওয়ার এক মাস পর শরীরে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে তৈরি অ্যান্টিবডির মাত্রা পরিমাপ করা হয়। এ প্রক্রিয়ায় ২২৩ জন অংশগ্রহণকারীর ক্ষেত্রে দুই ডোজ টিকা নেওয়ার এক মাস পর, তাদের মধ্যে ৩০ জনের দুই ডোজ টিকা নেওয়ার ৬ মাস পর এবং বুস্টার ডোজ নেওয়ার এক মাস পর অ্যান্টিবডির মাত্রা পরিমাপ করা হয়।
গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের অধিকাংশই স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের সঙ্গে জড়িত। অর্ধেকের বেশি অংশগ্রহণকারী আগে থেকেই ডায়াটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হাঁপানিসহ অন্যান্য রোগে ভুগছিলেন। তবে এ ধরনের রোগের কারণে অ্যান্টিবডি তৈরিতে কোনো পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়নি। ৪২ শতাংশ অংশগ্রহণকারী টিকা নেওয়ার পর মৃদু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা জানিয়েছিলেন। তবে রক্ত জমাট বাঁধা বা অন্য কোনো জটিল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া গবেষণাকালে দেখা যায়নি। গবেষণায় দুজন টিকা গ্রহীতার শরীরে পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডি পাওয়াা যায়নি। বুস্টার নেওয়ার পর শতভাগ অংশগ্রহণকারীদের শরীরে অ্যান্টিবডি পাওয়া যায়।
করোনা মহামারিতে বিশ্বব্যাপী এ পর্যন্ত ৪২ কোটির বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে এবং এ পর্যন্ত প্রায় ৬০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ২০ লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং প্রায় ২৯ হাজার মৃত্যুবরণ করেছেন। বাংলাদেশে কোভিশিল্ড দিয়ে টিকা কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর ফাইজার, মডার্না, সিনোভ্যাকসহ বিভিন্ন টিকা এ কর্মসূচিতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত প্রায় ১০ কোটির বেশি মানুষ টিকার প্রথম ডোজ ও সাড়ে ৭ কোটির বেশি মানুষ দ্বিতীয় ডোজ এবং ৩০ লাখের বেশি মাানুষ টিকার বুস্টার ডোজ নিয়েছেন।
সূত্র:যুগান্তর