দিল্লিতে দশ দিনেই ১০ হাজার শয্যার হাসপাতাল

বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ হাসপাতাল তৈরি হলো ভারতের রাজধানী দিল্লিতে। হাসপাতালটির শয্যাসংখ্যা ১০ হাজার। মাত্র দশদিনে হাসপাতালটি করোনা আক্রান্তদের জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে। ভারতে কোভিড-১৯ সংক্রমণের হটস্পট দিল্লিতে শনাক্তের সংখ্যা ৮৭ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। আক্রান্তদের মধ্যে ২ হাজার ৭৪২ জন মারা গেছেন।

দিল্লি সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ গত ২৫ মার্চ থেকে দেশজুড়ে লকডাউন শুরু হলেও দিল্লি সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি। দুই মাস সময়ের মধ্যে তারা যথেষ্ট পরিমাণ করোনা পরীক্ষা ছাড়াও কনট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের মতো কাজগুলোতে ধীরগতি ছিল দিল্লিতে। তাই আক্রান্তের পরিমাণ এত বেড়েছে। দিল্লিতে শুধু জুনেই দিল্লিতে ৫০ হাজারের বেশি আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে।

হাসপাতালটি চালু করেছে ভারতের দিল্লি রাজ্য প্রশাসন। রাজ্য সরকার জানায়, সরদার প্যাটেল কোভিড কেয়ার সেন্টার অ্যান্ড হসপিটাল নামের এই হাসপাতাল রোববার থেকে প্রাথমিকভাবে দুই হাজার শয্যা নিয়ে সচল হয়েছে। আগামী ৫ জুলাই থেকে শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত হাসপাতালটির কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হবে বলে সোমবার জানিয়েছেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বি এম মিশ্রা।

তিনি বলেন, ‘হাসপাতালটির শয্যাগুলো হালকা হলেও বেশি শক্তিশালী। দুই বছরের ওয়ারেন্টি থাকা এবং ৩০০ কেজি ওজন বহনে সক্ষম শয্যাগুলো পানিরোধী (ওয়াটারপ্রুফ) এবং দাম অনেক কম। প্রতিটির মূল্য ১ হাজার ২০০ রুপি। শয্যাগুলো একত্রিত করা বেশ সহজ এবং যেকোনো মুহূর্তে অর্থাৎ খুব দ্রুতই তা ব্যবহার উপযোগী করে প্রস্তুত করা সম্ভব।’

jagonews24

দিল্লি সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বি এম মিশ্রা বলেন, এসব কারণেই আমরা দশ দিনের মধ্যেই হাসপাতালটি করোনা রোগীদের জন্য অস্থায়ীভাবে প্রস্তুত করতে পেরেছি। অন্য উৎপাদনকারীদের এটি তৈরি করতে কমপক্ষে এর চেয়ে দ্বিগুণ সময় লাগতো। নির্মাতাদের দাবি, শয্যাগুলোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো এর কার্ডবোর্ডের পৃষ্ঠে ভাইরাসটি ২৪ ঘণ্টার বেশি থাকে না।

ভারতের করোনা রোগীদের চিকিৎসায় সর্ববৃহৎ এই স্থাপাটি ২২টি ফুটবল মাঠের সমান। এখানে করোনায় আক্রান্ত মৃদু ও মাঝারি পর্যায়ের রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে। আর এটি পরিচালনার কাজ করবে দেশটির আধা-সামরিক বাহিনী ইন্দো-তিব্বতিয়ান বর্ডার ফোর্স। এই বাহিনী মূলত ভারত-চীন সীমান্ত পাহারা দেওয়ার কাজে নিয়োজিত থাকে।

দিল্লির ছত্তরপুরে অবস্থিত এই হাসপাতালটি আনুষ্ঠানিকভাবে চিকিৎসা সেবা দেওয়া শুরুর আগে এটির উদ্বোধন করেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। উদ্বোধনের পর এক টুইট বার্তায় কেজরিওয়াল একে ‘বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ হাসপাতাল বলে উল্লেখ করেন।’ অমিত শাহ বলেন, ‘দিল্লিবাসীকে এটা কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে।’