দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা শাখার সেকশন কর্মকর্তা বরখাস্ত 

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক :
 দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা শাখার সেকশন কর্মকর্তা রিয়াজুল ইসলামকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
দায়িত্বে অবহেলা, দেরি করে কার্যালয়ে আসা, বোর্ডের চেয়ারম্যান সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করানো, চেয়ারম্যানকে অনৈতিক চাপ দেওয়া, বহিরাগত সন্ত্রাসী নিয়ে সহকর্মীদের মারধর করাসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগে তাকে বরখাস্ত করা হয়।

মঙ্গলবার (৩০ মে) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর কামরুল ইসলাম।

এর আগে রোববার (২৮ মে) দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের সচিব প্রফেসর মো. জহির উদ্দিন স্বাক্ষরিত চিঠি দিয়ে তাকে বরখাস্ত করা হয়।

বহিষ্কারাদেশে বলা হয়, কর্তৃপক্ষের অনুমতির তোয়াক্কা না করেই ১৮/০৯/২০১৩ থেকে ২৪/০৯/২০১৩ পর্যন্ত কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। একই ভাবে ০৩/০৬/২০১৪ থেকে ০৫/০৬/২০১৪ পর্যন্ত এবং ১৭/১২/২০১৭ থেকে ৩০/১২/২০১৭ পর্যন্ত একই ধরনের অপরাধ করেন। কর্মস্থলে প্রায়ই দেরিতে উপস্থিত এবং কর্তৃপক্ষকে না জানিয়েই অফিস চলাকালে অফিস ত্যাগ করেন। ০২/০৬/২০১৪ তারিখে বোর্ডের হিসাবরক্ষক নাসিমুজ্জামানকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। ০৬/১২/২০১৫ তারিখে অনুমতি ছাড়াই চেয়ারম্যানের দপ্তরে প্রবেশ করে অবৈধভাবে পদোন্নতি দিতে চেয়ারম্যানকে অনৈতিক চাপ দেন এবং ব্লাকমেইল করার অপচেষ্টা চালান। ২০২২ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রগুলো প্যাকেট-ট্যাংকজাত করার সময় অতিরিক্ত ১০ দিনের পারিশ্রমিক চেয়ে হুমকি দেন। ২০১৭ সালে বহিরাগত সন্ত্রাসী নিয়ে গিয়ে বোর্ডের নিম্নমান সহকারী মনসুরুল আলম প্রধান, উচ্চমান সহকারী হরুন অর রশিদ, উচ্চমান সহকারী

কামরুজ্জামানসহ অনেককে মারধর করান। প্রচলিত চাকরিবিধির তোয়াক্কা না করেই বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করে অসত্য, বিভ্রান্তিমূলক, অবমাননাকর এবং বিব্রতকর বানোয়াট ও ভিত্তিহীন সংবাদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সরকারি/বেসরকারি দপ্তরে প্রচার/প্রকাশ/প্রেরণ করেন।

আদেশ আরও বলা হয়, গত ০৩/০৫/২০২৩ তারিখে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকায় বোর্ডের চেয়ারম্যানকে জড়িয়ে সম্পূর্ণ অসত্য, বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অবমাননাকর সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে ওই পত্রিকার বার্তা সম্পাদক লিখিতভাবে জবানবন্দি দেন যে এ সংবাদ তার কাছে রিয়াজুল ইসলাম পাঠিয়েছেন। পরে ২১/০৫/২০২৩ তারিখের সংখ্যায় পত্রিকাটিতে ওই সংবাদ প্রকাশের বিষয়ে বার্তা সম্পাদক দুঃখ প্রকাশ করেন। সরকারি কর্মচারী চাকরিবিধি পরিপন্থী সব অপকর্মের পর কর্তৃপক্ষ কারণ দর্শানোর নোটিশ দিলে এমন আর হবে মর্মে অঙ্গীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। কিন্তু এরপরও আচরণ ও কর্মকাণ্ড পরিবর্তনের কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। এ অবস্থায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮-এর ৯ ধারায় বর্ণিত ব্যতিক্রমে যথাযথ কর্তৃপক্ষ এ মর্মে সন্তুষ্ট হয়েছেন যে আপনাকে পুনরায় কারণ দর্শানোর সুযোগ দেওয়া যুক্তিযুক্তভাবে বাস্তবসম্মত নয়। তাই আইন উপদেষ্টার মতামত ও সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এর ধারা ৯ মতে আপনাকে এ মুহূর্ত থেকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হলো।

এ বিষয়ে বরখাস্তকৃত রিয়াজুল ইসলাম জানান, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়েই বরখাস্ত করা হয়েছে। যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, সে বিষয়ে আমার সংশ্লিষ্টতা নেই।

দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর কামরুল ইসলাম বলেন, আইন উপদেষ্টার মতামত ও বিধি মেনেই তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।