দর্শনার্থীদের জন্য উম্মুক্ত হচ্ছে সুন্দরবনের সকল পর্যটন কেন্দ্র

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

 

স্বাস্থ্য বিধি মানার শর্তে রবিবার (১ নভেম্বর) থেকে সুন্দরবনের সকল পর্যটন স্পটগুলো দর্শনার্থীদের জন্য উন্মক্ত করা হচ্ছে। এরই মধ্যে বনঅধিদপ্তর একটি গেজেটও প্রণয়ন করেছেন। গেজেট সম্পন্নের পর গত মঙ্গলবার বনবিভাগের প্রধান কার্যালয় (ঢাকা) থেকে বনের সকল পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেয়ার বার্তা পৌঁছে দেয়া হয়েছে বনবিভাগের খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট ও মোংলাসহ সকল দপ্তরে।

বনবিভাগের প্রধান বন সংরক্ষক মো: আমির হোসাইন চৌধুরী মঙ্গলবার রাতে এ সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, অবশ্যই স্বাস্থ্য বিধি মেনেই পর্যটকদের বনে ভ্রমণ করতে হবে। এজন্য বনবিভাগের বিভিন্ন কার্যালয়ে নিদের্শনা পাঠানো হয়েছে। এছাড়া করোনাকালে এক সাথে বেশি লোকজন নিয়ে ভ্রমণ করা যাবে না। মানতে হবে সামাজিক ও শারিরীক দূরত্বও। সেক্ষেত্রে অবশ্যই পর্যটন ব্যবসায়ীদেরকে সতর্কতাবস্থানে থাকতে হবে।

চলতি বছরের ১৯ মার্চ করোনাভাইরাসের প্রাদুভার্বের কারণে সুন্দরবনে পর্যটকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এরপর থেকে বেকার হয়ে পড়ে এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত পর্যটন ব্যবসায়ী, মালিক ও শ্রমিক-কর্মচারীরা। তারা সুন্দরবন পর্যটনকদের জন্য খুলে দেয়ার দাবীতে মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচীও পালন করে আসছিল।

অবশেষে দীর্ঘ প্রায় ৭ মাসেরও অধিক সময় পর বনবিভাগ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে আগামী ১লা নভেম্বর থেকে সুন্দরবন ভ্রমণের জন্য উম্মুক্ত করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সিদ্ধান্তের সাথে সাথে পর্যটন কেন্দ্রগুলোর বিভিন্ন স্থাপনার উন্নয়ন, সংস্কার ও মেরামতে কাজ শুরুর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কারণ বিগত ঝড়-জলোচ্ছাসে বনের প্রধান আকর্ষণীস্থান করমজলসহ বিভিন্ন কেন্দ্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের খবরের পর প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন ট্যুরিজম ব্যবসায়ীরা। তারা তাদের নৌযানগুলোকে মেরামতসহ নাান কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।

করোনাকালে বেশ ক্ষতি হয়েছে বনবিভাগ ও ট্যুরিজম ব্যবসায়ীদের। বন্ধ থাকায় আর্থিক ক্ষতি হয়েছে সকলেরই। এ বিষয়ে করমজল পর্যটন কেন্দ্র ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ইনচার্জ মো: আজাদ কবির বলেন, বন্ধের ৭ মাসে কম হলেও অন্তত প্রায় ১০ লাখ টাকা রাজস্ব আয় হতো এখান থেকে। ঠিক অন্যান্য কেন্দ্রগুলো থেকেও সম পরিমাণ রাজস্ব আদায় হতো, করোনা দুযোর্গের কারণে সেই ক্ষতিটাতো বনবিভাগের হয়েই গেছে।

ট্যুরিজম ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান মিজান বলেন, আমাদের তো সবই শেষ। নৌযান অলস পড়ে থেকে সেগুলোতে নানা ধরণের ক্রুটি দেখা দিয়েছে। বসিয়ে বসিয়ে বেতন দিতে হয়েছে কর্মচারীদের। ধার দেনা করে পুজি খাটিয়ে যে ব্যবসা শুরু করেছিলাম তা এখন যেন মরার উপর খড়ার ঘায়ে পরিণত হয়েছে। তারপরও যেহেতু অনুমতি দেয়া হচ্ছে আমরা সকল বিধি নিষেধ মেনেই ট্যুরিজম ব্যবসা পরিচালনা করবো।

এদিকে শর্ত সাপেক্ষে সুন্দরবনের পর্যটন কেন্দ্রগুলো দর্শনার্থীদের জন্য উম্মুক্ত করা হলেও তা যথাযথ ভাবে পালন হচ্ছে কিনা তা দেখভালে কঠোর নজরদারি করা হবে বলে জানান প্রধান বন সংরক্ষক মোঃ আমির হোসাইন চৌধুরী।

সূত্র: কালেরকন্ঠ