তুরস্কের পার্লামেন্টে ভাষণ দেওয়ার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার দুদিন পর মারা গেছেন দেশটির বিরোধীদলীয় একজন আইনপ্রণেতা। গত মঙ্গলবার দেশটির পার্লামেন্টে গাজা যুদ্ধ নিয়ে ইসরায়েলি সরকারের নীতির তীব্র সমালোচনা করে বক্তৃতা শেষ করার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার দেশটির একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অব্স্থায় মারা গেছেন তিনি।
দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফাহরেতিন কোকা সাংবাদিকদের বলেছেন, বিরোধী ফেলিসিটি (সাদেত) পার্টির সংসদ সদস্য হাসান বিৎমেজ (৫৪) আঙ্কারা সিটি হাসপাতালে মারা গেছেন। তুরস্কের পার্লামেন্টের ওয়েবসাইটে দেওয়া এই আইনপ্রণেতার জীবনীতে লেখা হয়েছে, মিসরের কায়রোর আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক শেষ করেছিলেন তিনি। পরে দেশের রাজনীতিতে যোগ দেন তিনি। তুরস্কের ইসলামিক ইউনিয়ন রিসার্চ সেন্টারের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছিলেন বিৎমেজ। তার আগে দেশটির একটি ইসলামিক বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন তিনি।
গাজায় যুদ্ধ চলা সত্ত্বেও ইসরায়েলের সাথে তুরস্ক বাণিজ্য অব্যাহত রাখায় প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান নেতৃত্বাধীন দেশটির ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল একে পার্টির (একেপি) তীব্র সমালোচনা করেন হাসান বিৎমেজ।
তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ২০২৪ সালের বাজেটের বিষয়ে পার্লামেন্টের বিতর্কে অংশ নিয়ে হাসান বিৎমেজ বলেন, ‘‘আপনার (এরদোয়ান) হাতে ফিলিস্তিনিদের রক্ত আছে, আপনি ইসরায়েলের সহযোগী। গাজায় ইসরায়েলের প্রত্যেকটি বোমাবর্ষণে আপনার ভূমিকা আছে।’’
বক্তৃতা শেষ করার সঙ্গে সঙ্গে আকস্মিকভাবে মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। এ সময় সংসদ কক্ষে উপস্থিত অন্যান্য এমপিরা তাদের আসন ছেড়ে হাসান বিৎমেজের দিকে ছুটে আসেন।
দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফাহরেতিন কোকা বলেছেন, পরে এনজিওগ্রাফি করে জানা যায় তার হৃদপিণ্ডের দুটি প্রধান শিরা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। ওইদিন কোকা বলেছিলেন, ‘‘পার্লামেন্টে অধিবেশন চলাকালীন হাসান বিৎমেজের হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। পর তাকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করা হয়। এই ঘটনার ২০ মিনিটের মধ্যে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়; যেখানে চিকিৎসকরা তাকে লাইফসাপোর্টে রাখেন।