বুধবার , ২৬ জুন ২০২৪ | ১৪ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

তীব্র খরায় রাজশাহীতে আউশ চাষে ব্যাঘাত, লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে শঙ্কা

Paris
জুন ২৬, ২০২৪ ২:০০ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী এখন ভরা বর্ষাকাল। আষাঢ়ের মাঝামাঝি সময়ে এসেও রাজশাহীতে যেন বৃষ্টির দেখা নাই। ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে একদিন মাঝে মাঝারি বৃষ্টি হলেও এর পর থেকে টানা বৃষ্টিহীন অবস্থায় কাটছে যেন রাজশাহী। দুই-একদিন বৃষ্টি হলেও সেটি ছিল পরিমাণে খুবই কম। এতে করে কৃষি প্রধান রাজশাহী জেলাতে আউশ ধানচাষ নিয়ে কৃষকরা পড়েছেন ব্যাপক ভোগান্তিতে। গত প্রায় দুই মাস ধরে ধানচাষ শুরু হলেও এখন পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী অর্ধেকের কিছু বেশি জমিতে আউশের চারা রোপন করতে পেরেছেন কৃষকরা।

কৃষকরা বলছেন, যারা জমিতে চারা রোপন করেছেন, বৃষ্টির ওভাবে তাদের জমিতে স্যালো মেশিন বা গভীর নলকূপ দিয়ে পানি সেচ দিতে হচ্ছে। এরই মধ্যে কয়দিন পরেই শুরু হবে আমন চাষ। আমন চাষের জন্য বীজতলা প্রস্তুত করতেও হচ্ছে জমিতে পানি সেচ দিয়ে। এতে বাড়তি খরচ যেমন হচ্ছে, তেমনি ধানের চারা ঠিকমতো উৎপাদন হবে কিনা সেটি নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে কৃষকদের মাঝে।

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, এই উপজেলায় ইরি-বোরো, থেকে শুরু করে আউশ-আমন ধান চাষের অন্যতম মাধ্যম হলো সরমংলা খাল। বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের একটি প্রকল্পের আওতায় পদ্মা নদী থেকে পানি সংগ্রহ করে পাইপ লাইনের মাধ্যমে এই খালে ফেলা হয়। সেখান থেকে সোলার বিদ্যুতের মাধ্যমে কৃষকরা জমিতে পানি সেচ দেন। কিন্তু এবার ওই খালেও কোনো পানি নাই। ফলে আশে-পাশের অন্তত ৫ হাজার হেক্টর জমিতে এখনো ধান চাষ শুরু করতে পারেননি কৃষকরা।

স্থানীয় কৃষক আবুল হোসেন বলেন, ‘পানির ওভাবে গত বোরো মৌসুমেও আমার ৭ বিঘা জমিতে ধান চাষ করতে পারিনি। এখন আউশ মৌসুম শেষ হতে চলেছে কিন্তু খালে পানি না থাকায় জমিতে সেচ দিতে পারছি না। ধানের চারাও লাগাতে (রোপন) করতে পারছি না। আমার মতো শত শত কৃষক ধানচাষ করতে পারছে না বর্ষা মৌসুমেও বৃষ্টি না থাকায়। তবে খালে পানি থাকলে সেচ দিয়ে ধান চাষ করা যেত।’

আরেক কৃষক দিলশাদ হোসেন বলেন, ‘মেশিন নষ্ট থাকায় পদ্মা নদী থ্যাকে খালে পানি দিতে প্যারছে না বিএমডিএ। সে জন্য খালে পানি নাই। আবার বৃষ্টিও নাই। আমরা পড়্যাছি চরম বিপদে। ধানচাষ না করলে কি খ্যাইয়ে ব্যাঁচবো।’

পবার দামকুড়া এলাকার কৃষক আক্কাছ আলী বলেন, ‘টানা কয়েক মাস ধরে বড় বৃষ্টি নাই রাজশাহীতে। এমন অবস্থা তো আগে ছিল না। বৃষ্টি না হলে আমরা ধান চাষ করবো কি করবো। বর্ষা মৌসুমেও বৃষ্টিহীন কাটছে। আউশ আমন হলো বৃষ্টি প্রধান ধান। জমিতে সেচ দিতেই হয় না। এখন জমিতে চারা রোপন করতেও সেচ দিতে হচ্ছে। আবার যারা চারা রোপন করেছে, তাদেরকে সেঁচ দিতে হচ্ছে। এতে বাড়তি টাকা খরচ করতে হচ্ছে। অথচ আগে অনেকটা খরচ ছাড়ায় আউশ-আমন চাষ করা গেছে।’

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র মতে, এ বছর জেলায় আউশ ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ হাজার ৭০ হেক্টর জমিতে। সেখানে গত দুই মাসে চাষ হয়েছে মাত্র ৩১ হাজারের কেছি বেশি জমিতে। আগামী এক মাসের মধ্যে শুরু হবে আমন ধান চাষ। কিন্তু এখনো রাজশাহীতে কাঙ্খিত বৃষ্টি না হওয়ায় আমন ধানের বীজতলাও প্রস্তুত করা যাচ্ছে না।’

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক উম্মে সালমা বলেন, ‘এবার বৃষ্টিপাতের পরিমাণ অনেক কম। সে কারণে ধানচাষে ব্যাঘাত হচ্ছে। যেসব জমিতে কৃষকরা আউশের চারা রোপন করেছেন, সেসব জমিতে ধান বাঁচাতে সেচের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বৃষ্টির অভাবে মাঠÑঘাট শুকে চৌচির হয়ে আছে। এই অবস্থায় আউশ চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত নাও হতে পারে।’

সর্বশেষ - কৃষি