তানোরে বিয়ের দাবিতে অনসনরত ইডেন কলেজছাত্রী অসুস্থ

তানোর প্রতিনিধি:

বিয়ের দাবিতে ঢাকা থেকে রাজশাহীর তানোরে গিয়ে অনশন করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ইডেন কলেজের এক ছাত্রী। অনশনের তিন দিনের মাথায় ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে গতকাল শনিবার উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করেছে পুলিশ। ওই ছাত্রী টানা ১৩ দিন না খেয়ে ছিল বলে দাবি করছেন।

ওই ছাত্রী জানান- তিনি ঢাকার ইডেন কলেজ থেকে সদ্যই অনার্স শেষ করেছেন। বর্তমানে আড়ংয়ে কর্মরত। রাজশাহীর তানোর উপজেলার চান্দুড়িয়া গ্রামের রেজাউল ইসলামের ছেলে জুয়েল রানার সাথে ঢাকায় ২০১৮ সালে তার পরিচয় হয়। এরপর তারা একে অপরকে ভালোবাসতে শুরু করেন। গত চার বছর থেকে তাদের দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক। ঢাকার রামপুরায় তারা একই এলাকায় ভাড়া থাকেন। তাদের সাথে গভীর মেলামেশাও রয়েছে।

তিনি জুয়েলের ঢাকার বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত করেন। জুয়েলের ঢাকার রামপুরার বাড়ির দারোয়ান জানেন- এই ছাত্রী তার স্ত্রী। তাই কেউ তাদের মেলামেশা নিয়ে কিছু বলতেন না।

গত ১৫ দিনে আগে জুয়েল তার প্রেমিকাকে না জানিয়ে রাজশাহীর নওদাপাড়া এলাকার এক স্কুল শিক্ষকের মেয়েকে বিয়ে করেছেন।

বন্ধুর মুখে তিনি জুয়েলের বিয়ের খবর জানতে পারেন। এরপর এই কলেজ ছাত্রী তার প্রেমিক জুয়েলের কাছে বিয়ের কথা জানতে চান। কিন্তু জুয়েল বিয়ে করার কথা অস্বীকার করেন।

পরে বাধ্য হয়েই গত রোববার এই ছাত্রী জুয়েলের নিজ বাড়ি রাজশাহীর তানোরে চলে যান। সেখান থেকে আজ ‘৯৯৯’-এ ফোন পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করে। শেষ খবর পাওয়া পযন্ত রাত সাড়ে ৯ টা অবদি ওই ছাত্রী কিছুটা সুস্থ্য বলে জানা গেছে।

ওই ছাত্রী জানিয়েছেন- তার বাড়ি বরিশাল বিভাগের ঝালকাঠিতে। ঢাকা ইডেনে অনার্স শেষ করে আড়ং গুলশান শাখায় কর্মরত। রাজশাহীর তানোরের ছেলে জুয়েল ঢাকায় একটি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করেন। জুয়েল তার খবর না রাখায় তিনি বর্তমানে খুবই অসহায় হয়ে পড়েছেন। জুয়েল তার মনের অবস্থা বোঝার চেষ্টা করছেন না। তাকে সহযোগিতাও করছে না। সবাই তাকে নানা অপবাদ দিচ্ছে। পরিবারও তাকে গ্রহণ করবে না বলে জানিয়েছে। এমন কঠিন পরিস্থিতির তিনি কী করবেন এই মুহূর্তে ভাবতে পারছেন না। জুয়েল তাকে বিয়ে না করলে, স্বীকৃতি না দিলে- তিনি মামলা করবেন বলেও হুমকি দেন। তবে জুয়েল এই ঘটনার পর গা ঢাকা দিয়ে আছেন।

এদিকে, ওই ছাত্রীর ব্যাপারে জানতে চাইলে তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান মিয়া বলেন, ৯৯৯ নম্বরে ফোন পাওয়ার পর স্থানীয় ইউপি সদস্য ও ওই ছেলের পরিবারের মাধ্যমে তাক উদ্ধার করা হয়েছে। ওই ছাত্রী অসুস্থ থাকায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এখন তিনি একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারী। তার বয়স ২৩ বছর। আর ঘটনাটি ঘটেছে রাজধানী ঢাকায়।

এরপরও তিনি তানোরে অনশন করতে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাই আপাতত তাকে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। এখনও তিনি কোনো অভিযোগ দেননি। দিলে সেই অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান- তানোর থানার ওসি।

স/আর